Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র টেকসই কৃষি


১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:২৮

বাড়তে থাকা জনসংখ্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে এখনই খাদ্য সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে। নয়তো এই সঙ্কটের কারণে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তে থাকবে আর মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছাবে চূড়ান্তে। খাদ্য সরবরাহের সামান্য সমস্যা থেকেই অনেক বড় ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়। যে কারণে সামাজিক অস্থিতিশীলতা চরমে পৌছায়।

এর থেকে বাঁচতে পারি যদি আমরা আবার কৃষির দিকে ফিরে যাই। কৃষিতে আত্মনিয়োগ করলে আমরা স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত যে উন্নয়নের দিকে যাবো, তা দিয়ে ঐ সঙ্কট উতরে যাওয়া সম্ভব হবে। সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এরকমই মত দিয়েছেন খাদ্য এবং জমির ব্যবহার বিষয়ক অর্থনীতিবিদ এবং বিজ্ঞানীদের একটি জোট। তারা বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যেন তারা টেকসই কৃষির ব্যাপারে আরও মনোযোগী হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুসন্ধানে দেখা গেছে , প্রতিবছর কৃষকদেরকে দেওয়া ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাত্র ১ ভাগ পরিবেশের উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়। এর বেশীরভাগ ব্যয় হয় গো প্রজনন, বন উজাড়, অতিরিক্ত পরিমাণ সার ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের কাজে। সামান্যসংখ্যক খাদ্যশস্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে বর্ধিত জনগোষ্ঠির খাদ্য সঙ্কট তৈরি হচ্ছে।  জলবায়ু পরিবর্তন এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে।

গম, ধান, ভুট্টা এবং আলু এই চার ধরনের খাদ্যশস্য থেকে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ক্যালোরির প্রায় ৬০ শতাংশ সংগ্রহ করছি। এ কারণে আমাদের গভীর সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে। এই প্রতিবেদনে বিশ্বের মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। আধুনিক খাদ্য শিল্পের যে ক্ষতি, মানুষের স্বাস্থ্য-উন্নয়ন এবং পরিবেশের ভিত্তিতে হিসেব করলে তার পরিমাণ বছরে প্রায় ১২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা চীনের জিডিপির আকারের সমান।

বিজ্ঞাপন

এ সকল গভীর সঙ্কট উতরে যাওয়ার জন্য এই প্রতিবেদনে অনেকগুলো সমাধান প্রস্তাব করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার অন্যতম অস্ত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে, জনগোষ্ঠির খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট খাদ্যশস্যের ওপরে চাপ কমানো এবং বনায়ন সহায়ক টেকসই কৃষি ব্যবস্থার প্রণয়ন এই দুইটি কে।

কোস্টারিকায় যেমনটা করা হয়েছে পশুপালনে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ বাতিল করে বন উজাড় রোধে জমির টেকসই ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কৃষকদের মধ্যে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে । ফলে ১৯৮৩ সালে যে পরিমাণ বনভূমি সেখানে ছিল এখন তা দ্বিগুন হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তাদের বার্ষিক ব্যয় বছরে ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এখান থেকে ব্যবসা বিনিয়োগের প্রায় ১৫ গুন। তার আকার প্রায় সাড়ে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গবেষণা থেকে দেখা যায় এ উদ্যোগ থেকে প্রায়  ১.২ বিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি নতুন করে ফিরে পাওয়া গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্রের ক্ষতি সামলানোর ক্ষেত্রে এটি একটি বড় পাওয়া। যা আকারে অ্যামাজন রেইনফরেস্টের প্রায় দ্বিগুন।

কোস্টারিকার উদাহরণ টেনে তারা বলতে চেয়েছেন যে, এই সংস্কার প্রস্তাব যদি মানা হয় তাহলে সাধ্যের মধ্যে আমরা আমাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারবো।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে অজুহাত উন্নয়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ একসাথে চলতে পারে না। এ বিষয়টিই ভুল। আমরা একই সাথে দুইটি ব্যাপারেই গুরুত্ব দিতে পারি।

উন্নয়ন খাদ্য সঙ্কট জনসংখ্যা বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তন টেকসই কৃষি দাম বৃদ্ধি পরিবেশ সংরক্ষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর