Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শীতাতপ যন্ত্র: প্রাণীর প্রাণ বাঁচায়, হয় প্রাণ সংশয়


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:১১

।। সারাবাংলা ডেস্ক।।

বাংলাদেশে এখন চলছে ভাদ্রমাস। ভাদ্রমাসের গরম নিয়ে বাংলায় তো প্রবাদই আছে, ভাদ্রের ‘তাল পাকা’ গরম। গরমের এই কষ্ট আর গরম থেকে বাঁচার চেষ্টা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না। সারা পৃথিবীতেই মানুষ সমস্যায় আছে গরম নিয়ে। এই গরম থেকে রক্ষা পেতে তৈরি হচ্ছে এয়ার কন্ডিশনার, এয়ার কুলারের মতো নানান শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। কিন্তু এই যন্ত্রগুলোই ভবিষ্যত পৃথিবীর তাপ বৃদ্ধির কারণ হবে বলে বিশ্বাস বিশেষজ্ঞদের।

ব্রিটিশ প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য ইকনোমিস্ট সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে যে শীততাপ ব্যবস্থা এতদিন মানুষের জীবন রক্ষা করেছে তাই হয়ে দাঁড়াবে মানুষের সমস্যার কারণ। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, আগামী দশকের মধ্যে পৃথিবীতে আরও ১ বিলিয়ন নতুন শীতাতপ যন্ত্র যোগ হবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। তাদের দাবী এক বিলিয়ন শীততাপ যন্ত্র অবশ্যই পৃথিবীর মানুষের দরকার। এ বছর জুলাইতে ফ্রান্সের উপর দিয়ে যে তাপদাহ বয়ে গেছে তা সেই দেশের শীতাতপ যন্ত্রের বিক্রি ২০১৭ সালের তুলনায় ১৯২ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে।

২০০৩ সাল থেকেই ফ্রান্সের সকল বৃদ্ধাশ্রমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ তাপদাহে সে বছর ১১ থেকে ১৭ হাজার বেশি মানুষ মরে গিয়েছিল। ২০১৭ সালটা এরকমই গরমের ছিল কিন্তু এ বছর গরমের কারণে মৃত্যুর হার অনেক কম।

এই তো গেল শীতাতপ যন্ত্রের একটি দিক। ওদিকে গরমে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো যে পরিমাণ ফসল হানির স্বীকার হচ্ছে তা তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের ১ শতাংশ। প্রতি বছর যদি তারা ১ শতাংশ করে লোকসান গোনে তাহলে পাঁচ বছরে গিয়ে পরিমাণটা বিশাল হয়ে দাঁড়ায়। পরিবেশবিদরা এর জন্য দায়ী করেন সেই শীতাতপ যন্ত্রকেই।

শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহার করতে বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। যার বেশিরভাগই আসে জীবাশ্ম জ্বালানী। এই জ্বালানী পোড়ানোর ফলে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়। এই কার্বনকেই দায়ী করা হয় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য। এটা কমানোর জন্যই আবার আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করছি। এতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে… এ এক অদ্ভুত
চক্রে আটকে গেছি আমরা যার ফল শুধু একটাই, বৈশ্বিক উষ্ণতা।

সৌদি আরব খুব শিঘ্রিই তাদের দেশে গরম থেকে বাঁচতে আরও শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহার শুরু করবে। এর ফলে সৌদি আরবে জ্বালানীর চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। এত বাড়বে যে সৌদি আরব এখন যত টেল রপ্তানি করে তার চেয়েও বেশি জ্বালানী তখন তাদের প্রয়োজন হবে।

এখানেই বিপর্যয় শেষ নয়। শীতাতপ যন্ত্রে যেসব তরল গ্যাস ব্যবহার করা হয় সেগুলো যখন বাতাসে অবমুক্ত হয় তখন তা কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়েও বেশি তাপ আটকে ফেলে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী উপায়? এটা নিয়ে ভাবছেন প্রযুক্তিবিদরাও। জোর চেষ্টা করা হচ্ছে এই শীতাতপ যন্ত্রগুলোকে জ্বালানী সাশ্রয়ী করতে। মানুষের শীতল প্রশান্তির তো আর পৃথিবীর মূল্যে পাওয়া যায় না তাই না?

সারাবাংলা/এমএ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর