২৩ বছর বয়সী তরুণী মডেল সিম্মি চৌধুরী (মঞ্চনাম: শীতল)—একটি গানের ভিডিওতে অংশ নিতে গিয়ে ফিরলেন না আর। ফিরলেন খণ্ড-বিখণ্ড দেহ হয়ে। ভারতের হরিয়ানায় ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে দেশজুড়ে।
গত শনিবার (১৪ জুন) পানিপাত জেলার আহার গ্রামে একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিং চলছিল। সেখানেই উপস্থিত হন সিম্মি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার কথিত প্রেমিক সুনীল তাকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন। কথোপকথন শুরু হয়, যা রূপ নেয় উত্তপ্ত তর্কে। শীতল তার বোন নেহাকে ভিডিও কলে বলেন—সুনীল তাকে মারধর করছে। এরপর হঠাৎই সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফোন বন্ধ। নিখোঁজ হন শীতল।
পরদিন রবিবার সুনীল নিজে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং দাবি করেন—তাদের গাড়ি খালে পড়ে গিয়েছিল। তিনি কোনোমতে বেঁচে গেলেও সিম্মি ডুবে যান। তবে পুলিশ যখন গাড়িটি খাল থেকে উদ্ধার করে, সিম্মির কোনো খোঁজ মেলে না।
পরে, সোমবার (১৬ জুন) খারখোদার রিলায়েন্স খাল থেকে উদ্ধার করা হয় একটি নারীর গলা কাটা মরদেহ। শরীরে ছিল একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। হাতে ও বুকে উল্কি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটাই সিম্মির মরদেহ।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অবশেষে ভেঙে পড়েন সুনীল। তিনি স্বীকার করেন—একসময় তাদের মধ্যে প্রেম ছিল। ছয় বছরের সম্পর্কের পর সুনীল বিয়ের প্রস্তাব দিলেও সিম্মি তা প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ জানতে পারেন—সুনীল বিবাহিত এবং দুই সন্তানের বাবা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করেন।
তবে এখানেই থেমে নেই ট্র্যাজেডি। জানা যায়, সিম্মিও বিবাহিত। তার ঘরে রয়েছে মাত্র পাঁচ মাস বয়সী একটি শিশু। এ খবরে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক—একজন মা কীভাবে এমন অনিশ্চিত সম্পর্কে জড়ালেন?
সিম্মি কী জানতেন না যে সুনীল বিবাহিত? নাকি সম্পর্ক শেষ করার পরও সুনীল তাকে ফাঁদে ফেলেন? আর কারা ছিল সেই গানের শুটিংয়ে? বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কারা তার সঙ্গে ছিলেন?
তার বোন নেহা অভিযোগ দায়ের করেছেন মাতলাউড়া থানায়, তবে পুরো ঘটনার পর্দা পুরোপুরি উঠেনি এখনো। তদন্ত চলছে। অপেক্ষা- রহস্য উদঘাটনের।