বিজ্ঞাপন

যৌন নির্যাতনের অভিযোগ, তদন্ত হবে দিল্লীর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে

August 11, 2018 | 8:45 am

রোকেয়া সরণী ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ভারতের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় পাওয়া নারীরা যে নির্যাতনের শিকার হয় সে বিষয়ে তারা আসলেই এতদিন নজর দেননি।

দিল্লীজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা বয়সী মহিলাদের জন্য তৈরি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর অনেকগুলোতেই আশ্রিতা নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ আসার পর এরকম ঘটনা আরও আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী মানেকা গান্ধী।

বিহারের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে একটি ঘরের খোঁজ পাওয়া গেছে—যেটিকে গোপনে গর্ভপাতকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এর ফলে ২০ জন সরকারী কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং অন্তত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

উত্তর প্রদেশের দেওরিয়ার একটা আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সোমবার (৬ আগস্ট) চব্বিশ জন মেয়েক উদ্ধার করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে এমন ২১তম আশ্রয়কেন্দ্র এটি। এমনকি এই আশ্রয়কেন্দ্রে নিবন্ধিত এমন ১৮ জন মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ এসেছে।

এসব ঘটনায় জনরোষ এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি কিছু কিছু রাজ্য সরকারও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করতে শুরু করে। এ সময় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও স্বীকার করেন যে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সেভাবে কখনও নজরদারি করা হয়নি। তা ছাড়া নির্যাতনের মাত্রা সম্পর্কেও তারা বুঝতে পারেননি বলেও জানান। যৌন নির্যাতনকে অন্যান্য শারীরিক নির্যাতন ভেবেছিলেন তারা।

সোমবার (৬ আগস্ট) মানেকা গান্ধী বলেন, ‘এটা (আশ্রয়কেন্দ্রে নারী নির্যাতন) শুধু যে ভয়ঙ্কর তাই নয়, আমি ভীষণ দুঃখিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এমন আশ্রয়কেন্দ্র আরও আছে। কারণ আমরা এতদিন ওদের টাকাই দিয়ে গিয়েছি কিন্তু ওখানে কি ঘটছে সে ব্যাপারে খেয়াল করিনি।’

বিজ্ঞাপন

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবার ত্যাগ করেছে এমন নারী এবং শিশুরা জায়গা পায়। এদের পাশাপাশি রিম্যান্ডে নেওয়া এবং পাচার করার হাত থেকে উদ্ধার হয়েছে এমন নারীদেরও এখানে রাখা হয়।

গত জুনে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্সের (টিআইএসএস) একটা অডিটের পর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারী নির্যাতনের ঘটনা বের হয়ে আসে। এরপর বিহারের পুলিশ নির্যাতনের ঘটনায় বিহারের বেশ কয়েকটি আশ্রকেন্দ্রের পরিচালক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিবদ্ধ করে।

টিআইএসএস-এর রিপোর্টে আরও বের হয় যে, বিহারের মোট ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্রের সবগুলোতেই নানা মাত্রার নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বেসরকারি সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হলেও বিহারের রাজ্য সরকারের অর্থায়নে চলে।

মুজাফফরপুরের একটা আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ৩০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়াও নানারকম শারীরিক নির্যাতন করা হয় এখানকার আশ্রিতাদের। অডিটর বা নিরীক্ষকদের মতে ব্যাপারটা ভীষণই আতঙ্কের।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও বলেন এখানকার মেয়েদের এখানে নিজ নিজ ওয়ার্ডে আটকে রাখা হয়। ডাইনিং হল থেকে খাবার আনা ছাড়া খোলা জায়গায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এই মেয়েদের।

বিহারের রাজধানী পাটনায় আশ্রয়কেন্দ্রের ভেতরের ‘হিংস্র পরিবেশের’ কারণে একজন মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

মহিলা বিষয়ক মন্ত্রি মানেকা গান্ধী এই রাজ্যের সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করতে আদেশ দিয়েছেন। আর অন্যদিকে দিল্লীর মহিলা বিষয়ক দপ্তর রাজধানী দিল্লীর সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে অতর্কিত পরিদর্শনের জন্য একটি দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে।

সূত্র – দ্য গার্ডিয়ান

সারাবাংলা/আরএফ/

 

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন