বিজ্ঞাপন

সোহরাওয়ার্দীতে ‘স্বাভাবিক’ কার্যক্রম শুরু, ফিরছেন রোগীরা

February 15, 2019 | 10:31 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শতভাগ না হলেও স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আগুন লাগার পর রাত ১০টার পরপরই চালু করা হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। পরে শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বাকি বিভাগগুলোর কার্যক্রমও চালু করা হয়েছে। সচল হয়েছে আইসিইউ বিভাগও। এরই মধ্যে এই হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা রোগীরাও ফিরতে শুরু করেছেন।

শুক্রবার সকালে হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকেই হাসপাতালের কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। হাসপাতালের কার্যক্রম শতভাগ শুরু না হলেও যে বড় ধরনের আগুন লেগেছিল, তা বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান কার্যক্রমকে স্বাভাবিকই মনে করছেন চিকিৎসকরা।

অ্যাম্বুলেন্সে করে ফিরছেন রোগীরা

তারা বলছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফসহ সবাই পুরোদমে কাজ শুরু করেন। সবার প্রচেষ্টায় রাতেই শুরু করা যায় জরুরি বিভাগ। এর মধ্যে রাতে বৈদ্যুতিক সংযোগ ফিরে এলে ধীরে ধীরে অন্য বিভাগ ও ওয়ার্ডগুলোকেও সচল করা হতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা রোগীদের পাশের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিভিডি) স্থানান্তর করা হয়েছিল। তাদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আইসিইউতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। হাসপাতালের প্রায় ১১শ রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, মিটফোর্ড, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে যাদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর, তাদের শুক্রবার সকাল থেকেই নিয়ে আসা হচ্ছে। বাকিরা ধীরে ধীরে ফিরবেন এই হাসপাতালে।

শুক্রবার সকাল নাগাদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের প্রায় সব বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক সারাবাংলাকে বলেন, আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। আগুনে হাসপাতালটির ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে সবার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তবে তা শতভাগ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে আগুনের ফলে কার্যক্রম যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে বর্তমান পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকই বলা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, তৃতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় ও নিচ তলায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালে চলছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম

আগুনে হাসপাতালটির ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের মহাপিরচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহমেদ জানান, ওষুধ, রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থ থাকায় সহজেই আগুন এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আগুনে কাঁচ ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে।

হাসপাতালে আগুন লাগার পর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিব। রাতেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল কালাম আজাদ এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, হাসপাতালের প্রায় ১১শ রোগীকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আগুন লাগার পরপরই আশপাশে থাকা সরকারি-বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে ডাকা হয় সাহায্যের জন্য। কোনো আর্থিক সহায়তা না দিতে পারলেও তারা স্বেচ্ছায় এসে মানবতার সেবাতে কাজ করেছেন। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানান তিনি।

ফিরছেন রোগীরা

এদিকে, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে, হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার উত্তম কুমারকে প্রধান করে সাত সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ছবি: সুমিত আহমেদ

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি

আগুন নিয়ন্ত্রণে, রাতেই চালু হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল

স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত, ধারণা ফায়ার সার্ভিসের

‘এক হাজার রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে’

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুন, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনেরা

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ১৪ ইউনিট

সোহরাওয়ার্দীতে আগুন, ঢামেকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী স্থানান্তর

সারাবাংলা/জেএ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন