কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনার উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে টানা ১১ রাত ধরে কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।
রোববার (৪ মে) রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
গতকাল রাতের ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যম পাকিস্তানকে দোষারোপ করলেও এখনো পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
সবশেষ ৪ ও ৫ মে দিবাগত রাতে কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর সেক্টরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়।
এছাড়া চলমান এই সংঘর্ষের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের একজন করে সেনাকে আটক করেছে। ভারতের বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার সাহু গত ২৩ এপ্রিল সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করলে তাকে পাকিস্তান রেঞ্জার্স আটক করে। এর পাল্টা হিসেবে ৩ মে রাজস্থানে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে বিএসএফ।
পেহেলগাম হামলার পরদিনই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতির ঘোষণা। ভারতের দাবি, হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সংযোগ আছে।
জবাবে পাকিস্তান ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে। এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্যও বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান গত শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তবে ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে ‘খোলামেলা উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে, শনিবার (৩ মে) সামরিক শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরদিন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি। তবে এই অভিযোগ নাকচ করেছে পাকিস্তান।