বিজ্ঞাপন

ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতির প্রত্যাশা শেখ হাসিনার

December 12, 2018 | 11:29 pm

।। নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ সংসদীয় আসন গোপালগঞ্জ-৩-এ ভোটের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উৎসবমুখর ও সরব উপস্থিতি থাকবে— এমনটিই প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভোটের দিন ভোটারদের এমন উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগকে।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবন কমপ্লেক্সে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই নির্দেশনা দেন। সভায় উপস্থিত সূত্র সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন- নৌকায় ভোট দিয়ে কেউ কখনও বঞ্চিত হয় না: শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সকালে সড়ক পথে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন। পরে নিজ নির্বাচনি এলাকা কোটালিপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দেন।

পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বিজ্ঞাপন

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, এই সভার মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর দলীয় সভাপতির সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সে কারণেই অনেককেই কথা বলার সুযোগ করে দেন শেখ হাসিনা। সেই সুযোগ নিয়ে স্থানীয় নেতারাও মন খুলে কথা বলেছেন দলীয় প্রধানের সঙ্গে।

আরও পড়ুন- বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি, তবুও ভয় পাইনি: শেখ হাসিনা

সভায় উপস্থিত স্থানীয় এক নেতা জানান, টুঙ্গিপাড়ায় যতগুলো ইউনিয়ন রয়েছে, সব ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন নেত্রী (শেখ হাসিনা)। নির্বাচন উপলক্ষে কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন।

স্থানীয় ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, নেত্রী প্রথমে সবার কথা শুনেছেন। তারপর বলেছেন, নির্বাচন এসে গেছে। তোমরা সবাই কাজকর্ম করো। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে যেন ভোটাররা বেশি করে করে হাজির হয়, এ বিষয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। আমি আর আসতে পারব না। তোমাদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে গেলাম, তোমরাই নির্বাচন পরিচালনা  করো, তোমরাই আমার নির্বাচন দেখবা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার সকালে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গেও শেখ হাসিনা মতবিনিময় করবেন বলে জানান ওই নেতা।

জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম বদরুল আলম বদর সারাবাংলাকে বলেন, আজ (বুধবার) সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে নেত্রী (শেখ হাসিনা) মতবিনিময় করেছেন। কাল (বৃহস্পতিবার) সকালে কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বসবেন তিনি।

আরও পড়ুন- প্রথম নির্বাচনি জনসভায় কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনা

মতবিনিময় সভায় শেখ হাসিনা কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না— জানতে চাইলে তিনি বদরুল আলম বলেন, নেত্রী নির্বাচন উপলক্ষে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি প্রথমে সবার কথা শুনেছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা সবাই কাজকর্ম করো। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে যেন ভোটাররা বেশি করে করে হাজির হয়, এ বিষয়টিতেই গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। একটি উৎসবমুখর পরিবেশে যেন সবাই ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে, সেটা নিশ্চিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে নির্দেশ দেন।

শেখ হাসিনার সফরসূচি অনুযায়ী, বুধবার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় পৈতৃক বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে কোটালীপাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে রওনা দেবেন ঢাকার পথে। যাত্রাপথে কয়েকটি পথসভায় অংশ নেবেন তিনি।

আরও পড়ুন- বুধবার টুঙ্গিপাড়া থেকে শুরু হচ্ছে আ.লীগের হ্যাটট্রিক মিশন

পথসভার স্থানগুলো হলো— ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গার মোড় ও ফরিদপুরের মোড়; রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী রাস্তার মোড়; মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার আরোয়া ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা ও ধামরাইয়ের রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ এবং সাভারের জালেশ্বর মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ড।

উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসন থেকে ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারও তিনি এই আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে ধানের শীষের প্রার্থীসহ আরও চার জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। তারা হলেন— বিএনপির এস এম আফজাল হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের মো. মারুফ শেখ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. উজির ফকির ও মো. এনামুল হক।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ আসন ছাড়াও রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল শেখ হাসিনার। তার পক্ষে মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছিলেন দলের নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসনটি তিনি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ছেড়ে দেন।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন