বিজ্ঞাপন

শাশুড়িকে হত্যা, সাজা এড়াতে নিজেই মামলা করেন নূর ইসলাম

November 17, 2018 | 9:25 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বিয়ের পর থেকেই কলহ চলছিল নূর ইসলামের সংসারে। কেবল স্ত্রী রোজিনা নয়, শাশুড়ি জরিনা খাতুনও তার দাম্পত্য কলহের জন্য দায়ী বলে মনে করেতেন নূর ইসলাম। তাই নূর ইসলাম তার মা আমেনা বেগম (৪৮) ও মামা স্বপনের (৩৫) সঙ্গে পরিকল্পনা করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শাশুড়িকে হত্যা করান। শুধু তাই নয়, সাজা এড়াতে নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন নূর ইসলাম।

আশুলিয়া থেকে নূর ইসলাম, তার মা আমেনা বেগম এবং মামা স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করার পর বেড়িয়ে আসে এসব তথ্য।

গত ৯ নভেম্বর রাস্তার পাশে থেকে জরিনা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। টাঙ্গাইল যাওয়ার জন্য আশুলিয়া থেকে জরিনা খাতুন এবং তার ৭০ বছর বয়সী বাবা আকবর হোসেন বাসে উঠেছিলেন। তারা ছাড়াও বাসে চার-পাঁচজন ছিলেন। বাস ছাড়ার পর কিছু দূর গিয়ে আবার বাসটি আশুলিয়ার দিকে ফিরে আসতে শুরু করে। তখন যাত্রী সেজে থাকা দুর্বৃত্তরা হঠাৎ তাদের মারধর শুরু করে এবং আকবরকে বাস থেকে ফেলে দেয়। আকবর পুলিশকে জানানোর পর আধা কিলোমিটার দূরে জরিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার সংস্থাটির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, গত ৯ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ থেকে আশুলিয়ার গাজীরচট মুন্সীপাড়া এলাকায় নূর ইসলামের বাড়িতে আসেন জরিনা খাতুন ও তার বাবা আকবর আলী মণ্ডল। জরিনা খাতুনের মেয়ে রোজিনা খাতুনের পারিবারিক কলহ মেটাতে এসেছিলেন তারা। নূর ইসলামের বাড়ির লোকজন বিষয়টি পছন্দ করেনি। নূর ইসলাম মনে করতেন, তার সংসারে কলহের পেছনে শাশুড়ির হাত ছিল। তিনি তার মা আমেনা বেগম এবং মামা স্বপন মিয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি মিনি বাসের (ঢাকা মেট্রো ব/ ১১-১৭৯২) চালক ও তার ৩ জন সহযোগীর সঙ্গে চুক্তি করেন- জরিনা খাতুনকে হত্যা করতে।

ওইদিন (৯ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে স্বপন মিয়া আশুলিয়ার শিমুলতলা বাস স্ট্যান্ড থেকে জরিনা খাতুন ও আকবর আলী মণ্ডলকে বাসে তুলে দেন। বাসটিতে অন্য কোনো যাত্রী তোলা হয় না। জরিনা ও তার বাবাকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আশুলিয়ার বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরানো হয়। মারগাং ব্রিজের উত্তর পাশে গিয়ে জরিনা ও তার বাবাকে মারধর করা হয়, এরপর আকবর আলীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। কিছু দূর যাওয়ার পর জরিনাকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জরিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে, বলেন বনজ কুমার মজুমদার।

বিজ্ঞাপন

নূর ইসলাম (২৯) নিজেই বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করায় শুরুতে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের আমরা সন্দেহের বাইরে রেখেছিলাম। পরে অধিকতর তদন্তে মূল ঘটনা উঠে আসে। হত্যাকারী চারজনকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। শিগগিরি তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন পিবিআই‘র এই কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/এসএইচ/এটি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন