Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপাত্ত সুরক্ষা আইন: গণমাধ্যমকর্মীরা সময় পাচ্ছেন ১০ দিন

মোহাম্মদ আল কাওসার কনক
১১ আগস্ট ২০২২ ১৭:৫৭

গত ১০ আগস্ট আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল সম্মেলন কক্ষে প্রস্তাবিত ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২২’ এর খসড়া বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের মতামত দিতে আগামী ১০ দিন সময় রাখা হয়েছে।

খসড়া উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২২ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রাথমিকভাবে এখানে প্রস্তাবনায় ১৪টি অধ্যায় এবং ৭২টি ধারা আছে।
প্রথম অধ্যায়ের নাম প্রারম্ভিক। এতে রয়েছে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন, সংজ্ঞা, আইনের প্রাধান্য, প্রয়োগ।

দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে উপাত্ত সুরক্ষার নীতি।

তৃতীয় অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ। এরমধ্যে রয়েছে- উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ, উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের সম্মতি গ্রহণ, উপাত্তধারীর প্রতি নোটিশ জারি, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা, উপাত্তধারীর নিকট হতে উপাত্ত সংগ্রহ পদ্ধতি।

চতুর্থ অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছে সংবেদনশীল উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ। এর মধ্যে রয়েছে সংবেদনশীল উপাত্ত।

পঞ্চম অধ্যায়ের নাম শিশু-সম্পর্কিত উপাত্ত। এখানে রয়েছে- শিশু-সম্পর্কিত উপাত্ত বিষয়গুলো।

ষষ্ঠ অধ্যায়ের নাম উপাত্তধারীর অধিকার। এরমধ্যে রয়েছে উপাত্তে প্রবেশাধিকার, সংশোধনের অধিকার (ইত্যাদি), সম্মতি প্রত্যাহার, উপাত্ত বহনযোগ্যতার অধিকার, বিদেশি উপাত্তধারীর অধিকার, উপাত্ত মুছে ফেলার অধিকার, উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ নিবৃত্ত করার অধিকার এবং অধিকার প্রয়োগের সাধারণ শর্তাদি।

সপ্তম অধ্যায়ে আছে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে-জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, উপাত্ত প্রকাশে সীমাবদ্ধতা, উপাত্তের নিরাপত্তা বিধানের মানদণ্ড, উপাত্ত ধারণের শর্তাদি, উপাত্তের শুদ্ধতা ও উপাত্তে প্রবেশের অধিকার, রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ, উপাত্তের গোপনীয়তা লঙ্ঘন সম্পর্কিত নোটিশ দেওয়া সংক্রান্ত বিধান, উপাত্ত নিরীক্ষ, উপাত্ত লঙ্ঘনে নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব, উপাত্ত সুরক্ষা কর্মকর্তা এবং উপাত্ত সুরক্ষার সামগ্রিক পরিকল্পনা।

অষ্টম অধ্যায় অব্যাহতি সংক্রান্ত বিষয়াদি যুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে-অব্যাহতি এবং অধিকতর অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা।
নবম অধ্যায়ে আছে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সি স্থাপন, গঠন, ইত্যাদি। এর মধ্যে ধারাগুলোর বিষয়ে রয়েছে- এজেন্সি গঠন, কার্যালয় ইত্যাদি। মহাপরিচালক ও পরিচালকগণের নিয়োগ, এজেন্সির জনবল, উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সির ক্ষমতা, উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সির কার্যাবলি, আদর্শ পরিচালন-বিধি প্রণয়ন, মহাপরিচালকের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা, উপাত্ত সরবরাহ এবং অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতা।

দশম অধ্যায়ে আছে উপাত্ত মজুত ও স্থানান্তরের বিষয়টি। সেখানে স্থান পেয়েছে-সংবেদনশীল উপাত্ত, ব্যবহারকারী সৃষ্ট উপাত্ত ও শ্রেণিবদ্ধকৃত উপাত্ত মজুতকরণ এবং উপাত্ত স্থানান্তর সংক্রান্ত বিধান।

একাদশ অধ্যায়ে আছে উপাত্ত সুরক্ষা রেজিস্টার। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে-নিয়ন্ত্রক ও প্রক্রিয়াকারী তালিকাভুক্তকরণ, উপাত্ত সুরক্ষা রেজিস্টার, রেজিস্টারে প্রবেশাধিকার।

দ্বাদশ অধ্যায়ে আছে অভিযোগ দায়ের, প্রশাসনিক জরিমানা। এরমধ্যে যুক্ত করা হয়েছে অভিযোগ দায়ের, অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত, অবৈধভবে উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ, যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতা, নির্দেশ প্রতিপালনে ব্যর্থতা, উপাত্ত স্থানান্তর, বিক্রয়, ইত্যাদি সংক্রান্ত বিধানের লঙ্ঘন, বিধি দ্বারা নির্দেশ, ইত্যাদির লঙ্ঘন নির্ধারণ, ক্ষতিপূরণ আদায়, বিদেশি কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের বিধানের লঙ্ঘন, প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ এবং আপিল।

ত্রয়োদশ অধ্যায়ে আছে কতিপয় অভিযোগ অপরাধ হিসেবে গণ্য ও তৎসম্পর্কিত বিষয়াদি। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে-সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ অভিযোগ ফেরত প্রদানে মহাপরিচালকের ক্ষমতা, দণ্ড আরোপের সীমা, অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা, অপরাধের বিচার ও আপিল, ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ এবং কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন।

সর্বশেষ চতুর্দশ অধ্যায়ে রাখা হয়েছে বিবিধ বিষয়টি। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে- কতিপয় ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা, প্রতিবেদন, ক্ষমতার্পণ এই আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে প্রক্রিয়াকৃত উপাত্ত সম্পর্কে অনুসরণীয় বিধান, অসুবিধা দূরীকরণ, বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা এবং ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ।

আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক তারেক এম বরকতুল্লাহ।

এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের এমডি মোজাম্মেল বাবু, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, এনটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক জহিরুল আলম, টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশের (টিএমজিবি) সভাপতি মো. কাউছার উদ্দিনসহ গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা খসড়া আইনটির বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

দেশের তথ্য উপাত্তের স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই আইন করা হচ্ছে জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য-উপাত্ত অতি মূল্যবান সম্পদ। তেল বা খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ জাতি থেকে যারা এই ডিজিটাল ডেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করতে পারবে তারাই হবে অত্যন্ত সম্পদশালী জাতি।

তিনি বলেন, নাগরিকের তথ্য-উপাত্তের স্বাধীনতা ও সুরক্ষার নিশ্চিত করতেই এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। ডেটা যেন বিদেশি কেউ ব্যবহার করতে না পারে তার যথাযথ সুরক্ষা থাকছে এই আইনে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্মতি ছাড়া তৃতীয় পক্ষের কাছে যেন ডেটা না যায়, সেই সুরক্ষার জন্য এই আইন করার উদ্যোগ নিয়েছি।

খসড়া উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২২ বিষয়ে পরবর্তীতে ডেটা বিজ্ঞানী ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে সভায় জানানো হয়।

সারাবাংলা/এজেডএস

উপাত্ত সুরক্ষা আইন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর