বিজ্ঞাপন

সেনা মোতায়েন পেছানোর সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: হাফিজ উদ্দিন

December 13, 2018 | 4:11 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নির্বাচনের আগে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত পেছানোর ঘটনাকে দুঃখজনক হিসেবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে ১৫ তারিখ থেকে এটাই আমরা জানতাম, পত্রিকায়ও তাই এসেছে। এখন ১০দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে— কারণ কী? কারণ হলো- বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে সাইজ করো, এলাকায় আতঙ্ক ছড়াও— যাতে করে তারা এলাকা ত্যাগ করে।’

তিনি বলেন, ‘বহু নেতকর্মী আগাম জামিন চাইতে এসে ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে গত এক-দেড় মাস ধরে। অনেক নেতাকর্মী প্রাণভয়ে একবছর ধরে এলাকায় যেতে পারে না। যেখানে নেতাকর্মী থেকে শুরু করে নির্বাচনের প্রার্থীদের ওপর এত অত্যাচার নির্যাতন, সেখানে সেনা মোতায়েন ১০দিন পিছিয়ে দেওয়ার মাজেজা কী?’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। যেখানে সাধারণ মানুষের প্রতিটি অধিকার প্রতিদিনই পদদলিত হচ্ছে’— বলেন মেজর হাফিজ। তিনি বলেন, ‘আমি ভোলা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। অতীতে ছয়বার এই এলাকা থেকে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছে। ১৯৯১ এর নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবেও নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠিয়েছে। কিন্তু গত ছয় বছর এলাকায় যেতে পারিনি। পত্রিকায় নানা কথা লেখা হয়। কেন যেতে পারিনি, আজ যে কথা বলব— সেটা শুনলে আপনারা বুঝতে পারবেন।’

হাফিজ বলেন, ‘আমার সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এলাকার মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত এক ব্যক্তি । তিনি ইব্রাহিম মার্ডার, মালিবাগ মার্ডারে অভিযুক্ত আসামি। যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তাই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয় না, হবেও না। আমার নির্বাচনি এলাকার ৪০০ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। গত ১৫দিন ধরে হাইকোর্টে চক্কর খাচ্ছি। কখনও ৫০, কখনও ২০—এইভাবে আগাম জামিন মঞ্জুর হয়। অবশেষে গতকাল আমার নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’

‘আমাদের লঞ্চে করে যেতে হয়। চার লঞ্চে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার সফর সঙ্গিরা লঞ্চে উঠে গিয়েছেন। আমি বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছি ৮টায় লঞ্চ ছাড়বে। ৬টা২০ মিনিটে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ লঞ্চ টার্মিনাল দখল করে নেয়। লঞ্চে প্রবেশ করে আমার প্রায় ৫০জন কর্মীকে মারাত্মকভাবে আহত করে। তারা এই এলাকাতেই আশাপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে—বলেন হাফিজ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘টার্মিনালের প্রবেশে পথে তারা ২০০ জন মাস্তান, কারও হাতে অস্ত্র, কারও হাতে হকিস্টিক, কারো হাতে পিস্তল— এগুলো নিয়ে তারা গোটা টার্মিনাল ঘিরে রেখেছে, যাতে আমি লঞ্চে উঠতে না পারি। শ্লোগান দিচ্ছে। যে শ্লোগান প্রতিদিনই আপনার শুনতে পারেন। আমার বিরুদ্ধে শ্লোগান হচ্ছে। টার্মিনালটি সম্পূর্ণ জনশূণ্য হয়ে পড়ে তাদের অত্যাচারে। যাত্রীরা দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। এর পর সারেংকে তারা বাধ্য করে লঞ্চটিকে নদীর মধ্যে নিয়ে যেতে। এ কারণে আমি লঞ্চে উঠতে পারিনি, আমার নির্বাচনি এলাকায় যেতে পারিনি।’

‘আমাকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আমার এলাকায় ৪০হাজার লোক সমবেত হয়েছিল। তারা জানতে পেরেছে আমি লঞ্চে উঠতে পারিনি, তারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেছে। এই হলো বাংলাদেশের একাদশজাতীয় সংসদ নির্বাচনে চিত্র। এখানে একজন প্রার্থী হয়ে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না। আমি একজন সিনিয়র সিটিজেন, ৭৪ বছর বয়স। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে, গণতান্ত্রিক দলের কর্মী হিসেবে কোনো সম্মান আমি পাচ্ছি না’— বলেন হাফিজ।

তিনি বলেন, ‘চিঠি দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছিলাম নিরাপত্তা প্রদানের জন্য। তাদের তরফ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। আমার নির্বাচনি এলাকায় এই মুহূর্তে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার ৪০০ সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। প্রকাশ্যে তারা মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতে তাদের অস্ত্র। বিএনপি সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছে।’

সারাবাংলা/এজেড/এমও

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন