বিজ্ঞাপন

সবুজ ক্যাম্পাসে পাখির মেলা, মুগ্ধ দর্শনার্থী

March 16, 2018 | 4:16 pm

||সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট||

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে বসেছে পাখির মেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও পাখি মেলায় আসছে নগরীর বাসিন্দারা। শিশু কিশোর আর তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠেছে পাখির সুরে। পাখির সাথে ছবি তুলছে সব বয়সী মানুষ। অপরিচিত পাখি দেখে হৃদয়ে যে সুখানুভূতি খেলে যায়- সে অনুভূতির কথা উঠে আসছে সবার কণ্ঠে। রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ প্রাঙ্গণে এভিয়ান কমিউনিটি আয়োজিত ‘এভিয়ান শৌখিন পোষা পাখি প্রদর্শনী’র চিত্র ছিল এটি।

তবে শুক্রবার সকালে শুরু হওয়া মেলা শেষ হয়ে যাবে আজ রাত ৮টায়ই। আয়োজকরা জানান, এবারের প্রদর্শনীতে ৮০ থেকে ৯০ প্রজাতির প্রায় ১ হাজার জোড়া পাখি রয়েছে। এসব পাখির অধিকাংশই এভিয়ান কমিউনিটির সদস্যদের। আর এখানে থাকা হাতে গোনা দুই একটি বড় পাখি কেবল সংগঠনের।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সকালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ প্রাঙ্গণের খোলা চত্বরে দেখা গেছে, খাঁচায় বন্দি রয়েছে দুটি ময়ূর। আকাশে মেঘের ঘনঘটা, বাতাসে বৃষ্টির গন্ধ, সে আবেশে পেখম মেলতে পারে আশায় খাঁচার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে উৎসুক দর্শকরা।

শুধু শিশুরা নয়, তরুণ-তরুণীদেরও দেখা গেল দলবেঁধে ছবি তুলতে। পাশেই আরেক খাঁচায় রয়েছে বিশাল উটপাখি! সেখানে শিশুদের জটলাই বেশি। তাদের ঠেলে ভালো করে দেখাই গেলো না পাখিটিকে। কেউ কেউ তো ফুলকপি, পাতাকপি নিয়ে রওনা হয়েছে উটপাখিকে খাওয়াবে বলে।

বিজ্ঞাপন

এ তো গেল প্রাঙ্গণের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের ভেতরের চিত্রটি আরও বিচিত্র। খাঁচায় বন্দি বাহারি রঙের পাখিতে মিলনায়তনটি যেন ঝলমল করছে নতুন সৌন্দর্যে। কাকাতুয়া, ফিঞ্জ, ব্লু গোল্ড ম্যাকাও, স্কারলেট , ম্যাকাও, গ্রে প্যারট, ইউং ম্যাকাও, কনুর, লাভ বার্ড ও গোল্ড পিককের মতো অপরিচিত পাখি দেখা গেছে প্রদর্শনীতে।

মনসুরাবাদের বাসিন্দা নাহিদা আক্তার সুমি শিশু সন্তান মাহি ও অহিকে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন। বাচ্চাদের চেয়ে মা সুমিই বেশি উত্তেজিত, বাচ্চাদের ডেকে ডেকে দেখাচ্ছেন, ‘দেখ কতো পাখি! এতো পাখি ওরা নিয়ে এসেছে কোথা থেকে?’

উত্তেজনা যেন ফুরায়ই না তার। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওরা (শিশুরা) খুব এক্সাইটেড! সচরাচর এমন হাসিমুখে দেখা যায় না ওদের।’ মায়ের উত্তেজনা ছড়িয়ে গেছে শিশু মাহির মধ্যেও। সে জানায়, মেলায় এসে সে কেবল নতুন পাখিই দেখছে। এখানে থাকা ময়ূর ও উটপাখি ছাড়া অন্য কোনো পাখির সঙ্গে পরিচিত ছিল না সে। একই অবস্থা ছিল মেলায় আসা অধিকাংশ দর্শনার্থীদেরও।

বিজ্ঞাপন

এভিয়ান কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, পাখি সম্পর্কে মানুষের মধ্য সচেতনতা বৃদ্ধি লক্ষ্যে আমরা এই মেলা আয়োজন করেছি। এখানে ৮০ থেকে ৯০ প্রজাতির প্রায় ১ হাজার জোড়া পাখি রয়েছে। এর সবগুলোই বিদেশি এবং খাঁচায় পোষা যায়। তিনি আরও বলেন, এভিয়ান কমিউনিটির সদস্যরা তাদের পোষা পাখি প্রদর্শনীর জন্য এখানে নিয়ে এসেছে। ঢাকার সদস্য ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম থেকেও পাখি এসেছে।

মোহাম্মদ আলির কাছ থেকে জানা যায় এ পাখিগুলো সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। খাঁচায় পোষা এসব পাখি অনুকূল পরিবেশে বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। পাখি পালন করে অনেকেই মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন।
এখন শিশুদের মনোরঞ্জনের মাধ্যম খুব কম। শিশুরা নিজেদের মতো বড় হচ্ছে। শিশু কিশোররা পাখি পালনের মাধ্যমে একটি ভালো সময় কাটাতে পারে। পাখির যত্ন-আত্তি করার মাধ্যমে তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। এ ছাড়াও প্রাণীদের প্রতি সহমর্মিতা তৈরি হয় যা আদতে প্রাণিজগতকে সমৃদ্ধ করে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন