বিজ্ঞাপন

‘বাংলাদেশ ভবনের’ দায়িত্ব এখন থেকে বিশ্বভারতীর

September 22, 2018 | 8:23 pm

।। শুভজিত পুততুন্ড, কলকাতা থেকে ।।

বিজ্ঞাপন

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার শান্তিনিকতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবনের’ দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ভবনের নির্মাণকারী সংস্থা ভারত সরকারের ‘ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (এনবিসিসি) এই ভবনের দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেন, বাংলাদেশ ভবনের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, এনবিসিসির প্রকৌশলী চন্দন সেনসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের লক্ষ্য হিসেবে শান্তিনিকতনে বাংলাদেশ ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের মার্চে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যাডিং (মউ) চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। পরে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া জমি ও বাংলাদেশ সরকারের ২৫ কোটি টাকা অর্থায়নে নির্মিত হয় ভবনটি। ভবনটি তৈরি করে এনবিসিসি।

এরপর গত ২৫মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ভবনটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ভবনের গ্রন্থাগার সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু নিরাপত্তাসহ অন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় সকলের জন্য খুলে দেওয়া যাচ্ছিল না শান্তিনিকেতনের আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ভবনের সংগ্রহশালা বা জাদুঘরটি। অবশেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সর্বসাধারণের জন্য জাদুঘরের দরজাও সকলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ভবনের কোঅর্ডিনেটর অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ‘বুধ ও বৃহস্পতিবার এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্য দিনগুলিতে এই জাদুঘর খোলা থাকবে। জাদুঘরের জন্য আপাতত কোনো প্রবেশমূল্য লাগছে না, তবে নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রবেশের সময় ব্যক্তির সচিত্র পরিচয়পত্র লাগবে। ভবনের মধ্যে সংগ্রহশালাটি খোলা থাকবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এবং গ্রন্থাগার খোলা থাকবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত।’

শান্তিনিকতনে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ভবনটিতে বাংলাদেশের শিলাইদহে থাকাকালীন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত কবিতা, গান ও বিভিন্ন মুহূর্তের ছবিসহ বাংলাদেশের ইতিহাস রাখা হয়েছে। ঠাঁই পেয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ডাক টিকিট, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকারের একাধিক নিদর্শন রয়েছে এখানে।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়াও সুলতান যুগের বিভিন্ন মুদ্রা, ব্রিটিশ আমলের মুদ্রা, পনেরো-ষোল শতকের মাটি খনন করে প্রাপ্ত টেরাকোটার মূর্তিসহ একাধিক মূল্যবান প্রত্মতাত্মিক নির্দশন রয়েছে এখানে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ভবনকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যে কৌতুহলেরও শেষ নেই।

এ ব্যাপারে উপাচার্য সবুজকলি সেন জানান ‘বাংলাদেশকে জানতে হলে বা গবেষণা করতে হলে শান্তিনিকতনের বাংলাদেশ ভবনে আসতেই হবে। তার অভিমত বাংলাদেশ সম্পর্কিত এরকম গ্রন্থাগার আর কোথাও নেই। সংগ্রহশালাটিতেও অবিভক্ত বাংলার দুই থেকে তিন হাজার বছরের পুরানো ইতিহাস ধরা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস সর্বপরি রবীন্দ্রনাথ ও শিলাইদহের ইতিহাস সম্বলিত এই সংগ্রহশালাটি দর্শকদের মন কেড়েছে। তার আশা গবেষণার ক্ষেত্রে এই ভবনটি যথেষ্ট সহায়ক হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ ভবনের বাইরে দুই প্রান্তে দুইটি মুর‌্যাল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর একটি করবেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিল্পী যোগেন চৌধুরী। অন্যটি করবেন বাংলাদেশেরই একজন বিশিষ্ট শিল্পী।

সারাবাংলা/এমআই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন