September 22, 2018 | 6:39 pm
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন নির্মাতা এস এ হক অলিক। তিনি একাধারে নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। সিনেমা খুব বেশি নির্মাণ করেন নি। যে ক’টি নির্মাণ করেছেন সবগুলো পেয়েছে দর্শকপ্রিয়তা।
ছোটপর্দার নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অলিক। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয়বারের মতো তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন। এবারও জয়ের ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। তিনি মনে করেন দায়িত্ব পালনের দুই বছরে সংগঠনের পক্ষে নির্মাতাদের জন্য উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন।
ডিরেক্টস গিল্ডের দুই বছরের সফলতা, আগামী নির্বাচনে তার এজেন্ডাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সারাবাংলার সঙ্গে।
নির্বাচনের পাশপাশি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমি এখনও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনারকে সহযোগিতা করতে হচ্ছে। এরমধ্যেই সম্মানিত সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। আশাকরি গতবারের মতো এবারও ভালোকিছু হবে।
নিজস্ব এজেন্ডা না। সংগঠনের প্রয়োজনে কিছু কাজ করা দরকার। আমরা নাটকের বাজেট নিয়ে কাজ করতে চাই। খুব সীমিত সংখ্যক নির্মাতা ছাড়া বাকি সবাই কম বাজেট পেয়ে থাকেন। এতে দেখা যায় দিনশেষে নির্মাতার পকেটে টাকা থাকে না। আবারও নির্বাচিত হলে পরবর্তী কার্যপরিষদের সদস্যদের সাথে নিয়ে নির্মাতার নূন্যতম একটি পারিশ্রমিক নির্ধারিত করার চেষ্টা করব। নাটকের যতো টাকাই বাজেট হোক না কেনো পরিচালকের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারিত থাকা দরকার। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করব। সত্যি বলতে অর্থ ছাড়া জীবন চলেনা।
এছাড়া আমাদের দেশে গত কয়েক বছর ধরে হাতে গোনা কয়েকজন অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে নির্মাতাদের কাজ করতে হচ্ছে। এটা আসলে ঠিক না। অনেক মেধাবী শিল্পী রয়েছেন। পরিচালকরা যদি স্বাধীন হওয়ার সুযোগ পান তাহলে অন্য অনেক অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে পারবেন। শিল্পীদের সুষ্ঠু বন্টনের দিকে নজর দেয়া হবে। সংগঠন কিন্তু কাউকে কাজ এনে দিতে পারেনা। কাজের পরিবেশ তৈরী করে দিতে পারে। আর একটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইন কনটেন্টের মেধাস্বত্ত্ব যেন নির্মাতারা পান সেটা নিয়ে কাজ করব।
আমরা চেষ্টা করেছি পুরো কার্যনির্বাহী পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে নতুন কিছু কাজ করার। প্রথমে বসার জায়গা ছিল না। সেটা করেছি। ডিরেক্টরস গিল্ডের নিজস্ব পরিচয় তৈরী হয়েছে। সবাই এখন জানে ডিরেক্টরস গিল্ড নামে একটা সংগঠন আছে। কক্সবাজারে শুটিং করা নিয়ে জটিলতা দূর করেছি। সেখানে শুটিং ফি দশ হাজার টাকা থেকে দুই হাজার টাকায় নামিয়ে এনেছি।
এছাড়া কোনো নির্মাতাকে অসম্মান করা হলে সঙ্গে সঙ্গে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। কারোর কোন জটিলতা তৈরী হলে পাশে থেকে সমাধান করার চেষ্টা করেছি।
ডিরেক্টরস গিল্ডের বয়স ১৭ বছর। এতো বছরে সংগঠনটির বসার জায়গাই ছিল না। সভাপতি গাজী রাকায়েত তার অফিসে আমাদের বসতে দিয়েছেন। সংগঠনের জন্য এমন সেক্রিফাইজ কেউ করে না। তিনি করেছেন। এই দুই বছরে আমরা আস্থার জায়গা তৈরী করেছি। সেই সাথে দুই বছরে সুন্দর করে সবকিছু সাজিয়েছি।
আমাদের প্রয়োজনে তখন সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তখন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যরা যার যার মতো করে ব্যস্ত ছিলেন। সংগঠনটিকে চাঙ্গা করার প্রয়োজন মনে করা হয়নি। তবে এখন দেরিতে হলেও নতুন করে শুরু হয়েছে। এটা ভালো লক্ষন। যারা ডিরেক্টরস গিল্ডের যাত্রা শুরু করেছিলেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাদের কারণেই আজকে ডিরেক্টরস গিল্ডে নির্মাতাদের জন্য কাজ করতে পারছে।
এটি ডিরেক্টরস গিল্ডের একক আন্দোলন নয়। এখানে একাধিক সংগঠন জড়িত ছিল। এক এক সংগঠনের এক এক রকম সিদ্ধান্ত থাকে। তবে আন্দোলন একেবারেই যে সফল হয়নি তা নয়। সব সংগঠন এক ছাতার তলে এসেছে এটা এক ধরনের সফলতা।
তাছাড়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে অবৈধভাবে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রচার হতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রজ্ঞাপন জারি করে সেটি বন্ধ করেছেন। এটা কিন্তু এফটিপিওর সফলতা।
আপাতত সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবছি না। এখন সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা তো দেখতেই পাচ্ছেন। এই অবস্থায় সিনেমা নির্মাণ করা কঠিন। সবথেকে বড় কথা, একটি ভালো সিনেমা নির্মাণের জন্য যে প্রস্তুতির দরকা সেটা নেই।
সারাবাংলা/আরএসও/পিএম