বিজ্ঞাপন

ভোটে থাকবে ধানের শীষ— শরিকদের জানাল বিএনপি

December 26, 2018 | 9:46 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঘটনা যাই ঘটুক, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবে বিএনপি। কোনো পরিস্থিতিতেই ভোট বর্জন করবে না তারা— এই বার্তাই দেওয়া হলো বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকদের। ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া জোট প্রার্থীদের ‘মাটি কামড়ে’ মাঠে থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো জোটের নেতৃত্ব দেওয়া দলটির পক্ষ থেকে।

গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিপক্ষের হামলায় ধানের শীষের বেশ কয়েকজন প্রার্থী আহত হয়েছেন। চলমান পরিস্থিতিতে বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোট শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ওই বৈঠক থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জোটের অন্যতম শরিক খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মাওলানা মোহম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর-২ আসনে ২০ দল মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থী বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যার অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, পিপলস পার্টির মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেনসহ অন্যরা।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বয়কট করতে পারে— এমন গুঞ্জন সম্পর্কে জোট শরিকরা জোটের প্রধান সমন্বয়কের কাছে জানতে চান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জোট শরিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো পরিস্থিতেই ভোটের মাঠ থেকে সরবে না বিএনপি। বিষয়টি মাথায় রেখেই সবাইকে এগোতে হবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে থাকার। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন থেকে সরে আসবে না বিএনপি।’

উল্লেখ্য, জোট শরিকদের জন্য মোট ৫৯টি আসন ছেড়ে দিয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এই ৫৯টির মধ্যে জামায়াত ২২টি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১৯টি এবং ২০ দলীয় জোটের বাকি শরিক দলগুলো পেয়েছে মোট ১৮টি আসন।

বিজ্ঞাপন

জামায়াতের আসনগুলোর মধ্যে ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা-৫ আসনে মিয়া গোলাম পারোয়ার, খুলনা-৬ আসনে আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম, কক্সাবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আসনে আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ আসনে মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আসনে আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, বাগেরহাট-৩ আসনে আবদুল  ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আসনে আবদুল আলীম, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মো. সাহাদাত হোসেইন, ঝিনাইদহ-৩ আসনে মতিউর রহমান, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসেইন ও রংপুর-৫ আসনে গোলাম রাব্বানী।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আসনগুলোর মধ্যে সুব্রত চৌধুরী (ঢাকা-৬), মোস্তফা মহসিন মন্টু (ঢাকা-৭), এ এইচ এম খালেকুজ্জামান (ময়মনসিংহ-৮), রেজা কিবরিয়া (হবিগঞ্জ-১), অধ্যাপক আবু সাঈয়িদ (পাবনা-১), আমসা আমিন (কুড়িগ্রাম-২), সুলতান মো. মনুসর আহমেদ (মৌলভীবাজার-২), আ স ম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), আবদুল মালেক রতন (কুমিল্লা-৪), শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন (ঢাকা-১৮), সাইফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-৩), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী ( টাঙ্গাইল-৮), লিয়াকত আলী (টাঙ্গাইল-৪), ইকবাল সিদ্দিকী (গাজীপুর-৩), মনজুরুল ইসলাম (নাটোর-১), মাহমুদুর রহমান মান্না ( বগুড়া-২), এস এম আকরাম (নারায়ণগঞ্জ-৫), শাহ রহমত উল্লাহ (রংপুর-১) ও নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর (বরিশাল-৪) পেয়েছেন ধানের শীষের মনোনয়ন।

অন্য শরিকদের মধ্যে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ (চট্টগ্রাম-১৪), নুরুল আলম (চট্টগ্রাম-৭), ড. রেদওয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭) শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-১) সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ (ময়মনসিংহ-১০), মাওলানা শাহিনুর পাশা (সুনামগঞ্জ-৩) মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস (যশোর-৫), মুফতি মুনির হোসেন (নারায়ণগঞ্জ-৪), ওবায়দুল্লাহ ফারুক (সিলেট-৫), ড. আহমেদ আবদুল কাদের (হবিগঞ্জ-৪), আবদুল বাসিদ আজাদ (হবিগঞ্জ-২), জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ডা. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী (গাইবান্ধা-৩), মোহম্মদ আহসান হাবিব লিংকন (কুষ্টিয়া-২), ঢাকা-১৭ আসনে বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, নড়াইল-২ আসনে এনপিপি’র চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, রংপুর-৩ আসনে পিপিবির রিটা রহমান, চট্টগ্রাম-৫ আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, পিরোজপুর-২ আসনে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ধানের শীষে নির্বাচন করছেন।

এরই মধ্যে ধানের শীষের অন্তত ১৬টি আসন শূন্য হয়ে গেছে। প্রায় ২০ জন প্রার্থী রয়েছেন কারাগারে। উদ্ভূত পরিস্থিতে বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কি না— সে বিষয়টি নিয়ে খোদ জোট শরিকদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। এই সংশয় দূর করতেই শরিকদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করল বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন