বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য ও পরিবহনখাত খাত জেন্ডার সংবেদনশীল নয়

March 28, 2018 | 9:56 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : স্বাস্থ্য ও পরিবহনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জনসেবা খাতগুলো জেন্ডার সংবেদনশীল না। অ্যাকশন এইডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রমাগত নগরায়নের ফলে শহরে জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ দিন দিন বাড়ছে। নগরে নারীরা সরকারি জনসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে একদিকে যেমন যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে নিরাপদ জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ কমছে।

জনসেবা খাতে সরকারের বাজেট, উদ্যোগ, বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা পর্যালোচনা করে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে একশনএইড বাংলাদেশ। বুধবার (২৮ মার্চ)  ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত ‘জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি’ বিষয়ক দু’দিন ব্যাপি একটি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশের জনসেবা খাতের পরিস্থিতি তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপক নুজহাত জাবিন। সেখানে বলা হয়, সরকারি জনসেবাসমূহ, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও নগরসেবায় বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৪.৭১ শতাংশ। যেখানে  ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল ৬.০২ শতাংশ। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দক্ষ ও পেশাজীবী সেবাদাতার অভাব। শিক্ষাক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ১৪.৩৯ শতাংশ। যেখানে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ছিল ১৪.৩০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “সরকার নির্বাচিত হয় মানুষের সেবার জন্য। কিন্তু সেবা দেওয়ার জন্য যেই পরিকল্পনা করা হয় তা আসলে সবার কথা চিন্তা করে করা হয় না। ১০ বছর আগের বাজেটে জনসেবা খাতে যে হারে বরাদ্দ ছিল বর্তমানে যে ঠিক সেই হারে বরাদ্দ দিতে হবে, তা ভাবা ঠিক না। বাস্তব চিত্র হলো, প্রয়োজন অনুসারে জনসেবা খাতে বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন হয় না।”

বাংলাদেশ আরবান ফোরামের উপদেষ্টা মোস্তফা কাইয়ূম বলেন, “আমাদের দেশের উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া মানুষের অবদানই বেশি। কিন্তু এই জনগোষ্ঠী উন্নয়ন পরিকল্পনা কিংবা বাস্তবায়নে জায়গা পায় না।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাহ্ বলেন, “আমাদের দেশের নারীরা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে নিগৃহীত। জনসেবা খাতে নারীর পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ, নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নই মৌলিক বিষয়। আর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ না বাড়লে নারী বঞ্চিত হবেই। কোনোভাবেই তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না এমনকি নির্যাতন বন্ধও করা যাবে না।”

বিজ্ঞাপন

আলোচকরা বলেন, জাতীয় পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ সেবার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। তাই জাতীয় পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের উপর জোর দেন তারা।

কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়া চৌধুরি বলেন, “আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, দেশের উন্নয়ন হলেও  তৃণমূল জনগণ মানসম্পন্ন সেবা পায় না। কারণ তারা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জনবান্ধব নয়।

বাংলাদেশে যারা সেবা দেন তাদের মানসিকতায় সমস্যা আছে রয়েছে জানিয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের পরিচালক আতাউর রহমান বলেন, যারা সেবা দেন তারা অনেক সময় নিজেদের প্রভু ভেবে আচরণ করেন। এক্ষেত্রে সেবাদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়।

জনসেবা খাতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয় বাড়াতে “জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি” নামের দু’দিন ব্যাপি এই সম্মেলন চলছে। একশনএইড বাংলাদেশ, ক্রিশ্চিয়ানএইড  বাংলাদেশ, কেয়ার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আরবান ফোরাম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এই সম্মেলনের আয়োজক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএ/টিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন