বিজ্ঞাপন

যে কারণে তামিম-মুশফিকের চেয়ে এগিয়ে থাকতে চান সাকিব…

January 19, 2018 | 8:59 pm

বিশেষ প্রতিনিধি, মিরপুর থেকে

বিজ্ঞাপন

মাইলফলকটা মনে করিয়ে দিতেই মাপা একটা হাসি দিয়ে সাকিব আল হাসান বললেন, ‘তাই নাকি?’

রেকর্ডটা মনে অবশ্য না রাখতেই পারেন। প্রতিদিন কত শত পরিসংখ্যান যোগ হচ্ছে নামের পাশে, কত কিছু লেখা হচ্ছে। সংখ্যা-টংখ্যা নিয়ে তার কখনোই খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান নিয়েও আলাদা করে কোনো ভাবাবেগ নেই। ‘ভালো তো অবশ্যই লাগছে। না লাগার কোনো কারণ নেই’- শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচসেরা হয়ে আসার পর এমন দায়সারা বাক্যেই বুঝিয়ে দিলেন, রেকর্ড নিয়ে ভাবেন খুব কমই।

তবে সংখ্যা মানেই নতুন করে একটা চূড়ায় যাওয়া, যে চূড়ায় সাকিবের আগে আজ উঠেছেন তামিম ইকবালও। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যে আজ ১১ হাজার আন্তর্জাতিক রান হয়ে গেছে তার। সাকিব বরং এই ব্যাপারটাই দেখেছেন অন্যভাবে। তামিম-মুশফিকের সঙ্গে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা যে দলের জন্যই ভালো, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন।

বিজ্ঞাপন

‘এই সুস্থ প্রতিযোগিতাটা আমার মনে হয় দলের জন্য খুব জরুরি। কারণ সবার তো নিজের সঙ্গে নিজের কাছে একটা প্রত্যাশা থাকে, নিজের কাছে নিজের একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। এরকম সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলে দলের জন্য আরও ভালো, যেটা আমি আগেও বললাম।’

সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবশ্য দুজনের ওয়ানডে একসময় জমজমাটই ছিল। ২০১৫ সালে ওয়ানডেতে সবার আগে চার হাজার রান করেছিলেন সাকিব। ঠিক এক বছর আট মাস পর তামিম পাঁচ হাজারি ক্লাবে ঢুকে ছাড়িয়ে গেলেন তাকে। ছয় হাজারেও সাকিব অনেকটা এগিয়ে, ব্যাট হাতে আরও অনেক রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন। তবে সাকিব এবার তিনে এসে সুযোগ পাচ্ছেন ব্যবধান কিছুটা কমানোর।

কিন্তু একজন অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এই ব্যাপারটা কি আসলেই মাথায় কাজ করে তাদের? সংখ্যা নিয়ে মাথা ঘামালেও সাকিব স্বীকার করলেন, রানের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে অদৃশ্য একটা প্রতিযোগিতা ঠিকই আছে। সেটা দলের জন্যও ভালো।

বিজ্ঞাপন

তামিমের ৮৪ রানের ইনিংস

সাকিবের ৬৭ রানের ইনিংস

মুশফিকের ৬২ রানের ইনিংস

 

বিজ্ঞাপন

‘আমরা তিন-চার জন আছি যারা খুব কাছাকাছি রানের দিক থেকে। আমাদের মধ্যে অবশ্যই চেষ্টা থাকে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। অবশ্যই এরকম কারো চিন্তা থাকে না ও আউট হয়ে যাক। যে যত করবে তার চেয়ে বেশি করতে পারাটা আলাদা একটা সন্তুষ্টির ব্যাপার। আমরা যে পরিস্থিতিতে আছি সেটা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি।’

সাকিব যোগ করেন, ‘আমার কাছে মনে হয় বিশেষ করে তিন জনের এই প্রতিযোগিতা খুবই ভালো। এটা যত বেশি চলতে থাকবে দলের জন্য ততই ভালো।’

সাকিব তিন জনের কথা বললেও এই প্রতিযোগিতায় শেষ জন একটু পিছিয়েই আছেন। টেস্টে সাকিব-তামিম-মুশফিকের ব্যবধানটা অনেক কম বটে, কিন্তু ওয়ানডেতে মুশফিক বাকিদের মতো জোর কদমে হাঁটতে পারেননি। ৪৬৬২ রান নিয়ে অবশ্য আছেন তিনেই। তবে সাকিবকে সেই প্রশ্নটা করা হলে তিনি নিজেই বললেন, ‘মুশফিক ভাইও তো আশেপাশেই আছে, নাকি?’

কিন্তু একটু কি খেদ নেই সাকিবের? ওয়ানডেতে চার-পাঁচেই ব্যাট করতে হয়েছে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় জুড়ে, এ নিয়ে মাত্র চতুর্থবার ব্যাট করেছেন তিনে। টেস্টেও তো সেই একই গল্পই। তামিমের ১১ হাজার রান যখন দশ বছরে হয়ে গেছে, সাকিবকে সেজন্য খেলতে হয়েছে ১১ বছর। সেটা মনে করিয়ে দিতেই সাকিব একটু হেসে ফেললেন। পরক্ষণেই সিরিয়াস হয়ে যে উত্তরটা দিলেন, এরপর আর কিছু বলার থাকে না।

‘স্বাভাবিকভাবে একজন ওপেনার বা নাম্বার তিন ব্যাটসম্যান যত রান করবে একজন পাঁচ বা ছয়ের ব্যাটসম্যান তত রান করবে না।’

তবে সাকিব ওয়ানডের মতো টেস্টেও নিজেকে ওপরে নিয়ে এলে খুব বেশি দিন আর এই যুক্তি দিতে পারবেন না!

সাকিবের ম্যাচ শেষে কনফারেন্স

সারাবাংলা/এএম/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন