Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জহির রায়হান কি ‘গুম’ হয়েছিলেন?

রা’আদ রহমান
৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৫৫

একটি মিথ্যা বারবার বলতে থাকলে একসময় তা সত্যের মতো শোনায়। মানুষ সেটা বিশ্বাসও করে বসে। হিটলারের প্রোপাগান্ডা মন্ত্রী গোয়েবলস সফলভাবে এটা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছিলেন। সেসব প্রোপাগান্ডার তোড়ে জার্মান নাৎসিদের চালানো হলোকাস্টের পৈশাচিক ভয়াবহতার কিছুই সামনে আসেনি। ঠিক যেভাবে ১৯৭২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৭ বছর আমাদের বিশ্বাস করানো হয়েছিল কিংবদন্তী কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিত্রপরিচালক জহির রায়হানকে ‘গুম’ করে ফেলা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। ‘আসল সত্য’ ধামাচাপা দিতেই সেটা করা হয়েছিল। বারবার নানাভাবে নানা কৌশলে বলে যাওয়া হয়েছে এই থিওরি, মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে ধ্রুব সত্যের মতো।

কিন্তু দ্বিতীয় গোয়েবলসের প্রোপাগান্ডা মেশিনের থিওরি আর সত্য বানানো মিথ্যা যেভাবে চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল হলোকাস্ট টর্চার সেল, গ্যাস চেম্বার, ডকুমেন্টস, অসংখ্য চাক্ষুষ সাক্ষী আর বাস্তব দলিল ও প্রমাণাদির সামনে, ঠিক সেভাবেই ১৯৯৯ সালে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজার এলাকায় নূরী মসজিদের উন্নয়নকাজে খননের সময় বেরিয়ে এসেছিল ইতিহাসের চাপা দিয়ে রাখা অধ্যায়—প্রকাণ্ড এক বধ্যভূমি। চূর্ণ করে দিয়েছিল এতদিনের গড়ে তোলা মিথ্যার সৌধ। সশস্ত্র বিহারী আর সাদা পোশাকে লুকিয়ে থাকা পাকিস্তানিদের অ্যামবুশ থেকে বেঁচে ফেরা বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক আমির হোসেনের সাক্ষ্য ধোঁয়াশা চাদর সরিয়ে সামনে এনেছিল সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস প্রাণ হাতে ছুটে বেড়িয়েছেন রক্তাক্ত বাঙলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। আদিকালের এক ক্যামেরা আর সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি দিয়েই তৈরি করেছেন অবিসংবাদী এক ডকুমেন্টরি ‘স্টপ জেনোসাইড’। তুলে ধরেছিলেন পাকিস্তানিদের বর্বরতা আর নৃশংসতার ইতিবৃত্ত। ‘বার্থ অফ আ নেশন’ ছিল তার সৃষ্টি। বাবুল চৌধুরীর ‘ইনোসেন্ট মিলিয়ন’ আর আলমগীর কবীরের ‘লিবারেশন ফাইটারস’-এর পেছনের কুশীলবও ছিলেন তিনি। বিজয়ের পর ১৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যখন অনেকগুলো নতুন সিনেমা নিয়ে কাজ করার কথা ছিল তার, জানলেন তার আত্মার আত্মীয়, সবচেয়ে প্রিয়জনদের একজন তার দাদা শহীদুল্লাহ কায়সারকে জামাতের জল্লাদবাহিনী আলবদরেরা তুলে নিয়ে গেছে, আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

শুধু তার দাদা নন, বিজয়ের প্রাক্কালে নিখোঁজ হয়েছেন আরও অসংখ্য বুদ্ধিজীবী। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালি জাতির মস্তিষ্ককে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার নীলনকশায় বুদ্ধিজীবীদের শেষ করে দিয়ে গেছে পাকিস্তানি সেনা এবং তাদের এদেশীয় বেইমানের দল। প্রেরণার মূল উৎস দাদাকে হারানোর শোকে পাগলপ্রায় জহির তার কর্তব্য ভুললেন না। বুদ্ধিজীবী হত্যা ও গণহত্যার তথ্য অনুসন্ধান ও ঘাতকদের ধরার জন্যে ‘বুদ্ধিজীবী হত্যা তদন্ত কমিটি’ নামে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। এই কমিটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছিল গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী গণহত্যার নির্দেশদাতা, বাস্তবায়নকারী ও এর সঙ্গে জড়িত এদেশীয় আলবদর ও রাজাকারদের পরিচয়, অসংখ্য গোপন তথ্য ও ডকুমেন্টস। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পেছনে কারা জড়িত ছিলেন এবং হত্যাকারীদের অনেকেরই গোপন আড্ডাখানা সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট তথ্য হাতে পেয়েছিলেন জহির রায়হান, যা দিয়ে এদের প্রত্যেককে যুদ্ধাপরাধ ও জেনোসাইডের দায়ে বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

প্রতিদিন শত শত স্বজনহারা মানুষ আসতেন এই কমিটির অফিসে। এ বি এম খালেক মজুমদার ছিল ৭১-এর কুখ্যাত আল বদর কমান্ডার। জহির রায়হানের বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে চিনে ফেলেছিলেন শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সার। জহিরের এই ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিশন প্রথমেই খালেককে গ্রেফতার করাতে সক্ষম হয়। খালেককে গ্রেফতার করার পর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা সাম্প্রদায়িক মৌলবাদ শক্তির ব্যাপারে প্রায় সব তথ্য তিনি গুছিয়ে এনেছেন। এখন শুধু জাতির সামনে উন্মোচনের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার পালা আর ফুরোয়নি।

হঠাৎ একদিন সকালে এক ফোন পেলেন জহির রায়হান। সেদিন ছিল ৩০ জানুয়ারি। এর কয়েকদিন আগ থেকেই রফিক উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি জহিরকে আশ্বাস দিয়ে আসছিল যে, শহিদুল্লাহ কায়সার বেঁচে আছেন। তাকে জীবিত পাওয়া যাবে। জহিরের চাচাতো ভাই শাহরিয়ার কবির বহুবার এই রফিককে ফ্রড এবং ধাপ্পাবাজ বলে জহিরকে বোঝাতে চাইলেও ভাইয়ের শোকে পাগল প্রায় জহির তাতে কর্ণপাত করেননি। এটাই তার কাল হয়েছিল। ভাইকে শুধু একটিবারের জন্য ফিরে পেতে পৃথিবীর সবকিছু দিতে রাজি ছিলেন জহির। সেই সুযোগটাই নিয়েছিল ঘাতকেরা! রফিককে ৩০ জানুয়ারির পর আর খুঁজেও পাওয়া যায়নি।

বেশ কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, সেদিন সকালে ‘মাস্তানা’ নামে এক বিহারী নৃত্যপরিচালক জহিরকে ফোন দিয়েছিল। জানিয়েছিল তার বড় ভাই শহিদুল্লাহ কায়সারসহ আরও কিছু বুদ্ধিজীবীকে মিরপুরে বিহারীরা আটকে রেখেছে। যদি সেই দিনের মধ্যে তিনি নিজে উপস্থিত না হন, তবে তার ভাইকে আর পাওয়া যাবে না। কিন্তু মিরপুর তো বিহারীদের দখলে। কাকতালীয়ভাবে ঠিক সেইদিনই বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব মইনুল হোসেন চৌধুরী সশরীরে এসে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন—মিরপুরের বিহারীদের কাছে থাকা অস্ত্র উদ্ধার করে মিরপুর স্বাধীন করতে। সে উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্ট অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগ পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনী পুরো মিরপুর ঘিরে রেখেছিল। বেরিয়ে যান জহির, পরনে ছিল ছাই রঙয়ের প্যান্ট আর গাঢ় ঘিয়ে রঙের কার্ডিগান। সাদা রঙের শার্টের সঙ্গে পায়ে ছিল স্যান্ডেল।

মিরপুর বিহারি এবং পাকিস্তানি সেনাদের দখলে থাকায় সেখানে সিভিলিয়ানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। সেনাবাহিনী যাচ্ছিল শত্রু এলাকা রেইডের জন্য, তাই তারা কোনভাবেই সিভিলিয়ান রাখতে চায়নি। তাই চাচাত ভাই শাহরিয়ার কবিরসহ বাকিরা আর জহিরের সঙ্গে মিরপুরে ঢুকতে পারেননি। সেনাদের কন্টিনজেন্টে একমাত্র সিভিলিয়ান ছিলেন জহির।

এ ব্যাপারে শাহরিয়ার কবিরের ভাষ্য ছিল, “সেদিন আমরা যখন টেকনিক্যালের মোড় ঘুরে বাংলা কলেজের কাছে গিয়েছি তখনই উত্তর দিক থেকে আমাদের গাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষিত হয়েছিল। জহির রায়হান প্রচণ্ড বেগে গাড়ি চালিয়ে ছয় নম্বর সেকশনে এসেছিলেন। মিরপুরে তখন কারফিউ। টেকনিক্যালের মোড়ে গাড়ি আটকানো হয়েছিল। গাড়িভর্তি মুক্তিযোদ্ধা দেখেই হোক কিংবা জহির রায়হানের কথা শুনেই হোক—পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকায়নি। আটকেছিলেন ছয় নম্বর সেকশনের পুলিশ ক্যাম্পে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। সেনারা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে পুরো মিরপুর। এর মধ্যে মিরপুর সাড়ে এগারো নম্বর ধরে ১২ নম্বর সেকশনের দিকে যে দলটি গিয়েছিল তাতে ছিলেন জহির। দলটিতে ছিল প্রায় ৪৫-৫০ জন সেনা। গাড়িগুলো মিরপুর সাড়ে এগারো হতে ধীরে ধীরে মিরপুর ১২-এর দিকে অগ্রসর হতে হতে সাদা পানির ট্যাংকটার সামনে এসে থামে। হঠাৎই সকাল এগারোটার দিকে আচমকা পাগলা ঘণ্টি বেজে ওঠে। আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে বিহারি ও লুকিয়ে থাকা সাদা পোশাকে পাকিস্তানি সেনারা আশেপাশের বাড়িঘর থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হ্যান্ড গ্রেনেড নিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এই দলটার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আচমকা হামলার কারণে কেউ প্রতিরোধ করার সুযোগ পায়নি। সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধা নায়েক আমির হোসেন বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বলেন, বেলা এগারোটার দিকে তিনি ঢং ঢং পাগলা ঘণ্টির শব্দ শুনতে পান। আচমকা গুলি ছুটে আসতে থাকে চারপাশ থেকে। বাম দিকে তাকিয়ে দেখেন পুলিশ সদস্য এবং সেনা সদস্যরা লুটিয়ে পড়েছে। দ্রুত কাভার নেওয়ার জন্য আমির একটি ইটের স্তূপের পেছনে গাছের আড়ালে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তিনি দেখেন কিছুক্ষণ আগে পুলিশের পাশাপাশি যে সাংবাদিক সাহেব দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন, তিনি বুকে হাত চেপে ধরে পাশে একটি দেওয়ালের গায়ে পড়ে গেলেন। তার কাপড় রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই দক্ষিণ দিক দিয়ে গুলিবর্ষণ বন্ধ হয়ে গেল, কিন্তু সিভিল পোশাকে শতাধিক বিহারি ও সাদা পোশাকের পাকিস্তানি সেনারা দক্ষিণ দিক থেকে ড্যাগার, কিরিচ নিয়ে আল্লাহু আকবর স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে আসলো এবং পড়ে থাকা শত নিহতদের কোপাতে শুরু করল। উর্দুতে তারা চিৎকার করে বলছিল, ‘কাউকেই ছাড়া হবে না’। তারপর তারা টেনেহিঁচড়ে পানির ট্যাংকের পশ্চিম দিকে নিয়ে যেতে থাকে আহত নিহতদের দেহগুলো। এ সময় পড়ে থাকা সাংবাদিককেও (জহির রায়হান) ৬-৭ জন বিহারী হাত-ঘাড়-কোমর ধরে টেনে নিয়ে যায় পানির ট্যাংকের পশ্চিম দিকে”।

সাদা পানির ট্যাংকের পশ্চিম দিকে ছিল মুসলিম বাজার। বাজার লাগোয়া নূরী মসজিদের পেছনের বিশাল বধ্যভূমিটা ছিল ঘটনাস্থল থেকে সবচেয়ে কাছের বধ্যভূমি। ফলে সৈনিক আমির হোসেনের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্যের পর এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে সেদিন বিহারিরা ৪২ জন সেনা ও পুলিশ সদস্যের লাশের সঙ্গে জহির রায়হানের লাশটাও টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল মুসলিম বাজার বধ্যভূমিতে। স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তীর খণ্ডবিখণ্ড দেহ পড়ে ছিল অসংখ্য লাশের ভেতর, কচুরিপানা ভরা এক ডোবায়।

এই প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দী এবং মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজার বধ্যভূমি আবিষ্কারের পুরো ঘটনা নিয়ে ১৯৯৯ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর দৈনিক ভোরের কাগজে অসাধারণ এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক। তার এবং জহির রায়হানের সন্তান অনল রায়হানের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা এই নির্মমতম সত্য পাকিস্তানপন্থী পরাজিত শকুনদের এতদিনের গড়ে তোলা সুনিপুণ মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডার ধোঁয়াশা চাদর সরিয়ে বের করে আনে আসল ঘটনা। আর এতে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন মুক্তিযোদ্ধা নায়েক আমির হোসেন। যুদ্ধের ২৮ বছর পর সেদিনের আহত নায়েক আমির হোসেনের সন্ধান পাওয়া যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, যিনি বেঁচে এসেছিলেন বিহারি-পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের হাত থেকে। আমির জহির রায়হানকে চিনতেন না, কিন্তু সেদিন আর্মি ও পুলিশের থাকা একমাত্র সিভিলিয়ান সাংবাদিক ভদ্রলোককে তিনি নিজের চোখে গুলি খেয়ে পড়ে যেতে দেখেছিলেন, তাকে টেনে হিঁচড়ে বধ্যভূমিতে নিয়ে যেতেও দেখেছিলেন। ঊর্ধ্বতন এক সেনা কর্মকর্তা তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ‘সাংবাদিক’ হিসেবে। আমিরের প্রতি নির্দেশ ছিল ওই সাংবাদিকসহ অন্যদের পাহারায় থাকা।

দীর্ঘ ২৭ বছর পর আমরা জানতে পারি, “জহির রায়হানকে তৎকালীন সরকার গুম করে ফেলেছে” এই নোংরা মিথ্যাচার চালিয়ে আসা পাকিস্তানপন্থী পরাজিত শক্তি এবং ঘাতকের দলই জহির রায়হানের হত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড বিজয়ের প্রাক্কালেই শেষ হয়ে যায়নি, চলেছিল ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারিতেও। এবং হত্যাকাণ্ডের ক’দিন আগে জহির রায়হান প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে যাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, তারা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার এবং জল্লাদের দল, গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ও এক্সিকিউশনার আলবদরেরা।

জহিরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আর ডকুমেন্টের উপর ভিত্তি করে যেন তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে না হয়, সেজন্যই সুকৌশলে সেদিন জহির রায়হানকে মিরপুরে পাঠানো হয়েছিল তার দাদা শহীদুল্লাহ কায়সারের খোঁজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে।

এমনই দুর্ভাগা আমরা, আমাদের সবচেয়ে দামী রত্নগুলোর একজনকে হারিয়ে ফেলার শোকটাও আমরা করার সুযোগ পাইনি পরাজিত শকুনদের নোংরা মিথ্যাচারে। জহির রায়হান জেনে গেলেন না আমাদের যুদ্ধটা এখনো শেষ হয়নি।

তথ্য কৃতজ্ঞতা

১। ‘ডেথ অফ আ জিনিয়াস’/অমি রহমান পিয়াল
(https://www.somewhereinblog.net/blog/omipialblog/28734096 )
২। ‘পিতার অস্থির সন্ধানে’/অনল রায়হান
৩। ‘নিখোঁজ নন, গুলিতে নিহত হয়েছিলেন জহির রায়হান’
দৈনিক ভোরের কাগজ, ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন: সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক।

সারাবাংলা/এসবিডিই

জহির রায়হান কি ‘গুম’ হয়েছিলেন? ফিচার মুক্তিযুদ্ধ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর