বিজ্ঞাপন

শান্ত শহর ঢাকা!

May 2, 2018 | 4:00 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একটানা গাড়ির হর্ণের আওয়াজ, মানুষের হাকডাক, কাজের ব্যস্ততা, এই তো ঢাকার প্রতিদিনের চেনা দৃশ্য। প্রতিদিন কত যে মানুষ নিজের মনে বলতে থাকে…ইশ ঢাকা যদি একটু ফাঁকা হতো। ঢাকায় যদি রিকশা দিয়ে ঘোরা যেত। হ্যাঁ প্রকৃতিও মাঝে মাঝে ঢাকাবাসীর মনের ইচ্ছা পূরণ করে।

কয়েকদিন ধরেই নিজেদের ইচ্ছে পূরণের আনন্দেই আছেন ঢাকাবাসী। অনেকটাই শান্ত একটি শহর। কোলাহল নেই। নেই প্রতিযোগিতার নিমিত্তে চলা শহর পরিবহনগুলোর বেপরোয়া আচরণ। নেই হাত, পা কাটার কোনো ভয়ানক দৃশ্য বা খবর। একটানা কয়েকদিনের ছুটি যেন রাজধানীকেও খানিকটা ছুটিই দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ২৭ ও ২৮ এপ্রিল শুক্র, শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল রোববার বুদ্ধপূর্ণিমার ছুটি। মঙ্গলবার পহেলা মে’র ছুটি। আর আজ ২ মে বুধবার পবিত্র শবে বরাতের ছুটি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরকারি অফিস আদালত খোলা থাকলেও পরদিন থেকে দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি কারণে অনেকেই এদিন ছুটি নিয়েছেন।

টানা এই ছুটিতে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে গেছেন রাজধানী ঢাকার বাইরে ছুটি কাটাতে গেছেন। তাই রাজধানীরও এখন অনেক ছুটি। নগরীর অনেক বাসা বাড়িতে ঝুলছে তালা।

বুধবার রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ, বাংলামোটর, মগবাজার, মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মুল সড়কগুলো অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। এমনকি অলি-গলি গুলোতেও রিকশার টুংটাং আওয়াজও মিলছে কম। রাস্তা দেখে কে বলবে? এই শহরে ট্র্যাফিক জ্যাম হয়!

বিজ্ঞাপন

গ্রীন রোড আল-আমিন রোডের বাসিন্দা ও মমতাজ মঞ্জিলের মালিক আহসান খান এই প্রতিবেদককে জানান, সাত তলা ভবনের মোট ১৪টি ফ্ল্যাটের মধ্যে এখন ৯টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা গত শুক্রবার ঢাকা ছেড়েছেন। কেউ নিজ গ্রামের বাড়িতে গেছেন। কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে গিয়েছেন। তিনি বলেন, আর যারা এখন আছেন তাদের অনেকেই গেছেন ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে।

একই কথা জানান, মগবাজারের বাসিন্দা শামীম আহসান। তিনি জানান, তার ৫ তলা বাড়ির মোট ফ্ল্যাট ১৩টি। একটি তলার পুরোটাতে তিনি নিজে থাকেন। আর বাকী তলাগুলোতে তিনটি করে ফ্ল্যাট। তার বাড়ির সব ভাড়াটিয়া সরকারি চাকুচিজীবি। গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরো বাড়ি খালি হয়ে গেছে উল্লেখ করে বলেন, টানা বন্ধের কারণে কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি গেছেন। আর কেউ গেছেন কক্সবাজারে।

বিজ্ঞাপন

আর যারা রাজধানীতে এখন অবস্থান করছেন তারাও ফাঁকা ঢাকার কারণে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। ধানমন্ডি লেকে প্রতিদিন প্রাতঃ ভ্রমণে আসা ৬০ বছর বয়সী তাহমিনা জানান, আমি প্রতিদিন সকালেই লেকের পাড়ে হাটঁতে আসি। অন্যদিন সকাল ৭টা হলেই রাস্তাঘাটে যানবাহনের জ্যাম দেখতে পেতাম। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে চিত্রটাই অন্য রকম। এখন বেলা ১০-১১ টার সময়ও রাস্তায় জ্যাম দেখা যায় না। এমন ঢাকাই তো আমরা চাই।

মিরপুর থেকে পল্টনে আসা বাস যাত্রী মোস্তাফিজুল আলম জানান, অন্যদিন, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে পুরানা পল্টনে আসতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘন্টা। আর আজ আসলাম মাত্র ৩০ মিনিটে।

এদিকে, ব্যস্ত ঢাকা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার কারণে কোন ধরনের অপরাধ যাতে না ঘটে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর প্রধান সড়ক গুলোর পাশাপাশি অলি গলিতেও টহল দিচ্ছে পুলিশ।

 

 

সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন