বিজ্ঞাপন

নৌকায় ভোট দিয়ে কেউ কখনও বঞ্চিত হয় না: শেখ হাসিনা

December 12, 2018 | 7:51 pm

।। নৃপেন রায়, সিনিয়র করেনপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

কোটালীপাড়া থেকে: নৌকায় ভোট দিলে কেউ কখনও বঞ্চিত হয় না, সবাই উন্নত জীবন পায়— এ বার্তা দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন, বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়ে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ আজ বাস্তব হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ যেন বন্ধ করতে না পারে, সেই সুযোগ আমি দেশবাসীর কাছে চাই। এখানে আমার মা-বোনরা আছেন, তাদের বলতে চাই— নৌকায় ভোট দিয়ে কেউ কখনও বঞ্চিত হয় না। নৌকায় ভোট দিলে সবাই উন্নত জীবন পায়। আমার এই কথা সবার কাছে পৌঁছে দেবেন। নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি, দেওয়ার কিছু নাই। আছে শুধু ভালোবাসা, দিয়ে গেলাম তাই।

আরও পড়ুন- বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি, তবুও ভয় পাইনি: শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক নির্বাচনি জনসভায় এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এটিই আওয়ামী লীগের প্রথম জনসভা।

এর আগে, বুধবার সকালে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন শেখ হাসিনা। এরপর বিকেলে তিনি কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন।

বিজ্ঞাপন

জনসভা থেকে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এই নির্বাচনি জনসভা থেকে দেশবাসীকে আহ্বান জানাতে চাই, আমি নৌকা মার্কায় ভোট চাই, জনগণের সেবা করতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। সবার সহযোগিতা চাই, নৌকা মার্কায় যাকে যেখানে প্রার্থী করেছি, তাদের ভোট দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সেবা করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ১৯৭৫ সালের পর প্রথম মানুষ বিশ্বাস করতে পেরেছিল যে সরকার জনগণের সেবক, সরকার জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর আমাদের যে সংবিধান দিয়েছিলেন, সেখানে প্রতিটি মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। আমরা পরিকল্পিতভাবে একটা একটা খাত নিয়ে কাজ শুরু করি। গৃহহারা মানুষদের ঘর-বাড়ি করে দিতে, মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে, জীবনকে উন্নত করতে কাজ শুরু করি। মাত্র পাঁচটি বছর সুযোগ পেয়েছিলাম। এর মধ্যে অনেক উন্নয়নও আমরা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, পাঁচ বছর আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি।

আরও পড়ুন- প্রথম নির্বাচনি জনসভায় কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনা

২০০১ সালের নির্বাচনে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। সেই বিচার বন্ধ করে দিয়ে, সব যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে, তাদের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তিনি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজ করে গেছেন। সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করেছেন। আর জাতির পিতার হত্যাকারী, যারা একদিন বলেছিল— ‘আমরা হত্যা করেছি, কে আমাদের বিচার করবে?’, তাদের পুরস্কৃত করেছেন, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতার খুনিদের বিচার করার সুযোগ দেওয়ার জন্য মানুষষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,  আপনজন মারা গেলে সবাই বিচার চায়। আমি ’৮১ সালে এসে যখন মামলা করতে যাই, মামলা করতে দেওয়া হয়নি। তবে আমি বাংলার জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ, কৃতজ্ঞ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে, যারা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল আমাকে। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে দিয়ে সেই খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতে আমরা করেছি। আমরা রায় কার্যকর করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সেটাও আমরা করেছি। এখনও সেই বিচার চলছে এবং রায়ও কার্যকর হয়েছে।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও উদ্যোগ বন্ধ করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তবে ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছেন বলে জানান তিনি। এসময় তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।

টানা দুই মেয়াদের প্রথম মেয়াদ শেষে ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার নামে বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, তারা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। স্কুল পুড়িয়েছে ৫৮২টি, সরকারি অফিস পুড়িয়েছে, ভূমি অফিস পুড়িয়েছে। সিএনজি চালাচ্ছে, বাইরে থেকে তালা দিয়ে ভেতরে পেট্রোল ফেলে ড্রাইভারকে হত্যা করেছে। তারা এসব করেছে সরকার উৎখাতের জন্য। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের কথা শোনেনি। বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের সরকার গঠন করার সুযোগ দিয়েছিল বলেই আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন- জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী জনসংযোগ শুরু প্রধানমন্ত্রীর

দুই মেয়াদে সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল, আমরা সেখানে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। প্রায় ৯৩ ভাগ মানুষ আজ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে। আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি, একটা একটা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, বেকার সমস্যা দূর হচ্ছে। কওমি মাদরাসা অবহেলিত ছিল। তাদের স্বীকৃতি দিয়ে সনদ দিচ্ছি।  তাদেরও আমাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছি, যেন দেশে আর কেউ অবহেলিত না থাকে।

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দলীয় সভাপতি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, এই বাংলাদেশ কারও কাছে ভিক্ষা চেয়ে চলবে না। বাংলাদেশ আর দরিদ্র থাকবে না, কারও কাছে হাত পেতে চলবে না। প্রতিটি এলাকায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি গ্রামে মানুষ শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে। আমার গ্রাম গড়ে উঠবে শহর হিসেবে। জাতির পিতা যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা সেই সোনার বাংলা গড়ে তুলব। সেটাই জাতির পিতার কাছে আমাদের প্রতিজ্ঞা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতা আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার আদর্শ আছে। সেই আদর্শ নিয়েই আমরা রাজনীতি করি। একটি কথা বলতে চাই, আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমার একটাই লক্ষ্য, বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।

গোপালগঞ্জ থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি জাতির পিতার মাজার জিয়ারত করে প্রথম নির্বাচনি সভা কোটালীপাড়ার মাটি থেকে শুরু করেছি। কারণ আপনারাই আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন। অন্য প্রার্থী যারা, তারা তাদের এলাকায় যান, কাজ করেন। আমি সেই সময় দিতে পারি না। কারণ, আমাকে ৩০০টি এলাকা দেখতে হয়। সারাদেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। সেই দায়িত্ব আপনারাই আমাকে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজ পিতা-মাতা-ভাই হারা আমি। প্রতিবার নির্বাচনে আপনারাই ভোট দেন, আপনারাই নির্বাচিত করেন। আপনাদের কাছে নির্বাচিত হয়ে, সরকার গঠন করে দেশের সেবা করার সুযোগ পাই। এখনও আমি আপনাদের কাছে সেই দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি। আপজন বলতে একটা ছোট বোন আছে, আর আছেন আপনারা। আপনারাই আমার আপনজন হয়ে কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়ায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবেন, নৌকা মার্কায় আমি ভোট চাই। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেকটি বার সেবা করার সুযোগ করে দেবেন— এটুকুই চাওয়া আমার।

আরও পড়ুন- বুধবার টুঙ্গিপাড়া থেকে শুরু হচ্ছে আ.লীগের হ্যাটট্রিক মিশন

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশবাসীকে আহ্বান জানাব, আমরা যখন ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব, সেই সময় যেন স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি, রাজাকার এবং আগুন-সন্ত্রাসীরা ক্ষমতায় আসতে না পারে। তাহলে তারা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দেবে। আবার এ দেশের মানুষ ক্ষুধার্ত হবে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে যেন আর তারা ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেই জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান আমি জানাচ্ছি।

এর আগে, টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বুধবার দুপুর সোয়া ২টায় জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া-মোনাজাত করেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা।

গত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে সিলেট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর রেওয়াজ তৈরি হলেও এবার টুঙ্গিপাড়া থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করলেন শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে দুই দিনের সফরে গোপালগঞ্জে রয়েছেন তিনি। আজ রাতে টুঙ্গিপাড়ায় পৈতৃক বাড়িতে অবস্থান করে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার পথে রওনা দেবেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সফর শেষে ফেরার আওয়ামী লীগ সভাপতি কয়েকটি পথসভায় অংশ নেবেন। পথসভার স্থানগুলো হলো— ভাঙ্গার মোড়, ফরিদপুরের মোড়, রাজবাড়ী রাস্তার মোড় (রাজবাড়ী জেলা), পাটুরিয়ার আরোয়া ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা, রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ (ধামরাই) ও সাভারের জালেশ্বর মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ড।

কোটালীপাড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শেখ আয়নাল হোসেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার পক্ষে বক্তৃতা করেন চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস। তারা নৌকার পক্ষে ভোট চান।

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করীম সেলিম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, দলীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. আব্দুল্লাহ, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, কোটালীপাড়া পৌর চেয়ারাম্যান মোহাম্মদ কামাল হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/এটি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন