বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপ ২০১৮: বাজিমাত করবেন যে ৫ গোলরক্ষক

June 11, 2018 | 2:45 pm

সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ফুটবলে গোলরক্ষক হয়ে খেলা হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। বিশ্বাস না হলে লিভারপুলের গোলরক্ষক লরিস কারিউসকে জিজ্ঞেস করুন। এইতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তিনিই তো খলনায়ক বনে গেছেন, সবচেয়ে বেশি নিন্দিত হয়েছেন। সামান্য দুটি ভুল করেছেন, কিন্তু লিভারপুলের জন্য তার ফল হয়েছে ভয়ঙ্কর। আর লরিসকে তো হত্যারই হুমকি দেওয়া হয়েছে।

গোলরক্ষকের কাজটা এমনই। কোনো ভুল করা যাবে না। একটা ভুল হলেই এর মাশুল হবে চরম। আবার নির্ভুল খেলে দলকে জয় এনে দিলেও সুনাম পাওয়া যায় কই ? তিনি তো আর মাঠে কারিকুরি দেখিয়ে দর্শক মন জয় করেননি! দৃষ্টিসুখকর অসধারন ড্রিবলিং বা বাইসাইকেল কিক করে গোল করেননি! তাই তাকে কে মনে রাখে? গোলরক্ষকের কাজটাই একটি থ্যাঙ্কসলেস জব। আবার এই গোলরক্ষকরাই মাঠে নিজ দলের বাকি ১০ জন থেকে অনেকটাই আলাদা। খেলার সময় অনেক সময়ই ১০ জন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। ট্রেনিংও হয় আলাদা।

সব মিলিয়ে গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন বড় বিষন্নতায় ভরা। তবে তিনি একটি দলের অভিভাবকের মতো। সবাই ম্যাচে যেমনই খেলুক, তিনি সদা প্রস্তুত। তিনি আগলে রাখেন দলের সম্মান। জাতীয় দল হলে তো কথাই নেই। জাতির সম্মান নির্ভর করে তার গ্লাভস জোড়ায়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবারই বিশ্বকাপে নতুন ও পুরাতনদের মধ্য থেকে কয়েকজন গোলরক্ষক দর্শকমনে ছাপ রেখেছেন। তাদের জন্য আলাদা একটি পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে বিশ্বকাপে, গোল্ডেন গ্লাভস। এবারের বিশ্বকাপে রাশিয়ায় দর্শকদের আনন্দ দেবেন এমন কয়েকজন গোলরক্ষক যাদের নিয়ে এবারের আয়োজন।

১: আলিসন বেকার (ব্রাজিল)
ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। খেলেন ইতালিয়ান লিগ সিরি আ’র ঐতিহ্যবাহী দল রোমায়। গত মৌসুমে রোমার গোলবারের নিচে অসাধারণ এক মৌসুম কাটিয়েছেন। রোমার অন্যতম প্রভাবশালী একজন খেলোয়াড়ে পরিণত করেছেন নিজেকে। রোমার হয়ে ৩৪ ম্যাচে ১৫ ক্লিনশিটই বলে দেয় রোমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তিনি। গোলবারের নিচে অসাধারণ রিফ্লেক্স ও ম্যাচের পরিস্থিতি পড়ার ক্ষমতা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এক গোলকিপারে পরিণত করেছে। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ইউরোপের বাঘা বাঘা ক্লাব তাকে দলে টানতে উঠে-পড়ে লেগেছে। লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদ আলিসনকে পেতে মরিয়া। ৭০ মিলিয়ন ইউরোর নিচে যে কোনো দলই তাকে পাবে না এটা ইতোমধ্যে স্পষ্ট। বিশ্বকাপে চোখ রাখুন আলিসনের উপর। ব্রাজিলের গোলবার সামলাবেন তিনি। অবশ্য দলে ম্যানচেস্টার সিটির আরেক তরুণ তুর্কি এডারসনের সাথে লড়তে হবে তাকে। এডারসনের ফরমও তুঙ্গে। তবে ২৫ বছর বয়েসী আলিসনের উপরই তিতের ভরসা বেশি।

২: ম্যানুয়েল ন্যুয়ের (জার্মানি)
সবচেয়ে বড় সমালোচকও একবাক্যে মানবেন বিশ্বের সেরা গোলরক্ষকদের একজন ম্যানুয়েল ন্যুয়ের। তবে ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষকের গত মৌসুম খুবই বাজে কেটেছে। গত সেপ্টেম্বরে পা ভেঙে যাওয়ার পর পুরোপুরি ফিট তিনি। বিশ্বকাপে গোলবারের নিচে গ্লাভস জোড়া নিয়ে দাঁড়ালে কোনো সন্দেহই নেই জার্মান দলটাই বদলে যাবে। হ্যাঁ, ম্যানুয়েল ন্যুয়েরের উপর এমনই আশা জার্মান সমর্থকদের। ম্যাচ খেললে গতবারের মতো এবারও অসাধারণ কিছু করবেন তিনি। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তার হাতেই উঠেছিল গোল্ডেন গ্লাভসের পুরস্কারটি।

বিজ্ঞাপন

৩: ডেভিড ডি গিয়া (স্পেন)
এবারের বিশ্বকাপে অভিজ্ঞদের মধ্যে ম্যানুয়েল ন্যুয়েরের পরেই নাম আসবে স্পেনের ডেভিড ডি গিয়ার। ইতালির বুফন বা স্পেনের ক্যাসিয়াস থাকলে হয়তো অন্য কথা ছিল, কিন্ত তাদের অবর্তমানে ডেভিড ডি গিয়াই অন্যতম অভিজ্ঞ। মনে প্রাণে চেয়ছেন রিয়াল মাদ্রিদে চলে আসতে, কিন্তু মরিনহোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড অনেক কষ্ট করেই তাকে ধরে রেখেছে ইংল্যান্ডে। এ থেকেই বুঝা যায় একটি দলে ডেভিড ডি গিয়ার গুরুত্ব কতটুকু। স্পেন দলে তো কথাই নেই। এরকম একজন গোলরক্ষক যেকোনো দলের ব্যাকলাইনে থাকলে নিশ্চিন্ত মনে আক্রমণে উঠে যাওয়া যায়। ডেভিড ডি গিয়া গোল্ডেন গ্লাভসের একজন অন্যতম দাবীদার হবেন রাশিয়ায়।

৪: জর্ডান পিকফরড (ইংল্যান্ড)
অভিজ্ঞ জো হার্টের না থাকায় ইংলিশদের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব পাবেন জর্ডান পিকফরড। দলের প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার প্রতিযোগিতা থাকলেও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ইংলিশ কোচ পিকফরডকেই প্রথম একাদশে রাখেন। পিকফরডই বিশ্বকাপে ইংলিশ কোচের প্রথম পছন্দ। ম্যাচ খেললে দারুণ কিছু করতে পারবেন বলে আশা দেখাচ্ছে এভারটনে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স।

৫: থিবাউত করতুয়াস (বেলজিয়াম)
ইংলিশ ক্লাব চেলসিতে খেলেন। লিভারপুলের সিমন ম্যাগনলেটরের চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়েছে তাকে। তবে ২০১৭/১৮ মৌসুমে ম্যাগলটের বাজে পারফরম্যান্সে এখন করতুয়াস বেলজিয়াম দলে একক পছন্দ। ২০১৪ বিশ্বকাপেও বেলজিয়ামের হয়ে প্রত্যেক ম্যাচেই তিনি প্রথম একাদশে খেলেছেন। এবারও এর ব্যাতিক্রম হবে না। চেলসির ২৬ বছর বয়সী এই স্টার গোলরক্ষক নীল জার্সি গায়ে দিয়ে দারুণ এক মৌসুম কাটিয়েছেন। ১.৯৯ মিটার লম্বা এই তারকা গোলরক্ষক একাই বেলজিয়াম দলের অন্যতম এক শক্তি। তার হাত গলে বেলজিয়ামের জালে বল পাঠাতে প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারদের বিশেষ বেগ পেতে হবে তা আগেভাগেই বলে দেয়া যায়। বেলজিয়াম যদি সেমি ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারে, তিনিও গোল্ডেন গ্লাভসের অন্যতম দাবীদার হবেন সন্দেহ নেই।

সারাবাংলা/এমআরপি/আইই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন