বিজ্ঞাপন

প্রভাতফেরি, গান-স্লোগানে ‘মাথা নত না করার’ শপথ

February 21, 2019 | 5:01 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাড়ে ছয় দশক আগে মাতৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ দেওয়া বীরদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আপামর মানুষ। নারী-পুরুষ, শিশু, শ্রেণি-পেশা, রাজনীতি নেই কোনো ভেদাভেদ। সবাই সারি বেঁধে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। কারও কণ্ঠে একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’। আবার কারও কণ্ঠে স্লোগান। কারও হাতে ব্যানার, কেউ বা নিয়েছিলেন লাল-সবুজের পতাকা, ভাষার জন্য আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে পতাকা পেয়েছে বাঙালি।

বৃহস্পতিবার ভোর শুরুর আগ থেকেই চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের আনাগোণা শুরু হয়। একপর্যায়ে প্রভাতফেরির দীর্ঘ সারি শহিদ মিনারের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে যায়। ভাষার জন্য জীবনদানের দিনটি পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তাই শুধু বাংলাদেশি নন, চট্টগ্রামে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদেরও দেখা গেছে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জীও গিয়েছিলেন শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে।

এছাড়া আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর এর পাদদেশে দাঁড়িয়ে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগঠনটির শিল্পীরা। প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, বোধন আবৃত্তি পরিষদও শহিদ মিনারে ফুল দিয়েছে। চট্টগ্রামের সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের নেতারা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. অনুপম সেন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপিত শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি, পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দেন।

একুশে ফেব্রুয়ারির সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় চবি জিরো পয়েন্ট থেকে মৌন শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। পরে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে চবি’র কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন। পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন প্রজন্মকে অমর একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। ইতিহাস বলে দিয়েছে মিথ্যা ক্ষণস্থায়ী, মিথ্যার সঙ্গে যুদ্ধকরে সত্যকে প্রভাবিত করতে হবে। যাদের আত্মত্যাগ ৫২ ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। যাগের আত্মত্যাগের ফলে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রথম প্রহরে ক্যাম্পাসে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

এদিকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি কবিতা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনে বন্দরনগরীতে মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন