ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে একসঙ্গে তিন ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও সৌদি আরব প্রবাসী ওমর ফারুক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদের কোনো সত্যতা নেই বলে দাবি করেছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। একসঙ্গে তিন ডোজ নেওয়ার বিষয়টিকে ভিত্তিহীন ও অপপ্রচার বলছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকেও ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত এই সংবাদকে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
বুধবার (২৮ জুলাই) বিএসএমএমইউ’র জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত মজুমদারের মেইল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে দেওয়া এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— গত ২৬ জুলাই একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা ভাইরাসের টিকাদান কেন্দ্রে ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে সামান্য সময়ের ব্যবধানে তিন ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া সম্পর্কিত যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে সে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হয়েছে। প্রচারিত এই সংবাদটি মিথ্যা। এই ধরনের সংবাদ প্রচারের আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে আরও সচেতন এবং সহযোগী মনোভাবাপন্ন হওয়া উচিত ছিল। এই ধরনের সংবাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাদান কেন্দ্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
এতে স্বাভাবিকভাবেই করোনা মহামারির এ সময়ে দায়িত্বপালনরত চিকিৎসক, নার্স, সেচ্ছাসেবকসহ সংশ্লিষ্টদের কর্মস্পৃহা এবং মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়— সংশ্লিষ্ট সংবাদটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ওইদিনের ভ্যাকসিনের সকল তথ্য পুনরায় যাচাই বাছাই করা হয়েছে। ভ্যাকসিনের সংখ্যা ও ভ্যাকসিন গ্রহীতার সংখ্যা মিলিয়ে সকল তথ্য নির্ভুল পাওয়া গেছে। তাই এই ধরণের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নেই। তাই প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে প্রতীয়মান হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কোভিড-১৯ মোকাবিলার অংশ হিসেবে পরিচালিত কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি বাস্তবায়নে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদান কার্যক্রমে দেশের মধ্যে সবচাইতে বেশি সুনাম অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে বলছে, সুদক্ষ কর্মকর্তার অধীনে সুনির্দিষ্ট পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রশিক্ষিত নার্স ও নিবেদিত প্রাণ রেডক্রিসেন্টের সেচ্ছাসেবক বাহিনী মাধ্যমে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্রে একই ব্যক্তির সামান্য সময়ের ব্যবধানে তিন ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণের কোনো সুযোগ নাই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মোকাবিলায় সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ পরীক্ষা, ফিভার ক্লিনিকে রোগীদের সেবা দান, কেবিন ব্লকের করোনা সেন্টারে রোগীদের সেবা দান, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে সুনাম অর্জন করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হতে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের বিষয়টি সাংবাদিক মহলেও স্বীকৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— গণমাধ্যমের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত সুসম্পর্ক বিদ্যমান। সাংবাদিকদের সঙ্গেও সুস্পর্ক রয়েছে। ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক নার্সসহ গণমাধ্যম কর্মীরাও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের আগে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক সচেতন হবেন এটাই কাম্য।
একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমসহ সাংবাদিক মহলের সহযোগিতা কামনা করছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।