Wednesday 26 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা, বায়ুমান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:২২

বায়ু দূষণ। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বিশ্বের ১২৭টি নগরীর মধ্যে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে অবস্থান করছে।

এদিকে নয়াদিল্লি যার বায়ুমান ‘দুর্যোগপূর্ণ’ ঢাকাও দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

আইকিউএয়ারের লাইভ সিটি র‍্যাঙ্কিং অনুসারে, নয়াদিল্লির একিউআই ৪০৫, যা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ ক্যাটাগরিতে পড়ে। ঢাকার একিউআই স্কোর ২২৬ এবং ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের কলকাতা, একিউআই ২১১। শীর্ষ দশের মধ্যে ইরানের বাগদাদ (২০২), পাকিস্তানের লাহোর (১৯৮), ইরানের তেহরান (১৮২), উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৮০), ভারতের মুম্বাই (১৭২), পাকিস্তানের করাচি (১৬৮) এবং ভিয়েতনামের হেনয় (১৬৫) রয়েছে, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে আসে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার সাতটি স্থানের বায়ুমান বিশেষভাবে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এসব স্থানের মধ্যে ইস্টার্ন হাউজিং, দক্ষিণ পল্লবী, বেজ এজ ওয়াটার, বেচারাম দেউড়ি, কল্যাণপুর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং গোড়ান অন্তর্ভুক্ত। এসব এলাকায় বায়ুমান ১৭৫ থেকে ২৬৫ পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের মূল কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা, যা ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শীতকালীন আবহাওয়া, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে ধুলা এবং আশপাশের ইটভাটার ধোঁয়া এই দূষণের জন্য দায়ী।

বায়ুমানের মান অনুযায়ী, সূচক ৫০-এর নিচে বিশুদ্ধ, ৫১–১০০ সহনীয়, ১০১–১৫০ সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১–২০০ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০-এর বেশি হলে দুর্যোগপূর্ণ।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সব নাগরিককে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। ইটভাটা ও শিল্পকারখানার মালিকদের কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে পরিবহন করা, নির্মাণস্থলে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ধোঁয়া সৃষ্টি করা যানবাহন রাস্তায় না বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বায়ুদূষণে করণীয়:

  • সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্ট রোগীরা বাইরে না যাওয়াই নিরাপদ।
  • সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: বাইরে সময় সীমিত রাখা এবং শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা।
  • প্রয়োজনে বাইরে গেলে: কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
  • ঘরের ভিতর: এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা এবং জানালা–দরজা বন্ধ রাখা।

ঢাকার এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে চলমান। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন— বায়ুদূষণ মোকাবিলায় অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে স্বাস্থ্যঝুঁকি ক্রমেই বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর