বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ও সফল নাম সাকিব আল হাসান। মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ব্যক্তিজীবন, ব্যবসা ও রাজনীতিতে তার উপস্থিতি বহুবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। কিন্তু এবার যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তা অনেককেই চমকে দিয়েছে—একসময় সাকিব অভিনয় করেছিলেন একটি সিনেমায়!
এই বিস্ফোরক দাবি করেছেন নির্মাতা রাজিবুল হোসেন, যিনি প্রায় এক যুগ আগে ‘সব কিছু পেছন ফেলে’ শিরোনামের একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছিলেন। ছবিটি পাঁচ তরুণ-তরুণীর জীবনগাঁথা হলেও, এতে গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্সে অভিনয় করেছিলেন সাকিব, এমনটাই দাবি পরিচালকের।
পরিচালকের ভাষ্য অনুযায়ী, ছবির শুটিং হয় কক্সবাজারে, পেশাদার ক্যামেরা ও পূর্ণ ইউনিটসহ। ছবিটি স্পন্সর করেছিল ফুজিফিল্ম বাংলাদেশ, আর তখন ফুজিফিল্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন সাকিব। এই পেশাগত সম্পর্ক থেকেই সাকিব অভিনয়ে রাজি হন।
কিন্তু সমস্যার শুরু হয়, যখন ছবিতে সাকিবের অভিনয়ের খবর গণমাধ্যমে ফাঁস হয়। এরপরই সাকিব বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন এবং বলেন, তিনি কোনো সিনেমায় অভিনয় করেননি। এ অস্বীকৃতি শোনার পর ফুজিফিল্মও প্রকল্প থেকে সরে যায়, এবং নির্মাণ থেমে যায়।
নির্মাতা রাজিবুল হোসেন জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে তার ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু অর্থনৈতিক নয়, মানসিকভাবেও তিনি বিপর্যস্ত হন। তবে সাকিবকে বাদ দিয়ে সিনেমাটি শেষ করার সুযোগ থাকলেও, তিনি নেন না সেই পথ। তার ভাষায়— ‘একটি অসম্পূর্ণ সত্য দিয়ে পূর্ণ চলচ্চিত্র বানানো যায় না।‘
রাজিবুল জানালেন, সিনেমাটি অর্ধসমাপ্ত রেখে দেয়ার পেছনে ছিল তার নৈতিক অবস্থান। তিনি চাননি বিকৃত বা মিথ্যা কিছু দিয়ে ছবি সম্পূর্ণ করতে।
প্রশ্ন উঠেছে, এত বছর পর কেন এই ঘটনা সামনে আনলেন রাজিবুল হোসেন?
তার জবাব স্পষ্ট— ‘অনেকে বলত, সিনেমাটি আমার পরিচালনায় দুর্বল ছিল, বাজেট ছিল না। অথচ প্রকৃত কারণ ছিল একজন তারকার অনৈতিক ও অসহযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত। সেই সত্য আজ বলতে চাই।‘
এই ঘটনা একটি বড় প্রশ্ন তুলেছে— একজন জনপ্রিয় তারকা, যিনি একটি পেশাদার প্রজেক্টে যুক্ত হন, তার দায়বদ্ধতা কী? নির্মাতা দাবি করেছেন, তার প্রজেক্ট ভেস্তে গেছে শুধুমাত্র একজন তারকার ‘অস্বীকার’-এর কারণে। এতে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, একজন চলচ্চিত্রকর্মীর ক্যারিয়ার, মর্যাদা ও স্বপ্নও ভেঙে পড়ে।