দিনে দিনে নান্দনিক বইমেলা
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:০৬
স্পেশাল করেসপনডেন্ট
৪৬ বছরে পা দিয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। মুক্তধারার চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরে ১৯৭২ সালে বর্ধমান হাউজের বটতলায় চট বিছিয়ে যে মেলার শুরু সেই মেলা এখন অনেকটাই পরিণত। ৪৫ বছর পার করে এসে এ বছর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রায় ৫ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে। ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭১৯ টি স্টল। এছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি বড় প্রকাশনা সংস্থাকে দেয়া হয়েছে ২৪টি প্যাভেলিয়ন। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ছাড়িয়ে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাও পুরোনো হতে চলেছে। যার সূচনা ২০১৪ সালে।
নতুন যাত্রার ৫ বছরে এসে বইমেলা ঘিরে একটা ঝাঁ চকচকে ভাব চোখে পড়ছে। প্রতি বছর ছোটখাটো কিছু বিচ্যুতি যদিও থাকে, তবে পরবর্তী বছরে সেসব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও থাকে সমানতালে। সে চেষ্টা থেকেই বছর বছর বেড়েছে বইমেলার আয়তন। বেড়েছে স্টল আর প্যাভেলিয়নের সংখ্যা। যুক্ত হয়েছে কিছু নতুন নতুন বিষয়। এ বছর যেমন বইমেলার সময়সীমা রাত আটটা থেকে বাড়িয়ে ৯টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেলো কয়েক বছর ধরে কিছুটা আপেক্ষও যেন ছিল অনেকের মনে। বইমেলার আয়তন বাড়ছে ঠিকই, বাড়ছে স্টল আর প্যাভেলিয়নও। কিন্তু বইমেলার মতো সৃজনশীল একটি মেলার যতটা নান্দনিক হওয়া উচিত, তা কি হচ্ছে? সেই ঘাটতিটা থেকেই যাচ্ছিল।
২০১৮ তে এসে নান্দকিতার দিকে অন্তত প্রকাশকরা দৃষ্টি দিয়েছেন। এবারের বইমেলার বেশ কিছু প্যাভেলিয়ন আর স্টল সজ্জায় নান্দনিকতার ছোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন মেলায় আগত ক্রেতা-পাঠক-দর্শনার্থীরা। মেলায় ঢুকতেই হাতের ডানে কথাপ্রকাশের প্যাভেলিয়ন। এবারের মেলায় কথাপ্রকাশের প্যাভেলিয়ন নজর কাড়ছে সবার। নান্দনিকতার পরিপূর্ণ ছোঁয়া দিতে কথাপ্রকাশ তাদের প্যাভেলিয়ন ডিজাইন করিয়েছে শিল্পী সব্যসাচী হাজরাকে দিয়ে।
পাঞ্জেরী প্রকাশনের সুবিশাল প্যাভেলিয়নও চোখ এড়াচ্ছে না কারোর। উচ্চতায় অনেক বড় আকারের হলেও পাঞ্জেরীর প্যাভেলিয়নেও শৈল্পিক ছোঁয়ার দেখা মেলে। পাঞ্জেরীর প্যাভেলিয়ন ডিজাইন করেছেন শিল্পী রাজিব রায়।
স্টল কিংবা প্যাভেলিয়ন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই বৈচিত্র্যকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে অন্যপ্রকাশ। এবছরও তার ব্যত্যয় হয়নি। এ বছর অন্যপ্রকাশ তাদের প্যাভেলিয়ন ডিজাইন করেছে কার্জন হলের আদলে। ডিজাইন করেছেন শিল্পী মাসুম রহমান।
অন্যপ্রকাশের পাশেই জার্নিম্যানের প্যাভেলিয়ন। জর্নিম্যানের প্যাভেলিয়নে নতুনত্বের ছোঁয়া আছে। একই সাথে আছে নান্দনিকতাও।
মেলায় দৃষ্টি কাড়ছে নালন্দা আর তাম্রলিপির প্যাভেলিয়ন। এসব প্রতিষ্ঠানের প্যাভেলিয়নে বেশ রঙের ছোঁয়া আছে।
এছাড়া সময় প্রকাশন, ঐতিহ্য, অবসর, অনিন্দ্য প্রকাশনও দৃষ্টিনন্দন প্যাভেলিয়ন তৈরি করেছে।
সাদার ওপরে ছিমছাম উৎস প্রকাশনের প্যাভেলিয়নও চোখে পড়ার মতো। উৎস প্রকাশনের প্যাভেলিয়নের ডিজাইন করেছেন শিল্পী অরুপ বাউল।
সবশেষে বলতে হয় মাওলা ব্রাদার্স আর পাঠক সমাবেশের কথা। প্যাভেলিয়ন তৈরিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে তারা।
ছবি : আশীষ সেনগুপ্ত
সারাবাংলা/পিএম