বিজ্ঞাপন

রক্ষণশীলতার অর্ধশতাব্দীর গরাদ ভেঙে কিউবায় ইন্টারনেট সেবা

July 18, 2018 | 6:26 pm

।আন্তর্জাতিক ডেস্ক।

বিজ্ঞাপন

তথ্যপ্রযুক্তি ও বিশ্বায়নের এই যুগে ইন্টারনেটের গতি একটু কমলেই যেখানে হইহই পড়ে যায়- সেখানে একটি গোটা দেশ এর মূল মাধ্যম ইন্টারনেট-প্রযুক্তিবিহীন থাকা  অবিশ্বাস্যই বটে। আর এই অবিশ্বাস্য কাণ্ডটিই এতোদিন ধরে সম্ভব করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পাশের দেশ কিউবা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে কিউবার কমিউনিস্ট সরকার তথ্য সংরক্ষণ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশটিতে কোনো ধরণের তথ্য ও যোগাযোগ বিনিময় নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। একই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবস্থা প্রচলনের পরও দেশটিতে নিষিদ্ধ ছিল ইন্টারনেট।

অতিসম্প্রতি ‘সুমতি’ হয়েছে দেশটির সরকারের। রক্ষণশীলতা থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশটির কমিউনিস্ট সরকার। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে কিউবার সরকার। দেশটির সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে কিউবার সরকারি সংবাদসংস্থার কর্মীদের এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিউবার টেলিযোগাযোগ সংস্থা ইটিইসিএসএ জানায়, আগামী কয়েকমাসের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ মোবাইল ব্যবহারকারী ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আসবেন। আর ২০২০ সালের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেক নাগরিক এই সেবা পাবে বলেও দাবি ইটিইসিএস ‘র।

বিবিসি জানায়, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ও রাউল কাস্ত্রোর সরকার মনে করতেন অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহার প্রশাসনিক কাজকর্মে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াবে। আর তাই ইন্টারনেট নিষিদ্ধ ছিল দেশটিতে। তবে কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করা যেত ইন্টারনেট।

বিজ্ঞাপন

দেশটিতে বিশেষ করে তরুণদের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট সেবা অবাধ করে দেওয়ার বিষয়ে জোর দাবি ছিল। আর সেই দাবি মেনেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল রক্ষণশীল মনোভাব থেকে বেরিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। আর্থিক এবং বাণিজ্যিক পরিসর বৃদ্ধির জন্য এই অবাধ ইন্টারনেট সেবা বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিউবার জাতীয় সংবাদ সংস্থার কর্মী ইউরি নরিদো বিবিসিকে বলেন, এটি অনেকদিনের চাওয়া ছিল। চালু হওয়ায় সংবাদকর্মীদের কাজ করার ধরণ বদলে যাবে আমূল। বলতে গেলে এই প্রথম আধুনিক যুগে ঢুকলাম আমরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে ২০১৩ সাল থেকে দেশটির আন্তর্জাতিক হোটেল, পর‌্যটন কেন্দ্র, রেস্তোরায় ইন্টারনেট সেবা চালু ছিল। এরপর দাবির মুখে গতবছরে কিছু নির্দিষ্ট সাইবারক্যাফে ও ১১ হাজার বাড়িতে ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করেছিল সরকার। হাতেগোনা কিছু ধনী কিউবান এই সুবিধা পেতেন। আর ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্যও পরিশোধ করতে হতো চড়া দাম।

তবে কিউবার ব্যবসায়ী ও তরুণদের চাহিদা ছিল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বস্তরে ইন্টারনেট সেবা চালুর। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে হতাশ তারুণ্য কিন্তু থেমে ছিল না। দি ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, কোনো প্রকার সংযোগ না থাকায় কিউবার তরুণরা নিজেদের মধ্যে তৈরি করে নিয়েছে এক বিশাল ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক। সমগ্র হাভানা জুড়ে ছড়িয়ে আছে বিশাল এই নেটওয়ার্ক। গোপন এই নেটওয়ার্কের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে কথা বলা, চ্যাট, গেম খেলা এবং বিভিন্ন কন্টেন্ট ডাউনলোড করার কাজটি করতে পারেন। সস্তা এবং ছোট আকারের গোপন ওয়াইফাই অ্যান্টেনা এবং ইথারনেট ক্যাবলের সাহায্যে তরুণরা এই ‍সুবিধা পেতেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ এসবি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন