March 16, 2018 | 6:34 pm
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া ৯০ শতাংশেরও বেশি পানির বোতলের মধ্যে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদান পেয়েছেন নিউইয়র্কের স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। এ সব উপাদান ক্যান্সারের মতো মরণঘাতি রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী।
শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়া গবেষক দলের ওই প্রতিবেদন নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।
স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক দল বাজারে বিক্রি হয় এমন ১১টি ব্র্যান্ডের ২৫৯টি বোতল নমুনা হিসেবে নেন। বোতলগুলো ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়াসহ ৯টি দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, এসব বোতলের পানিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে পলিমারিক উপাদান, যার পরিমাণ ৫৪ শতাংশ। এরপরই রয়েছে নাইলন যার পরিমাণ ১৬ শতাংশ।
গবেষকরা স্পেকট্রোসকোপিক বিশ্লেষণে দেখেন, ৯৩ শতাংশ বোতলের পানিতে ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে। প্রতি লিটার পানিতে যার গড় পরিমাণ ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে বোতলভেদে শূন্য থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ক্ষুদ্র কণা লক্ষ্য করা গেছে। ভারতের চেন্নাইয়ে বিসলেরি ব্র্যান্ডের বোতলের প্রতি লিটার পানিতে ৫ হাজার প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা পাওয়া গেছে।
তবে ১১টি ব্র্যান্ডের ২৫৯টি বোতলের মধ্যে মাত্র ২৭টি বোতলের মধ্যে প্লাস্টিকের উপাদান পাওয়া যায়নি।
গবেষকরা বলছেন, বোতলের মধ্যে যেসব উপাদানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। কেউ যদি দীর্ঘদিন ধরে এসব বোতলের পানি পান করতে থাকেন, তবে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাবে।
একই গবেষক দল এর আগেও বোতলের পানিতে প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তবে এবারের গবেষণায় আগের তুলনায় দ্বিগুণ প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি পেয়েছেন। মূলত বোতল তৈরির ও প্যাকেজিংয়ের সময় এসব প্লাস্টিক কণা বোতলের মধ্যে প্রবেশ করে বলে মনে করেন গবেষকদল।
২০১৫ সালে ১০ জানুয়ারি বোতলের পানিতে জীবাণু আছে কি-না সে বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্র্যাক। ভারতের মুম্বাইয়ের বাজার থেকে ৯০টি বোতলকে নমুনা হিসেবে নেয় সংস্থাটি। গবেষণায় দেখা যায়, ২৭ শতাংশ বোতলে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লুএইচও) অনুমোদিত উপাদানের চেয়ে বেশি।
তবে ভারতের বোতল প্যাকেজিং কোম্পানিগুলো গবেষণার এই ফলাফলের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। তারা বলছে, তাদের প্যাকেজিং করা বোতলের পানিতে প্লাস্টিকের কণা পাওয়ার ঘটনা বিরল। পেপসিকো ইন্ডিয়া গবেষণা প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছে, অ্যাকুয়াফিনা পানি বোতলজাতকরণের সময় গুণগত মান বজায় রাখে। তাদের কোম্পানি পানি জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য যতো ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন তা করেই বাজারে ছাড়ে।
ভারতে পানির বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়টি দেখেন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিসট্রেশন (এফডিএ)। কিন্তু বোতলের পানিতে এভাবে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়ার পরও এফডিএর পক্ষ থেকে কোনো ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি এখনো কোনো মন্তব্যও করেনি এফডিএ।
সারাবাংলা/আইএ/এমআই