বিজ্ঞাপন

শীতকে ভাগাই সবাই মিলে

December 17, 2017 | 9:25 am

মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, সারাবাংলা 

বিজ্ঞাপন

আজ পৌষ মাসের ৩ তারিখ। তবে পৌষ যে জাঁকিয়ে এসেছে এটা জানতে ক্যালেন্ডার আর দেখা লাগে কই? সকালে যখন ৬টা ৩৫ এ সূর্য উঠেছে, তার ঠিক এক ঘণ্টা আগে তাপমাত্রা ছিল সবচেয়ে কম, মাত্র ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভাবছেন সূর্য উঠলেই তো শীত যাবে ভেগে তাই না? জ্বি না। সকাল ৮টা বাজেও আজ তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত বেশ জাঁকিয়ে বসেছে, তাকে এখন সমীহ না করে উপায় নেই। যদি পথে ঘাটে থাকেন, সারাদিনই একটা গরম কাপড় গায়ে রাখতে হবে।

শীত যখন এসেছে তার হাত ধরে কুয়াশাও এসেছে। আজ কুয়াশাও বেশ ঘন। বিশেষ করে নদী অববাহিকায় তো কুয়াশারই রাজত্ব। চাঁদপুর-শরিয়তপুর রুটের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়িয়ার নৌ চলাচলই বন্ধ করতে হয়েছে। ঐ পথে যারা আজ নদীতে আছেন তাদের স্বাভাবিকভাবেই গন্তব্য পৌঁছাতে দেরি হবে। আপনার পরিচিত কেউ যদি ঐ পথে আজ থেকে থাকে আর আসতে বেশ দেরি করে, তবে তার উপর রেগে যেয়েন না যেন! আহা বেচারার কী দোষ, তারই কি ভালো লাগছে, ঘন কুয়াশায় হাত পা ছেড়ে বসে থাকতে? ফোন দিয়ে একটু খোঁজ খবর নিয়েন, এতে যদি তার সময়টা ভালো কাটে!

কুয়াশার দাপটে আকাশে সূর্যই উঠতে পারছে না। উঠলেও তাকে দেখা যায় না। এদিকে বৃষ্টি তো এখন কোনো খবরেই নেই। সে গেছে শীতের ছুটিতে, তবে আমাদের দেশের আর্দ্রতার কি আর কোনো ছুটি আছে? আজকে যদি সবচেয়ে কমে তাহলে বিকালের দিকে হবে ৬০ শতাংশ আর সকাল বেলা একটু বেশির দিকে থাকলে, ৭১ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

এ আর্দ্রতায় আপনার ত্বক তৈলাক্ত হলে ক্রিমের অভাব টেরই পাবেন না। তবে শুষ্ক হলে ময়েশ্চারাইজার তো লাগবেই, সারাদিন ছোট একটা পেট্রোলিয়াম জেলির কৌটাও পকেটে রাখতে পারেন। জানেনই তো শুষ্ক ত্বকে বলিরেখা দ্রুত পরে, আর শুকানোর চোটে যদি ত্বক ফেটে যায় তাহলে ভোগান্তি তো আরও বাড়বে।

এ তো গেল আমাদের শহুরে শীতকে মোকাবেলা গল্প। এখন চলুন একটু গ্রামের শীতের গল্প বলি, উত্তরের জেলাগুলোতে শীত বড় হিংস্র থাবা মারছে। এমনিতে থাবা মারে মারুক কোনো সমস্যা নেই, কিছু দেশে তো শীত গিয়ে মাইনাসের নিচেও ৩০ এ পৌঁছে যায়। কিন্তু আমাদের ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসই অনেক শীত, কারণ আমাদের দেশের মানুষগুলো খুব যে গরীব। তাদের অধিকাংশের কাছেই ভালো পোশাক নেই। শীতের মোকাবেলা তারা করবে কোথা থেকে? তাদের বাড়িগুলোও শীতকে আটকানোর মতো শক্তিশালী নয়। তার উপরে আজকে বাতাস আসবে উত্তর আর উত্তর পশ্চিম দিক থেকে তাও ৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে, গরীব মানুষের পলকা উপকরণে বানানো ঘর কি সেই ঠাণ্ডা আটকাতে পারবে?

শীতের যখন এমন বৈরি আচরণ আমরা কি গরীব মানুষগুলোকে শীতে মরতে দিতে পারি? না কখনও না। আমরা আমাদের যত পুরাতন শীতের কাপড় আছে তা দান করতে পারি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। একদিন একটু কম খেয়ে, কম বেড়িয়ে সেই টাকাটাও দিতে পারি গরীব কোনো মানুষকে কম্বল কেনার জন্য। হয়তো ইতিমধ্যেই অনেকে এই কাজটা করে ফেলেছেন। যারা করেননি তারা মনে করে করে ফেলুন জলদিই।

বিজ্ঞাপন

আজ যখন ৫টা ১৫ মিনিটে সূর্য আকাশ থেকে চলে যাবে, তখন আমাদের এই ভালোবাসার উষ্ণতাই লম্বা শীতের রাতটাকে আরামদায়ক করে তুলবে, চাঁদটাও কৃষ্ণপক্ষে গিয়ে একদম অমাবস্যার প্রান্তে দাঁড়িয়ে সূর্যের সাথে সকাল ৫টা ২৯ এ উঠে বিকাল ৪টা ৪৩ এ ডুবে যাচ্ছে, তবে কম্বলের আরামে শুয়ে কেই বা আর ওকে স্মরণ করবে? মানুষের ভালোবাসার সৌন্দর্য দিয়ে যদি একে অন্যকে জড়িয়ে রাখা যায় তবে, চাঁদ সূর্য না থাকলেই বা কী হয়?

আপনাদের শীতল দিনটি নিরাপদে কাটুক।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন