বিজ্ঞাপন

ফসলের চিকিৎসায় ক্লিনিক

August 18, 2018 | 8:16 am

।। আমজাদ হোসেন মিন্টু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

বগুড়া: কৃষক বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন। এসব ফসলেও রোগ-বালাই আক্রমণ করে। যার জন্য ব্যবহার করতে হয় কীটনাশক। তবে কোন রোগে কোন কীটনাশক, কি পরিমাণে ব্যবহার, সে সম্পর্কে কৃষকের ধারণা কম। তাই বগুড়ার ধুনট উপজেলায় কৃষকের সহযোগিতার জন্য যাত্রা শুরু করেছে ‘ফসলের ক্লিনিক’।

ধুনট উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে এ ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। এখানে সরকারি কর্মদিবসে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদরা ফসলের চিকিৎসা দেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুস ছোবহান বলেন, ‘ফসলের রোগ-বালাই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে সময়ের সাথে নতুন নতুন রোগের আক্রমণ কৃষককে বিপাকে ফেলে। যার সমাধান কৃষক খুঁজে পান না। দোকান থেকে কীটনাশক কিনে অজ্ঞতার কারণে কৃষক সঠিক পরিমাপে ব্যবহার করতে পারেন না। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগ-বালাই থেকে ফসলকে মুক্ত করা যায় না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নাগরিক সেবায় ফসলের ক্লিনিকের উদ্ভাবন করেছেন। তার উদ্যোগে ধুনট উপজেলায় এলাকা ভেদে কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ ডিজিটাল ফসলের ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। দিনব্যাপী ক্লিনিকে কৃষকের ক্ষেতে আক্রান্ত ফসলের চিকিৎসা ও চাষাবাদে নানা পরামর্শ প্রদান করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে কৃষকের অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছে স্থায়ীভাবে ফসলের ক্লিনিক প্রয়োজন। এজন্য নিজ উদ্যোগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ডিজিটাল ফসল ক্লিনিক স্থাপন করেছেন। যেখানে প্রতিদিন (সরকারি কর্মদিবস) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিনামূল্যে ফসলের চিকিৎসা দেওয়া হয়, বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

ডিজিটাল ফসলের ক্লিনিক থেকে লিচু গাছের চিকিৎসা নিয়েছেন পারধুনট গ্রামের কৃষক খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘গ্রামে একটি লিচু বাগান রয়েছে। গাছের পাতাগুলোতে এক ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাই। গাছের একটি ডাল নিয়ে এসেছিলাম ফসলের ক্লিনিকে। ক্লিনিক থেকে মাকড়ে আক্রান্ত লিচু গাছের জন্য ঔষধ ব্যবহারের ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

ধুনট পৌর এলাকার চরপাড়া গ্রামের কৃষক আকিমুদ্দিন ২৫ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। শসার পাতা বিচ্ছিন্নভাবে হলুদ রং ধারণ করে, গাছ মারা যায়। সমস্যা নিয়ে প্রথমে তিনি যান কীটনাশক বিক্রেতার দোকানে। সেখান থেকে জানতে পারেন ফসলের ক্লিনিক সম্পর্কে। এরপর তিনি ক্লিনিক থেকে ফসলের চিকিৎসা নিয়েছেন। আকিমুদ্দিন বলেন, ‘ক্লিনিক থেকে জানিয়েছে আমার শসা গাছে মোজাইক ভাইরাস আক্রমণ করেছে। সে হিসেবে ঔষধের নাম এবং ব্যবহার বিধি লিখে দিয়েছেন ওনারা (সহকারী কৃষি কর্মকর্তা)।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ডিজিটাল ফসলের ক্লিনিকে ফসলের নানা রোগ বালাইয়ের চিকিৎসাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া কৃষককে চাষের ধরন ও জমির পরিমান অনুযায়ী সার ব্যবহার এবং ফসল উৎপাদনে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।’

ডিজিটাল ফসল ক্লিনিকের নির্ধারিত মোবাইল নম্বর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আর বলেন, ‘যার মাধ্যমে কৃষক মোবাইল ফোনে ফসলের সমস্যা বলে প্রয়োজনীয় বিষয় জেনে নিতে পারবেন। এছাড়া মাঠে ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেও পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’

সারাবাংলা/এমও

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন