বিজ্ঞাপন

সাংসারিক টানা পোড়েন, অবশেষে আত্মহত্যা

January 18, 2018 | 6:31 pm

ওমর ফারুক হিরু

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার : কোনো আয় নেই। এদিকে বেড়েই চলছিল সংসারের খরচ। বাচ্চাকে স্কুলে দিলেও স্কুলের খরচ চালাতে খাচ্ছিলেন হিমসিম। বেকার জীবন এবং সংসারের খরচ নিয়ে  হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন সুমন- এ খবর ছিল আত্মীয়দের কাছেও। তবে সেটা যে আত্মহত্যা পর্যন্ত পৌছে যাবে তা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি স্বজনরা, জানান সুমনের বড় ভাই ব্যাংক কর্মকর্তা আমীর চৌধুরী।

গতকাল কক্সবাজার শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকায় এক বাড়ি থেকে দুই কন্যা সন্তান ও স্ত্রীসহ সুমন চৌধুরী (৩৩) নামে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সুমন চৌধুরী  গোলদিঘীর পাড় এলাকার মৃত ননী গোপাল চৌধুরীর ছেলে। তাঁর স্ত্রীর নাম বেবি চৌধুরী (২৬) এবং দুই সন্তান অবন্তিকা চৌধুরী (৫) ও জ্যোতি চৌধুরী (৩)।

প্রাথমিকভাবে আত্মীয় স্বজন ধারণা করছে অভাবের তাড়নাই তাদের এ আত্মহত্যার কারণ।

বিজ্ঞাপন

সুমনের বড় ভাই বলেন, সুমন বেকার অবস্থায় ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন বেবীকে। ভাই বোনেরা মিলে তখন ওদের সংসারের খরচ চালাতেন। কিন্তু সুমন কিছুটা সংকোচবোধ করতেন এবং হতাশার মধ্যে দিন কাটাতেন।

পরে চার ভাই মিলে সুমনকে একটি প্রসাধনীর দোকান কিনে দেয়। সেই দোকানও বেশি দিন চালাতে পারেনি সুমন। লোকসান হওয়ার পর দোকান ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়। দোকানের ভাড়ার সেই ১৫০০ টাকা দিয়েই সংসার চলতো সুমনের।

সম্ভবত আবারও অভাবে পড়ার বিষয়টি নিয়ে ভাইদের সঙ্গে আলাপ করতে সংকোচ বোধ হচ্ছিল। তাই বলে এমন ঘটনা ঘটবে তা কোনভাবে মেনে নিতে পারছি না, বলেন আমীর।

বিজ্ঞাপন

নিহত সুমনের ভাবী প্রার্থনা চৌধুরী জানান, সুমনের সাথে কারও বিরোধ ছিল না। এমনকি সে পরিবারের কারও সঙ্গে ঝগড়া পর্যন্ত করত না। তবে দীর্ঘদিন ধরে অভাবের কারণে  হতাশায় ভুগছিল। তা এই পর্যায়ে যাবে তা আমরা কেউই বুঝতে পারছি না।

এ দিকে লাশের প্রাথমিক বর্ণনায় কক্সবাজার সদর থানার ওসি রনঞ্জিত কুমার বড়ুয়া জানান, ঘরের দরজা ভেঙ্গে দুই শিশুসহ স্বামী-স্ত্রীর যে লাশ উদ্ধার করা হয়, তাদের মধ্যে স্বামী সুমনকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। আর তার স্ত্রীর গলায় ছাপ দেখা যায়।

আর শিশুদের গলায় কোনো চিহ্ন না থাকলেও তাদের জিহ্বা বের হওয়া অবস্থায় দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সুমন তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পরে নিজেই আত্মহত্যা করেছে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এটি আত্মহত্যা। স্বামী তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পরে নিজেই আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের পর ঘটনার কারণ জানা যাবে।

বিজ্ঞাপন

মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আপাত অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-
সংসারে অভাব, স্ত্রী-দুুই মেয়েকে হত্যার পর আত্মহত্যা

সারাবাংলা/আরসি/এমএ

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন