ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারকারীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল কমাতে জনগণকে সচেতন করা ও নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন মানতে উদ্বুদ্ধ করতে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারকারীদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা।

শনিবার (১৪ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর প্রেস ক্লাব, পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারকারীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

কর্মসূচিতে সংগঠনটির কর্মীরা যাত্রী, পথচারী ও চালকদের সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তারা রাস্তা পারাপারে ফুটওভারব্রিজ ও জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করতে, পরিবহনে যাতায়াতের সময় যাত্রীদের হাত-মাথা বাইরে না রাখতে এবং ঝুঁকি নিয়ে ও অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে পরিবহনে না উঠতে সতর্ক করেন। ট্রাফিক আইন মানা ও পরিবহনে হয়রানিতে জাতীয় হেল্প নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশের সহায়তা নিতেও উদ্বুদ্ধ করেন তারা।

কর্মসূচির উদ্বোধন করে যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল বলেন, আমাদের দেশে সড়কে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ট্রাফিক আইন না মানা। আমরা মনে করি যাত্রীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হলে দুর্ঘটনার হার কিছুটা হলেও কমে আসবে। তাই যাত্রী, চালক ও পথচারীদের ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, অধিকাংশ পথচারী অলসতা ও অসাবধানতার কারণে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করেন না। এছাড়া, ওভারব্রিজগুলো অবৈধ দখলে থাকা, ছিনতাইকারী ও হিজড়াদের দৌরাত্ম্য এবং যথাযথ পরিবেশ না থাকায় ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেকে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি ওভারব্রিজ ব্যবহার না করার জন্য ট্রাফিক আইন না জানা এবং সচেতনতার অভাবও বড় কারণ। তাই জনগণকে সচেতন করা ও ওভারব্রিজগুলোকে চলাচলের উপযুক্ত করতে সরকারকে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক আরও বলেন, রাজধানীতে গণপরিবহন এখন আর জনগণের পরিবহন নেই। লাগাম ছাড়া এসব পরিবহন জনগণের স্বার্থ বিবেচনার চেয়ে নিজেদের ব্যবসাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। ফলে বেপরোয়া গাড়ি চালাতে, যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে তারা দ্বিধা করছে না। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এ অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবাই মিলে এই শহরে আধুনিক ও সুশৃঙ্খল পরিবহনের প্রয়োজনীয়তা সরকারকে বোঝাতে হবে।

তিনি বলেন, রাজধানীতে গণপরিবহনে যে নৈরাজ্য চলছে তা একে-অন্যকে দোষারোপের মাধ্যমে কখনই সমাধান হবে না। এ সমস্যা সমাধানে যাত্রী ও চালকদের সচেতনতা এবং জনসাধারণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে স্মরণ করে কেফায়েত শাকিল বলেন, রাজধানীবাসীকে একটি সুশৃঙ্খল ও আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মেয়র আনিসুল হক। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সেই প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখেনি। আমরা আশা করব, রাজধানীর পরিবহনব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করে সরকার মেয়র আনিসুল হকের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে।

একইসাথে তিনি আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় তিন সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতেহারে আধুনিক নগর পরিবহনব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

কর্মসূচিতে অন্যান্যের মাঝে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক অন্তু মুজাহিদ, মুখপাত্র মাহমুদুল হাসান শাকুরী, নাজমুস সাকিব, জিহাদ আরিফ, শাফি হাসান, বিল্লাল হোসাইন সাগর, এসএম সজিব, হুমায়ুন তামিম, সোহেল তাজ, মো. মোস্তাকিম, সাব্বির অর্নব, রাকিব হাওলাদার, মুঈনুদ্দিন আরিফ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর