Thursday 05 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাকে অজ্ঞান করে সন্তান চুরি, দেড় লাখ টাকায় বিক্রির পর উদ্ধার


২২ নভেম্বর ২০১৯ ২১:২০ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ২১:৫৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা শিশুচোর সিন্ডিকেটের চুরি করা আরও এক শিশু উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানা পুলিশ। আটমাস আগে ভিক্ষুক মাকে অজ্ঞান করে শিশুটিকে চুরি করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল এই চোরচক্র। একই সিন্ডিকেটের চুরি করা একটি শিশু সম্প্রতি উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার বখতপুর গ্রামে এক দম্পতির হেফাজত থেকে এক বছর দুই মাস বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই দম্পতি দেড় লাখ টাকায় শিশুটিকে কিনেছিলেন বলে জানিয়েছেন ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা।

বিজ্ঞাপন

শিশুটিকে চুরি ও বিক্রির ঘটনায় কোতোয়ালী ও ইপিজেড থানার যৌথ অভিযানে এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন- মো. ইকবাল হোসেন (২৮), মো.আফসার প্রকাশ জাফর সাদেক (৩৫) এবং সালেহা বেগম (৩৫)।

ওসি নুরুল হুদা সারাবাংলাকে জানান, শিশুটির মা শিরীন বেগম নগরীর ইপিজেড থানার নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ গেইটের পাশে ভিক্ষা করেন। চলতি বছরের ১১ মার্চ দুপুরের দিকে ইকবাল ওই ভিক্ষুকের কাছে গিয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে তাকে জুস খাওয়ান। এরপর শিরীন অজ্ঞান হয়ে পড়লে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আফসার এগিয়ে যান। তখন স্থানীয় আরও ৫-৭ জন লোক সেখানে জড়ো হন। ইকবাল ও আফসার মহিলা তাদের পূর্বপরিচিত জানিয়ে সেখান থেকে তাকে নিয়ে নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন।

‘মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার কোলের ছয় মাসের শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায় ইকবাল ও আফসার। পরে নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার একটি বেসরকারী ক্লিনিকের আয়া সালেহা বেগমের মাধ্যমে ফটিকছড়ির দম্পতির কাছে দেড় লাখ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করেন। মহিলা সুস্থ হয়ে ইপিজেড থানায় এসে তার শিশুকে অপহরণের মামলা করেন।’

ওসি জানান, মামলা দায়েরের পর ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ইকবালকে শনাক্ত করা হয়। আগস্ট মাসে ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়। ইপিজেড ও কোতোয়ালী থানায় দুটি মামলায় রিমান্ডে নিয়ে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর ইকবাল দুটি চুরির কথা স্বীকার করে এবং আফসারসহ সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিষয়ে তথ্য দেয়। এরপর গত ২ নভেম্বর কোতোয়ালী থানা পুলিশ কক্সবাজারের কলাতলী থেকে আফসারকে গ্রেফতার করে।

‘আফসারকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কোতোয়ালী থানা পুলিশ এক শিশুকে উদ্ধার করে। শিশুটিকে একই প্রক্রিয়ায় নগরীর কাজীর দেউড়ি থেকে গত ২৭ মে চুরি করে লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। এরপর আফসারকে রিমান্ডে নিয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের একযর্পায়ে আফসার সালেহার তথ্য দেয়। আমরা পাঁচলাইশ থানার শুলকবহর এলাকা থেকে সালেহাকে গ্রেফতার করি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শিশুটিকে উদ্ধার করি।’

ওসি নুরুল হুদা জানান, ভিক্ষুক শিরীন থানায় গিয়ে তার সন্তানকে শনাক্ত করেছেন। শনিবার আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে কোতোয়ালী থানায় চুরি করা শিশু উদ্ধারের পর ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালের আয়া-নার্স, হাসপাতালের আশপাশে থাকা দালাল এবং বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারীরা মিলে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তারা হতদরিদ্র মানুষের বিশেষ করে নারীদের কাছ থেকে বাচ্চা চুরি করে চুক্তির মাধ্যমে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে। চুক্তির সময় বাচ্চাটির মা-বাবা মারা গেছে বলে জানায় অথবা তাদের নিকটাত্মীয়ের বাচ্চা হিসেবে পরিচয় দেয়। এতে দম্পতিরা সেই বাচ্চা কিনে লালনপালনে উৎসাহিত হন।’

টপ নিউজ শিশু চুরি শিশু বিক্রি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর