বিজ্ঞাপন

নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করুন: বি. চৌধুরী

May 25, 2018 | 8:30 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সংসদ নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। একইসঙ্গে তিনি নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার আহ্বান জানান।

শুক্রবার (২৫ মে) রাজধানীর আবদুল্লাহপুরে একটি কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর বিকল্পধারা আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বি. চৌধুরী বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সব বাধা দূর করার জন্য প্রথমে প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এই জায়গায় যদি বিভিন্ন ধরনের বাধা থাকে তাহলে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না। প্রথম প্রয়োজন নির্বাচনকালীন সময়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ একটি সরকার এবং প্রমাণিত নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা তাদের পদমর্যাদা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে না পারেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকার নিজেদের গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ়বিশ্বাসী বলে বার বার ঘোষণা করছেন, সেহেতু প্রধান দায়িত্ব বর্তমান সরকারের ওপরই বর্তায়। হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আটক রাখলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কখনো তৈরি হবে না।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য ও উপেক্ষা করে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন অজুহাতে আটক রাখা পাকিস্তানি এবং ব্রিটিশ আমলের ঔপনিবেশিক মানসিকতা। এ ব্যাপারে সরকারকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই হবে, যদি তারা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন এবং সেটাই হবে অভিপ্রেত গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত।

“বিগত কয়েক বছরের শাসনের ফলে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এই দুই দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব ও হিংসার জন্ম নিয়েছে। একদিকে সরকার, রাজনৈতিক কর্মীরা নির্বাচনউত্তর প্রতিহিংসার ভয়ে ভীত, অন্যদিকে সরকারি দল বিজয়ী হলে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বিএনপির কর্মীরা। উপরন্তু সাধারণ ভোটাররা কোনদিকে ভোট দিয়ে নিরাপদ থাকবেন এ ব্যাপারে তারাও শংকিত।”

বিজ্ঞাপন

বি. চৌধুরী বলেন, যদি দেশের মানুষ সত্যিকারের বিপদের আশঙ্কাকে উপলব্ধি করতে পারেন এবং দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে পারেন শুধুমাত্র তাহলেই ভবিষ্যতের চিত্র বদলে যেতে পারে। তিনি বলেন, এই তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি যদি জনগণের সমর্থনে উঠে আসতে পারে, তা হলে তারা বিবাদমান ওই দুইটি রাজনৈতিক দলকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারবে। যার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী ভয়াবহ সহিংসতা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং সামাজিক অত্যাচারের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, আমি বিকল্পধারা, যুক্তফ্রন্ট এবং আমাদের বন্ধু জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের মূল বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলছি, আমরা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করব এবং সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন সুনিশ্চিত করব। দেশের বুদ্ধীজীবীসহ সব মানুষের প্রতি আমাদের আহ্বান তারা যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে কাজ করার কথা ঘোষণা করেছেন, আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব বলেন, আমরা মাদকের বিরোধী, কিন্তু বিনা বিচারে হত্যা সমর্থন করি না। সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুলনার নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। কিন্তু গাজীপুরে এমন কিছু করার চেষ্টা করলে যুদ্ধ বেধে যাবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মাদকের নামে বিনা বিচারে ৫৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যারা হত্যা করেছে তাদেরও বিচার করা হবে। তিনি রোজার পর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপিকে রাজপথে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিকল্পধারার সভাপতি মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এইচএ/এটি

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন