বিজ্ঞাপন

নয়াপল্টনের ঘটনায় ইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আ’লীগের

November 14, 2018 | 7:48 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নয়াপল্টনের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। বুধবার (১৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিদেশিদের সুযোগ সুবিধা দেখে তারিখ নির্ধারণ ঠিক হবে না। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক আসা নিয়ে তারিখ পেছানোর ঐক্যফ্রন্টের যে দাবি, তা যৌক্তিক নয়।

তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানো যাবে না। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ৩০ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন পিছিয়েছেন- আর নয়। একদিনও নয়, এক ঘণ্টাও নয়। আপনারা কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছেন, নির্বাচন পেছানোর জন্য কয়েকটি মহল বিভিন্ন কথা বলেছে। কিন্তু নির্বাচন পেছালে কী অসুবিধা হবে তা ভেবে দেখছেন না তারা। এর আগেও ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়েছে, সে সময় কিন্তু বড়দিন কিংবা ইংরেজি নতুন বছর কোনো সমস্যা হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হলে কেউ যে আসবেন না তেমন কোনো বিষয় নয়।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি’র দাবি হাস্যকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যারা বিদেশিদের সুযোগ সুবিধার কথা ভেবে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে। আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা আমাদের সুযোগ সুবিধা দেখব। ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হলে পহেলা জানুয়ারিতে কয়েক লাখ নতুন ভোটার বাড়বে। তারা যদি নিবন্ধিত না হন, তাহলে আদালতে রিট করলে নির্বাচন ভণ্ডুল হয়ে যাবে। এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে? এছাড়া বছরের প্রথমে স্কুলে নতুন বই বিতরণ করা হয়। সেখানেও সমস্যা দেখা দেবে।

নয়াপল্টনের ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নির্বাচনি আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা আজকের সন্ত্রাসী ঘটনাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ মনে করি। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে ২০ দলীয় জোট যেভাবে আগুন সন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, এটা তারই আলামত- আমি মনে করছি।

গণভবনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে কোনো নির্বাচনী প্রচারনা চালানো হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন না পেছানোর যুক্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এই রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখানে সরকারের পক্ষ থেকে আসিনি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসেছি। জানুয়ারিতে নতুন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। তখন কয়েক লাখ নতুন ভোটার হবে। কিন্তু সর্বশেষ ভোটার তালিকা অনুযায়ী, তারা ভোট দিতে পারবেন না। আর নতুন ভোটাররা মামলা করে দিলে নির্বাচন ভণ্ডুল হয়ে পারে। এই দায়িত্ব কে নেবে। এরপর নতুন বছরে ছাত্রদের নতুন বই দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। সেটিও বিলম্বিত হতে পারে। এছাড়া জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা রয়েছে। একটি বিশাল আয়োজন। এখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা, থাকার ব্যবস্থা করার বিষয় আছে। এ সময় নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

স্বল্প সময়ে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণায় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসতে অসুবিধা হবে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্য তুলে এইচটি ইমাম বলেন, আমার হাসি পাচ্ছে- কোনো দেশ কি বেদিশিদের জন্য নির্বাচন পেছায়? আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আমাদের নিজেদের। সেখানে কে পর্যবেক্ষণ করতে আসলো আর কে আসলো না তা বিষয় নয়।

ঐক্যফ্রন্টের উদ্দেশে তিনি বলেন, বুধবারও তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু নয়াপল্টনে যা ঘটেছে, তা সবাই দেখেছে। তারা একদিকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশের কথা বলবে, অন্যদিকে আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করবে, সেটা হতে পারে না। তাদের কর্মকাণ্ডে ১৪ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। বেশ ক’টি সরকারি-বেসরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে।

এইচটি ইমাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, ১১, ১৭ ও ১৮ বিধি ভঙ্গ হয়েছে। বিধিমালায় যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ন্যূনতম শাস্তি ৬ মাসের কারাদণ্ড। আমার এই ঘটনাকে নির্বাচনি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিএনপি’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচনের কাছে দাবি জানিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন