বিজ্ঞাপন

মানুষের মনে ঈদ আনন্দ নেই: রিজভী

August 20, 2018 | 3:06 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশে ভয়াবহ দুঃশাসন ও স্বৈরশাসনের কারণে মানুষের মনে ঈদের আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২০ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘একদিন পরই মুসলিম বিশ্বর আরেকটি বড় উৎসব ঈদ-উল আযহা। ঈদ মানেই উৎসব, ঈদ মানেই আনন্দ। কিন্তু মানুষের মনে ঈদের আনন্দ নেই।’

বিজ্ঞাপন

‘দেশে যে ভয়াবহ দুঃশাসন ও স্বৈরশাসন চলছে— এর যাতাকলে পিষ্ট হয়ে গোটা জাতি আজ আতঙ্কিত উৎকণ্ঠিত। এমনিতে অবৈধ সরকারের দুর্নীতি, টাকা পাচার, লুটপাট, চাঁদাবজি, দখলবাজিতে মানুষ অতিষ্ঠ। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষ দিশেহারা। বাড়িভাড়া বেড়েছে, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও  নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। এরই মাঝে যোগ হয়েছে মামলা হামলাসহ নানা আতঙ্ক’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র আওয়ামী ভাবাপন্ন কিছু সংখ্যক লোক হয়ত নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারে, কিন্তু বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, দেশের সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধরাণ শিক্ষার্থী, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এখন ‘অবৈধ’ সরকারের নানা বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত, ক্ষতবিক্ষত।’

রিজভী বলেন, ‘এতদিন শুধু বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন নিপীড়নের খড়গ চলছিল। চলছিল অপহরণ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা। এখন হামলা. মামলা, রিমান্ড এমনকি তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষার্থীদের।’

বিজ্ঞাপন

 স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নিরীহ ও নিরপরাধ শিক্ষার্থীরা ন্যায় সঙ্গত ও যৌক্তিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ন্যায্য দাবিতে প্রতিবাদ করে এখন তারা কারাবন্দি। গতকাল কিছু শিক্ষার্থী জামিন পেলেও এখনও বহু নিরপরাধ শিক্ষার্থী কারাগারে বন্দি। মাথার ওপর মিথ্যা মামলার খড়গ ঝুলছে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জামিন এখনও মেলেনি উল্লেখ করে রিজভী বলেন,  ‘তাদের এবং তাদের অভিভাবকদের আহাজারি আর কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। অভিভাবকরা এক থানা থেকে আরেক থানা, আদালত থেকে আদলতে ছুটাছুটি করেও জামিন করাতে পারেননি সন্তানদের। মিনতি জানালেও জনসমর্থনহীন সরকারের পাষাণ হৃদয় গলেনি।’

অজ্ঞাতনামা মামলায় হাজার হাজার আসামি করায় ঢাকাসহ সারাদেশের অভিভাকরা অজানা আতঙ্কে আছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা তাদের সহপাঠীদের জীবন বাঁচাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ করেছিল সেটা কি অপরাধ? শিক্ষার্থীদের ন্যায় সঙ্গত কোটা সংস্কার আন্দোলন কি অপরাধ?  অন্যায়ের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করা কি অপরাধ?

রিজভীর প্রশ্ন—‘বেআইনি অস্ত্রে সজ্জিত হেলমেটধারী সরকারি দলের ক্যাডাররা ধাওয়া করে শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা কি ন্যায়সঙ্গত? আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে আইন তুলে নেওয়া কি বৈধ কাজ? তাদের নামে মামলা কেন হলো না! তারা কেন গ্রেফতার হলো না!’

বিজ্ঞাপন

‘মনে হয় সরকারি দলের ক্যাডারদের প্রকাশ্যে সহিংস সন্ত্রাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে । সে কারণে তারা আইনের ঊর্ধ্বে। সে জন্যেই প্রধানমন্ত্রী নিজ দলীয় ক্যাডারদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অথচ আহত কোমলমতি শিক্ষার্থী ও আহত সাংবাদিকদের দেখতে যাননি’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন,  ‘তবে এ অনাচারগুলোর উত্তর একদিন ক্ষমতাসীনদের দিতেই হবে। জবাবদিহীতার দিন ঘনিয়ে আসছে। ঈশান কোনে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে, যে কোনো মুহূর্তে কালবৈশাখীর মত্ত ঝাপ্টায় বিনা ভোটের সরকার হুড়মুড় করে পড়ে যাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. মামুন আহমেদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহীন, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন