বিজ্ঞাপন

সুযোগের অপেক্ষায় জাতীয় পার্টি

February 19, 2018 | 8:13 am

মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে জাতীয় পার্টি। একইসঙ্গে সরকারের শরিক এবং সংসদের বিরোধী দল হিসেবে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে থাকা এ দলটি এখন চাইছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তাতে যে কোনো উপায়ে বড় ধরণের সাফল্য ঘরে তুলতে। সেক্ষেত্রে দুটি বিকল্পকে সামনে রেখে পরিকল্পনা আঁটছেন দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে নির্বাচন আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে না এলে নিজেরা জোট করে তিনশ আসনে প্রার্থী দিয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে দেশের রাজনীতিতে পুরনো প্রভাব ফিরিয়ে আনতে চায় তারা।

দলটির নেতারা বলছেন, দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে জাতীয় পাটির ইউ-টার্ণ হয়েছে। রংপুর সিটি নির্বাচনে বিপুল ভোটে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে পেরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বসহ তৃণমূলেও। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বেশ মাথা ঘামাচ্ছেন তারা। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর এ ভাবনায় নতুন মেরুকরণ যোগ হয়েছে।

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড নিয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, তাকে জেলে রেখে নির্বাচনে যাবেনা বিএনপি। বিএনপির এ অবস্থান যদি সত্যি সত্যি ঠিক থাকে তবে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে। সেক্ষেত্রে সম্মিলিত জাতীয় জোট হিসেবে ইতোপূর্বে গঠিত জোট নিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চায় তারা।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্র জানায়, এভাবে নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে দলটি দেশের রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। সেইসঙ্গে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ হিসেবে এতোদিন যে অপবাদ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তা থেকেও পরিত্রাণ মিলবে। তাই এখন থেকেই জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। এমন কী আগামী ২৪ মার্চ রাজধানীতে মহাসমাবেশসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকটি সমাবেশ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জোট শরিকরা বলছেন, দুটি বিকল্পকে সামনে রেখেই দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে তাদের। তারা ইতোমধ্যে তাদের নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে দুই ফরমেটেই নির্বাচনী আসন চেয়েছেন। যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তবে এ জোটের শরিকদের জন্য সেটি প্লাস পয়েন্ট হবে বলে মনে করছেন জোটসঙ্গী বিভিন্ন দলের নেতারা। নাম গোপণ রেখে এমন দুজন নেতা সারাবাংলাকে জানান, একক দল হিসেবে দেশের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান তেমন না হলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট বাঁধায় তারা স্বপ্ন দেখছেন। বিএনপি নির্বাচনে না এলে এদেশের বিপুল সংখ্যক আওয়ামী বিরোধী জনগোষ্ঠী তাদের প্রার্থীদের ভোট দিবেন। সেক্ষেত্রে ক্ষমতার স্বাদ পাবেন তারা।

আর যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে সেক্ষেত্রে হয় সরকারের সঙ্গে মিলে জোট করবে জাতীয় পার্টি। না হয় সম্মিলিত জাতীয় জোটের ব্যানারেই নির্বাচনে অংশ নিবে তারা। সেক্ষেত্রেও সরকার গঠনের সম্ভাবনা দেখছেন জোট শরীকরা। তাদের ভাষ্য- তৃতীয় জোট হিসেবে এ জোট নির্বাচনে গেলে অন্তত ১শটি আসন পাবে তারা। আর বিএনপির যে জনপ্রিয়তা তাতে তারাও ৭০ থেকে ৯০টি আসন পাবে। দু’একটি স্বতন্ত্র বাদে বাকিগুলো সরকারী দল আওয়ামী লীগ পেলেও তারা সরকার গঠন করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি বিএনপির সঙ্গে গিয়ে সরকার গঠন করতেও পারে।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব সমীকরণের কোনোটিই উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলটির শীর্ষ নেতারা। কৌশলগত কারণে যে কোনো মুহূর্তে যা কারো সঙ্গেই জোট কিংবা সমঝোতা হতে পারে বলে জানান দলটির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জোটগতভাবে নির্বাচন করবে এখন পর্যন্ত এটাই সিদ্ধান্ত। তবে রাজনীতিতে শেষ বলে যেহেতু কিছু নেই তাই ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টি কিংবা সম্মিলিত জাতীয় জোট কোনপথে যাবে তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা। পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

সারাবাংলা/এমএস/টিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন