বিজ্ঞাপন

‘লিস্টে তো গোপালগঞ্জের কেউ নেই, সবার বাড়ি দেখি কুষ্টিয়া’

September 19, 2018 | 12:56 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে সহায়তা, ভাতা ও অনুদানের চেক পাওয়া অসচ্ছল সাংবাদিকদের তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের বেশিরভাগের বাড়িই কুষ্টিয়ায়— সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি নিজেই। এই তালিকায় গোপালগঞ্জের কারও নামও তিনি দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘লিস্টে তো গোপালগঞ্জের কেউ নেই। সবার বাড়ি দেখি কুষ্টিয়া।’

বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনাজনিত আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা, ভাতা ও অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানান গণমাধ্যমের মালিকপক্ষের প্রতি। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই প্রাণোচ্ছ্বল প্রধানমন্ত্রী এ পর্যায়ে খানিকটা রসিকতার সুরে বলে ওঠেন, ‘একটাই দুঃখ, গোপালগঞ্জের কেউ নেই (অনুদান পাওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে)। এত এত সাংবাদিক অনুদান পাচ্ছেন, এর মধ্যে একজনের নামও পেলাম না যার বাড়ি গোপালগঞ্জ। অনুদান পাওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে গোপালগঞ্জের কেউ নেই।’

পাশেই বসে থাকা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘লিস্টে তো দেখি সবার বাড়ি কুষ্টিয়া।’ বলেই হেসে ওঠেন তিনি। হেসে ওঠেন তথ্যমন্ত্রীও।

পরে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, একদিক থেকে অবশ্য আমি খুশি। লিস্টে গোপালগঞ্জের কেউ নেই মানে গোপালগঞ্জের কোনো সাংবাদিক অসচ্ছল নন। আর তারা কেউ যেন অসচ্ছল না থাকেন, তার ব্যবস্থাও আমি করে দেবো।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। রাজনীতির সূত্রেই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক। সরকারে যখন ছিলাম তখন দেখেছি, বিরোধী দলে থাকতেও দেখেছি, অনেক সাংবাদিকই অসুস্থ হয়ে পড়লে অসহায় হয়ে পড়েন। অনেকে দুর্ঘটনায় পড়লে তার পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। তারা অনেক কষ্টে পড়ে যান। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ থাকে না। কারণ এটা এমন একটা চাকরি, যার নিশ্চয়তা নেই, স্থায়িত্ব নেই। চাকরির শেষেও তেমন কিছু পাওয়ার সুযোগ ছিল না। এসব বিবেচনা করেই সাংবাদিকদের জন্য আমি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নেই।’

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্কের জায়গাগুলো তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করি। কেউ কখনও বলতে পারবে না, কারও গলা টিপে ধরেছি বা কথা বলতে বাধা দিয়েছি। সবার অধিকারের জন্যই কাজ করেছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। আমি কতবার প্রেস ক্লাবে গিয়েছি, সেখানে গিয়ে একটু চা বা ডালপুরি খেয়েছি। অনেক সাংবাদিকদের সঙ্গেই আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমার সবসময় লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। যখনই কাজ করেছি, সারাদেশ ঘুরেছি। যখন যেখানেই গিয়েছি, মানুষ কিভাবে আছে সেটা খেয়াল করার চেষ্টা করেছি। রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় কিংবা সমাবেশে দেখতাম কার পায়ে কোন জুতোটা পরা, কার গায়ের জামা কেমন। সবসময় খেয়াল করেছি, একজন নারী, তার পরনের শাড়িটা কেমন, তার গায়ে ব্লাউজটা আছে কিনা, শাড়িটা ছেঁড়া কি না। মানুষের ঘরবাড়ি কেমন, তা দেখেছি। গ্রামের পর গ্রাম হেঁটেছি। তীব্র রোদ, ঝড়-বৃষ্টি সবকিছু উপেক্ষা করে মানুষের কাছে গিয়েছি। কখনও বাসে চড়ে, কখনও নৌকায় চড়ে, এমনকি মাছের ট্রলারে চড়েও প্রত্যন্ত সব অঞ্চলে চলে গিয়েছি। অনেক সাংবাদিক কিন্তু আমার সঙ্গে ছিলেন। লক্ষ্যটা ছিল, দেশকে দেখা, দেশের মানুষকে দেখা, তাদের প্রকৃত অবস্থা জানা। সবসময়ই ভাবতাম, সুযোগ পেলেই দেশের উন্নয়ন করব। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করব। সেই পরিকল্পনা ছিল বলেই বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল দিন বদলের সনদ। আজকে নিশ্চয়ই আপনারা স্বীকার করবেন, সেই দিন বদলের শুরু হয়েছে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।

ফাইল ছবি

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন