বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের প্রতি চাপ অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাজ্য

February 19, 2019 | 3:50 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের প্রতি চাপ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা সফররত যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী পেনি মোডানট।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি একথা জানান।

এর আগে, পেনি মোডানট গতকাল সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমার থেকে সরাসরি বাংলাদেশে এসে কক্সবাজারের একাধিক রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

বিজ্ঞাপন

পেনি মোডানট বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়ে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা এখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা সকলে মিলে এই সঙ্কট কাটানোর নিরন্তর চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারে প্রতি সকল ধরনের চাপ অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমারে রাখাইনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সবাইকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। আমি আশাবাদী যে, সেখানে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যাবে। অনুমতি পাওয়ার জন্যও আমাদের চাপ অব্যাহত থাকবে।’

এখন প্রত্যাবাসনে উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী পেনি মোডানট বলেন, ‘স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠাতে হবে। আমাদেরকে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

একাধিক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পেনি মোডানট বলেন, ‘বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ে ঢাকাকে সহায়তা করবে লন্ডন। এই খাতের উন্নয়নে গবেষণা থেকে শুরু করে উদ্ভাবন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পেনি মোডানট এর সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক দপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করছে। বাংলাদেশের একাধিক ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে লন্ডন ঢাকার পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। যা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা যোগাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতেও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আমরা যুক্তরাজ্যের কাছে অব্যাহত সমর্থন চেয়েছি। বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে। প্রতিমন্ত্রী পেনি মোডানট সমর্থন অব্যাহত রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পর রোহিঙ্গা প্রত্যবাসনে দ্বিপক্ষীয়ভাবে নতুন করে কোনো তৎপরতা শুরু হয়নি। তবে বহুপক্ষীয় ফোরামে এই সঙ্কট কাটাতে কাজ চলছে।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে গত শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) যৌথ বৈঠক বা  ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’ অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও) বৈঠক করে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলা করতে চলতি বছর ৯২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (৭৭৩ কোটি টাকা) সমপরিমাণ মুদ্রার তহবিল প্রয়োজন। এছাড়া ওই বৈঠকে সকলেই এই সঙ্কট সমাধানে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন।

ওই বৈঠকের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২৪ মিলিয়ন ইউরো সমপরিমাণ মুদ্রা ওই তহবিলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বিগত ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সরকার এবং দেশটির সেনারা রাখাইনের জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক অত্যাচার শুরু করলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়। সেই সময় থেকে চলতি বছর পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

এর আগে, বিগত ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে প্রায় ৩ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়। সব মিলিয়ে ১২ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয় শিবিরে রয়েছে।

সারাবাংলা/জেআইএল/এনএইচ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন