বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে রাখাইন রাজ্যে উন্নয়নের উদ্যোগ ইয়াঙ্গুনে

July 20, 2018 | 10:02 pm

।।আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক উন্নয়ন কাজে হাতে নিচ্ছে মিয়ানমার সরকার। আর সে লক্ষ্যে থাইল্যান্ডের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে আলোচনা শুরু করেছে, এমন একটি খবর দিচ্ছে ইয়াঙ্গুনের সংবাদমাধ্যমগুলো। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার ও থাইল্যান্ডভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিইআরডি) রাখাইন রাজ্যে বৃহত্তর স্কেলে বিনিয়োগকারী নিয়োগে আলোচনা শুরু করেছে। ওই অঞ্চলের উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত বাণিজ্য জোরদার করার লক্ষ্যে কী করা যায় সেসব আলোচনায় এসেছে বলে ইরাবাদি নামের একটি সংবাদমাধ্যম তার খবরে বলেছে। এতে আরও বলা হয়েছে- শিগগিরই মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের দুটি সংস্থার প্রতিনিধি দলকে সাথে নিয়ে রাখাইন রাজ্য এলাকা সফরে যাচ্ছে এবং তাদের সেই সফরের মূল লক্ষ্যই হবে সাম্প্রতিক সামরিক আগ্রাসনে দেশটি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশে ফেরত নেওয়া। আর ওইসব উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য হবে প্রত্যাবর্তনের পর রোহিঙ্গারা যাতে নিজ ভূমে ভালো জীবনযাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করা।

সংবাদমাধ্যমটি মিয়ানমারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ড, উইন মিয়াত আয়েকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, মিয়ানমার প্রেসিডেন্ট উ উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু কি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উইন মিয়াত রাখাইন রাজ্যের জন্য কফি আনান অ্যাডভাইজরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান হয়ে কাজ করছেন। তিনি ছাড়াও কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান ড. সুরাকিরাত সাথিরাথাই আইবিইআরডি’র সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আইবিইআরডি থাইল্যান্ডের প্রধানসারির একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে উন্নয়ন কাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা এই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাথিত লিংপঙ্গাপান বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে উত্তর-রাখাইনে সাম্প্রতিক যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা থেকে সে অঞ্চলটিকে নতুন করে গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক যেসব পরামর্শ রয়েছে তা বাস্তবায়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়। আইবিইআরডি এই কাজে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মৎস্যচাষ, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারসহ ডিজিটাল পদ্ধতির উন্নয়নেও কাজ করবে বলে বৈঠকে জানায়।

বিজ্ঞাপন

এতে আরও আলোচনা হয় যে, জাতিসংঘের দুটি সংস্থার প্রতিনিধি ও সরকারের কর্মকর্তারা শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে মাংদাও এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৭ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে কিভাবে ফেরত নেওয়া হবে তা পর্যবেক্ষণ করবেন। সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে- ২০১৭ সালের শেষ ভাগে সামরিক অপারেশনগুলোর কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত আনা, জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

তবে সরকারের ঘোষণা সত্ত্বেও রাখাইন রাজ্যে ধ্বংসস্তুপের জনপদে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা কঠিন হচ্ছে। খবরটিতে বলা হয়, মাংদাও বর্ডার ট্রেড চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান অং মিন্ট থিয়েন বলেছেন, বিষয়টি এতটা সহজ নয়। বারবারই এখানে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। বিনিয়োগকারীরা এখানে নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি অবকাঠামোর অভাব, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদের অভাবকে চিহ্নিত করছেন।

দিনে এই অঞ্চলে মাত্র চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয় দেশটির সরকার, তাও জেনারেটরের মাধ্যমে। তবে কিছু কিছু উন্নয়ন প্রকল্প এরই মধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। নতুন বিনিয়োগকারী এলে রাখাইন রাজ্য উন্নয়নের ছোঁয়া পাবে। তার সবচেয়ে বড় সুফল হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা ফিরতে পারবে নিজেদের বাসভূমে।

বিজ্ঞাপন

সারবাংলা/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন