Monday 09 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জলবায়ু পরিবর্তনের মাসুল: মাঝারি বন্যার শংকায় দেশ


৬ জুলাই ২০১৮ ১০:৫১ | আপডেট: ৬ জুলাই ২০১৮ ২০:০৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।।

ঢাকা: আষাঢ় মাসের ২২ তারিখ আজ। তবে আষাঢ় আসার ঢের আগেই ধারণা করা হচ্ছিল এ বছর আগাম বন্যা হবে। কয়েক জায়গায় আকস্মিক বন্যা জানিয়েও গেছে বন্যার বারতা। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানাচ্ছে নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনের ফল।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া সারাবাংলাকে জানান, দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট, সিলেট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে। এর মধ্যে কানাইঘাটে পানি বিপদসীমার ১২১ সেন্টিমিটার, সিলেটে ৪৪ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের দুধকুমার নদীতে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এর ফলে রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটের কিছু অংশ ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। মধ্য ভাগে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এর ফলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলায় বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের  পানি ও বন্যা ব্যাবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম সাইফুল ইসলাম জানান, বর্ষার মৌসুমে হাওরের পানি বাড়বে এটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা তবে গত বছর হাওরে আকস্মিক বন্যার পরে এ বছরও এ অঞ্চলে বন্যা হয়েছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ও ভালনেরাবল স্টাডিজের অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন সারাবাংলাকে জানান, এ বছর বন্যার একটি বার্তা গ্রীষ্মের শুরুতেই পাওয়া যাচ্ছিল।

“গত দুই বছর ধরে মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে পুরো গ্রীষ্মকালটাই ভীষণ আর্দ্র ছিল। ফলে বন্যা আসবে এমন একটা সম্ভাবনা শুরু থেকেই ছিল।”

এ বছরের বন্যার জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করেন এ দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনে আবহাওয়ার ভাব গতিক বোঝা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন খুব দ্রুত ও আকস্মিক হচ্ছে। দুর্যোগগুলোর আকারও বড় হয়ে যাচ্ছে।

“একদিকে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে অন্য দিকে মৌসুমি ঝড়ের প্রকোপও বাড়ছে। সব মিলিয়ে বন্যা ও জলাবদ্ধতার সমস্যা আমাদের মতো নিচু দেশগুলোতে প্রকট হচ্ছে”, বলেন ড. মোকাদ্দেম।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও আগরতলায় ৮৮ মিলিমিটার, দার্জেলিং-এ ৬৫ মিলিমিটার ও গ্যাংটকে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ড. মোকাদ্দেম বলেন, ঢাল বেয়ে এই পানি সব নিচু অংশ অর্থাৎ বাংলাদেশে আসবে ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার সম্ভবনা।

ড. সাইফুল ইসলাম জানান ভারী বর্ষণের কারণে শুধু সিলেট নয় দেশের দক্ষিণাংশেও বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে ভারত অংশ ও সিলেটের পাথর নির্বিচারে উত্তলনের ফলে ঐসব অঞ্চলের মাটি ঢলের সঙ্গে ধুয়ে আসে যা জমা হয় আমাদের নদীগুলোতে। এতে আমাদের নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। ফলে বর্ষার পানি নামতে সময় লাগছে এবং পানি জমে থেকে দুর্ভোগ বাড়ছে।

সারাবাংলা/এমএ/জেএএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর