বিজ্ঞাপন

প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ধস, চট্টগ্রামে প্রাণ গেল ৪ জনের

October 14, 2018 | 8:41 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো : রাতভর টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় ধসে ও গাছ উপড়ে পড়ে অন্ততঃ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য।

দিনভর কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, কখনো মাঝারি বৃষ্টিপাতের পর শনিবার সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা টানা বর্ষণে রূপ নেয়।

এর মধ্যে রাত সোয়া ২ টার দিকে নগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি পাহাড়ের বসতির উপর মাটির বড় খণ্ড ধসে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উপ-সহকারি পরিচালক জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, পাহাড় ধসের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়। সকাল ৭ টা পর্যন্ত একটানা কাজ চালিয়ে মাটির নিচে চাপা পাড়া অবস্থা থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এরা হলেন- বিবি জোহরা (৭০), মেয়ে নূরজাহান বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে আড়াই বছর বয়সী ফয়জুন্নেছা আক্তার ওরফে নূর আয়শা।

নূরজাহানের স্বামী নূর মোহাম্মদ সারাবাংলাকে জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে তার শ্বাশুড়ি বিবি জোহরা শুক্রবার তাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। রাতে পাহাড়ের উপর থেকে দুই দফায় মাটির বড় খণ্ড ভেঙ্গে বসতির আশপাশে পড়তে দেখেন। এসময় তিনি আরো চার ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। এসময় বিবি জোহরাসহ তিনজন ঘুমাচ্ছিলেন। চার ছেলেমেয়েকে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে ফেরার পর দেখতে পান, তাদের ঘরের উপর মাটিচাপা পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

নূর মোহাম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার শ্বাশুড়ি, স্ত্রী ও মেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। ভেবেছিলাম তাদেরও নিয়ে যাব। এর মধ্যে ঘরের উপর মাটি এসে পড়বে, বুঝতে পারিনি।’

ঘটনাস্থলে যাওয়া চট্টগ্রামেরর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেলোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ফয়’স লেকের দক্ষিণে রেলওয়ের মালিকানাধীন পাহাড়টি লিজ নিয়েছে কনকর্ড গ্রুপ। সেখানে পাহাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবার আছে। গত ৬ দিন ধরে আমরা এখানে মাইকিং করেছি। উচ্ছেদও করেছি।

‘যে পরিবারটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হয়েছে তাদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি কম দেখে শুক্রবার বিকেলে তারা ফিরে আসে। এর মধ্যে রাতে পাহাড়ধসের ঘটনাটা ঘটল’, জানান দেলোয়ার হোসেন।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যেকের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মর্মান্তিক ঘটনার শিকার পরিবারটির সদস্যরা ভিক্ষাবৃত্তি করতেন বলে জানা গেছে।

এদিকে শনিবার রাত সোয়া ১ টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ এলাকায় পাহাড়ে একটি ঘরের উপর গাছ উপড়ে পড়ে। এতে ঘরের দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ে।

এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় নূর আলম লাল্টু (৩৫) নামে একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন