বিজ্ঞাপন

বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিচ্ছন্ন ফার্নেস তেল আমদানির নির্দেশ

June 23, 2018 | 10:31 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: পরিবেশ দূষণ কমাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে পরিচ্ছন্ন ফার্নেস তেল ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জ্বালানি তেল নির্ভর বেসরকারি কেন্দ্রগুলোকে পরিচ্ছন্ন ফার্নেস তেল আমদানির নির্দেশ দিয়েছে সরকার। জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গত ৩১ মে ফার্নেস তেল আমদানি ও ব্যবহার সংক্রান্ত এই নির্দেশনা জারি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনকে (বিএসটিআই)।

বিপিসি’র চেয়ারম্যান আকরাম আল হোসাইন বলেন, ‘ফার্নেস তেলে ক্ষতিকর সালফার থাকে। সরকারি পর্যায়ে আমরা কম সালফার যুক্ত জ্বালানি তেল আমদানি করছি। বেসরকারি পর্যায়ে যারা সরাসরি ফার্নেস তেল আমদানি করে তাদের জন্য এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ফার্নেস তেল বলতে এতে সালফারের মাত্রা দুই শতাংশের কম থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য ২ শতাংশ সালফার থাকা ফার্নেস তেল আমদানির নির্দেশনা দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর আগে সাড়ে ৩ শতাংশ সালফারবিশিষ্ট তেল আমদানি করতে পারত বেসরকারি কেন্দ্রগুলো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি তেলে সালফার যত কম থাকে তেল পোড়ানোর প্রক্রিয়ায় পরিবেশ দূষণ তত কম হয়। এছাড়া তেল যত বেশি পরিচ্ছন্ন হয়, যন্ত্রপাতির ব্যবহারজনিত ক্ষতি তত কম হয়। দেশে তেল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। জ্বালানির এই দুই উৎস পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই যতটা সম্ভব পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর উপায়ে এগুলো ব্যবহার করতে চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন গ্রেডের ফার্নেস তেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে গাড়ির জ্বালানি থেকে দূষণ কমাতে তাতে বায়ো ইথানল মিশিয়ে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদক-মালিকরা ফার্নেস তেলের স্পেসিফিকেশন পরিবর্তন করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কম সালফারবিশিষ্ট তেলের চেয়ে বেশি সালফারবিশিষ্ট ফার্নেস তেলের প্রাপ্যতা বেশি ছিল। কিন্তু এখন কম সালফারবিশিষ্ট তেলের প্রাপ্যতা বেশি। এছাড়া পরিচ্ছন্ন তেল পরিবেশ ও যন্ত্রপাতির জন্য বেশি উপকারী। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রচারণা ও সচেতনতাও বেড়েছে। তাই সরকার নতুন নির্দেশনা দিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘নতুন গ্রেডের ফার্নেস তেলের দাম কিছুটা বেশি। টন প্রতি ৫ মার্কিন ডলার খরচ বাড়বে এতে।’

একটি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক বলেন, ‘ভালো গ্রেডের ফার্নেস তেল ব্যবহারে খরচ কিছুটা বাড়লেও তাতে ক্ষতি নেই। কেননা এ ধরনের জ্বালানিতে কেন্দ্রের যন্ত্রপাতির ক্ষতি কমে। অর্থাৎ কেন্দ্রের জীবনসীমা বেড়ে যায়।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ৫২টি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি ফার্নেসে এবং ১৩টি ডিজেলে চলে। সরকারি ও বেসরকারি মিলে ফার্নেসচালিত কেন্দ্রগুলোতে বার্ষিক অন্তত ২৫ লাখ টন ফার্নেস দরকার হয়।

এর আগে ২০১৭ সালের শুরু হতে বাংলাদেশ পরিচ্ছন্ন গ্রেডের অর্থাৎ ০.০৫ শতাংশ সালফারবিশিষ্ট ডিজেল তেল আমদানি করছে। এর আগে .৫০ শতাংশ সালফারবিশিষ্ট ডিজেল আমদানি করা হত। দেশে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টন ডিজেল আমদানি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন