বিজ্ঞাপন

‘প্রমাণ হয়েছে, ড. কামাল বরাবর পাকিস্তানের পক্ষেই ছিলেন’

October 21, 2018 | 7:37 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সংবিধানের ‍মুখবন্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নেই কেন— সেই প্রশ্ন তুলে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) প্রেসিডেন্ট এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ড. কামাল বরাবরই পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।

রোববার (২১ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের পর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, এসব বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ হাতে নিয়ে কথা বলতে হবে। জাতীয় সংসদেই এসব বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য উল্লেখ করে তা দেশবাসীকে জানাতে হবে। ড. কামাল হোসেনের আসর পরিচয় কী, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার কর্মকাণ্ড কী ছিল— এসব বিষয় নিয়ে চলতি সংসদ অধিবেশনে একদিন অনির্ধারিত আলোচনার দাবি জানান তিনি। ড. কামাল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্তদের সঙ্গে জোট করে অশুভ ঘটনা ঘটাতে চাচ্ছেন, তার অতীত ইতিহাস কী— এসব বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ আমরা ওই আলোচনায় তুলে ধরব।

চলতি দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশন শুরু হয়েছে আজ রোববার বিকেলে। অধিবেশন শুরুর পর বগুড়া-৬ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম ওমর তারকাচিহ্নিত প্রশ্ন সংসদে উত্থাপন করেন। পরে তিনি সম্পূরক প্রশ্ন উত্থাপনের সময় পয়েন্ট অব অর্ডারে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন। কিন্তু সংবিধানের মুখবন্ধে জাতির জনকের নাম কেন নেই? তিনি (ড. কামাল) আবার জিয়াকে (সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান) স্বাধীনতার ঘোষক মনে করেন। তিনি তাহলে বঙ্গবন্ধুর কোন আদর্শের অনুসারী ছিলেন? এতদিন পর এসে প্রমাণিত হয়েছে, ড. কামাল বরাবরই পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

তার এই বক্তব্যের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, আমাদের অনেকেরই বক্তব্য রয়েছে। এই অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে কিছু কথা বলতে চাই। কিছু কথা বলতে হবে, দেশবাসীকে জানাতে হবে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় যারা জড়িত, এই হামলার মামলার রায়ে যাদের যাবজ্জীবন-ফাঁসি হয়েছে, তাদের সঙ্গে ঐক্য গড়া আর সংবিধান প্রণয়ন এক কথা নয়।

এসময়  স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমরা আপনার সঙ্গে পরামর্শ করে পর্যাপ্ত প্রমাণ নিয়ে তথ্য হাজির করব, যা জাতির জানা দরকার।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে, অনেক মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে চার মূলনীতি— গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সংবিধান প্রণয়ন করা হলো। এখানে ড. কামাল হোসেনের নাম এসেছে। তিনি নিজেকে সংবিধান প্রণেতা বলে দাবি করেন। আমরাও গণপরিষদের সদস্য ছিলাম, সেই সংবিধানে আমাদেরও স্বাক্ষর আছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ড. কামাল বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া আসন থেকে দুই বার বিনা ভোটেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আমরা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি হেরে যান। তবে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। হার-জিত সবার জীবনেই আছে। যিনি নিজেকে সংবিধান প্রণেতা দাবি করেন, তিনি কী করে সংবিধান পরিপন্থী কাজে যারা বিশ্বাস করে, যারা জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িত, যারা সাজাপ্রাপ্ত, যেখানে একটা দলের যাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে অভিহিত করা হয়, সেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে; তার সঙ্গে কী করে তারা ঐক্য করে? এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। একটা অশুভ ঘটনা ঘটতে চলেছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জাতির জানা দরকার। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এছাড়া টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কী কী উন্নয়ন করেছেন, কীভাবে উন্নয়ন করেছেন, দেশকে অগ্রগতির সোপানে নিয়ে গেছেন— এটা নিয়েও আমরা সংসদে একদিন আলোচনা করতে চাই।

এর আগে, এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ড. কামাল হোসেন সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। তিনি নিজেকে সংবিধান প্রণেতা দাবি করেন। কিন্তু সংবিধানের মুখবন্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রাখা হয়নি। এত দিনে আমরা বুঝতে পারলাম, কেন সংবিধানের মুখবন্ধে জাতির জনকের নাম রাখা হয়নি। ড. কামাল হোসেন মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন না, তিনি পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। এ কারণেই তিনি সংবিধানের মুখবন্ধে বঙ্গবন্ধুর নাম রাখেননি উদ্দেশ্যেমূলকভাবেই। এটা তার অসততা, অসৎ উদ্দেশ্যে করেছেন। এই অসততার জন্য ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

২৩তম সংসদ অধিবেশন শুরু, চলবে ৫ কার্যদিবস

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এটি/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন