বিজ্ঞাপন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ১০ অক্টোবর

September 18, 2018 | 1:58 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি এই মামলায় জামিনে থাকা আট আসামিকে কারাগারে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয় সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর)। আর মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আইনগত বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান।

এরপরই এই মামলায় রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে আদালত।

আদালতে শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান জানান, এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আসামিপক্ষ ৯০ দিন ও রাষ্ট্রপক্ষ ৩০ দিন সময় নিয়েছে। মোট ১২০ দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে এই মামলায়।

আসামি পক্ষে আজ যুক্তি উপস্থাপন করেন এস এম শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘এই মামলার কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই। এ মামলা ভিত্তিহীনভাবে সাজানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ মামলায় কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিদের জন্য আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

পরে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন সব আসামির পক্ষে সংক্ষিপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

যুক্তি উপস্থাপন শেষে পিপি রেজাউর রহমান বলেন, গ্রেনেড হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী (ওই সময় বিরোধী দলীয় নেতা) শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। তাকে হত্যা করা সম্ভব না হলেও আইভি রহমানসহ ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই মামলায় কাউকে রাজনৈতিকভাবে জড়ানো হয়নি বা আটক করা হয়নি। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই মামলার রায় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

পরে এই মামলায় আট জন আসামির জামিনে থাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, আসামিরা জামিনে থাকলে ফের নাশকতা করতে পারে কিংবা তারা পালিয়ে যেতে পারে। সে জন্য আমরা আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন জানাই।

আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদনের বিপক্ষে শুনানি করেন কয়েকজন আইনজীবী। তারা বলেন, জামিনে থাকা আসামিরা নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তাদের জামিন রায় পর্যন্ত বহাল রাখা হলেও তারা পালিয়ে যাবেন না। তাছাড়া তাদের অনেকের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র আদালতে জমা দেওয়া আছে। তাই আদালতের কাছে রায় ও আদেশ পর্যন্ত তাদের জামিন বহালের আবেদন জানাই।

বিজ্ঞাপন

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ শুনানির পর আমরা এই মামলার শেষ পর্যায়ে এসেছি। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাই। এসময় তিনি আইনের ব্যাখ্যা সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান।

বিচারক আরও বলেন, আদালত প্রাঙ্গণের প্রতিটি ফ্যান-লাইটের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ চেনাজানা তৈরি হয়েছে। আসামিদের সঙ্গেও তাদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তারপরও মামলাটি শেষ পর্যায়ে এসেছে। এবার রায়ের দিন ঠিক করতে হবে।

এরপর বিচারক আগামী ১০ অক্টোবর এই মামলার রায়ের দিন ঠিক করে দেন। একইসঙ্গে এই মামলার আট আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী (পিপি) সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। মঙ্গলবার মামলার কার্যক্রম শেষ হলে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করে দিতে পারেন আদালত।’ রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামির অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।

মামলার অভিযোগপত্রের ৫১১ সাক্ষির মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ২২৫ জনকে আদালতে উপস্থাপন করেছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর পল্টনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলাকালে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২২ জন মারা যান।

গ্রেনেড হামলায় তৎকালীর বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

আরো পড়ুন : ২১ আগস্ট মামলায় আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন রাষ্ট্রপক্ষের

সারাবাংলা/এআই/এসএমএন/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন