Tuesday 10 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাপানের নারীরা ‘শোষণের শিকার’, সাবেক কাউন্সিলরের অভিযোগ


১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:০৫

নিজ শহরের মেয়রের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার জাপানের এক প্রাক্তন নারী কাউন্সিলর জাপানের নারীরা ‘নিষ্পেষণের শিকার’ বলে অভিযোগ করেছেন। শোকো আরাই নামের ৫১ বছরের ওই নারী কুসাতসু শহরের ১২ সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন। ২০১৯ সালের শেষ দিকে শোকো আরাই নামের ওই কাউন্সিলর এক ই-বুকে মেয়র নবুতাডা কুরোইয়ার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে মেয়রের কার্যালয়ে তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। মেয়র নবুতাডা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এদিকে শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। শোকো বলেন, বৈ প্রকাশের পর মেয়রসহ কুসাতসুর বিশিষ্ট পুরুষরা তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। এরই ফলশ্রুতিতে গত মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে জোরপূর্বক ভোট দিয়ে কাউন্সিলর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ২০১১ সাল থেকে অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

পর্যটনের জন্য বিখ্যাত কুসাতসু শহরের বাসিন্দারা ভোটের মাধ্যমে আরাইকে অ্যাসেম্বলি থেকে বহিষ্কার করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরাই আরও বলেন, ‘মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকেই কাউন্সিলে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় এবং আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে’। মেয়রের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কুরোইয়া তার মতো সংকটে পড়া মানুষকে কাউন্সিলই শুধু নয় এমনকি শহর থেকেই বের করে দিয়ে তার জীবন নষ্ট করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করছেন।

আরাই বলেন, তিনি যে পরিস্থিতির শিকার তাই প্রমাণ করে জাপানের রাজনীতিতে বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে নারী প্রতিনিধিত্বের হার এত কম কেন। এসব কারণ ভেবে দেখা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। ২০১৭ সালের এক সরকারি জরিপ অনুযায়ী, জাপানে মাত্র ৪ শতাংশ নারী প্রকাশ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন।

শোকো আরও অভিযোগ করেন, জাপানে ‘হ্যাশট্যাগ মি টু মুভমেন্ট’ না হওয়ার কারণ সেখানকার পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। এর ফলে সেখানে নারীদের জন্য মুখ খোলা সহজ নয়। প্রকাশ্যে যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে কথা বললে তারা আরও শোষিত হতে পারে। আর সেরকম ঘটনা তার সঙ্গে ঘটেছে।

৭৩ বছর বয়সী মেয়র কুরোইয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বার বার অস্বীকার করে আসছেন। গত সপ্তাহে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের ঘটনা ঘটার মতো কোন পরিবেশই ছিলো না। তাছাড়া আরাই পুলিশে কোন অভিযোগ বা মামলা করেন নি। মামলা করলে বোঝা যেত যে তার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

পুলিশের কাছে অভিযোগ করা বা মামলা না করার বিষয়ে আরাই বলেন, তিনি সেসময় ভয় পেয়েছিলেন। তাছাড়া তার মনে হয়েছিলো তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন না।

এদিকে কুরোইয়া আরাইয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা করেছেন এবং মানহানির ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। তার অভিযোগ, হট স্প্রিংস স্নান বিষয়ক এক নীতিমালার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য তাকে চাপ দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

আরাইয়ের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ অ্যাসেম্বলির পুরুষ সদস্যদের মধ্যে একধরনের ক্ষোভের সৃষ্টি করে। গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে বহিষ্কারের জন্য কাউন্সিলররা ভোট দেন, কিন্তু প্রিফেকচারাল কর্তৃপক্ষের ভোটে এই সিদ্ধান্তটি বাতিল হয়। স্থানীয় রাজনীতিক যারা আরাইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ করে আসছিলেন তারা পুণরায় ভোটগ্রহণের জন্য পর্যাপ্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।  সে অনুযায়ী গত সপ্তাহে কুসাতসু শহরের ২৮৩৫ জন বাসিন্দা ভোট দেন। তাদের মধ্যে ২৫৪২ জন আরাইয়ের বহিষ্কারকে সমর্থন করেন।

কুসাতসু জাপান জাপান নবুতাডা কুরোইয়া শোকো আরাই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর