বাংলাদেশের ইতিহাসে ১ জুলাই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে আগুন গত বছর এই দিনে রাজপথে জ্বলেছিল, তা শুধু রাজনীতি নয়, সংস্কৃতির জগৎকেও ছুঁয়ে গিয়েছিল গভীরভাবে। এই আন্দোলন যে শুধু ছাত্রদের ক্ষোভ নয়, ছিল পুরো জাতির এক অভ্যন্তরীণ জাগরণ— তার প্রমাণ মেলে দেশের বিনোদন অঙ্গনের বহু তারকার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে। তাদের একজন, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, সেই স্মৃতিময় দিনের বর্ষপূর্তিতে এক আবেগঘন পোস্টে জানালেন তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
ফেসবুকে দেওয়া বার্তায় বাঁধন লিখেছেন, ‘জুলাই আন্দোলন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই আন্দোলন আমাকে আশা দিয়েছিল। দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছিল।’

ফেসবুকে দেওয়া বার্তায় বাঁধন লিখেছেন …
তিনি স্মরণ করেন সেই সময়ের দমন-পীড়ন, যেখানে রাষ্ট্র জনগণের দিকেই তাক করেছিল অস্ত্র। শিশু রিয়া মণির মতো নির্দোষ প্রাণহানির প্রসঙ্গ তুলে তিনি লেখেন, ‘কেন জীবন দিচ্ছে, তা বোঝার আগেই তারা প্রাণ হারিয়েছিল।’ তার এই বক্তব্যে ফুটে ওঠে আন্দোলনের মানবিক দিক— এটা ছিল কেবল রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, ছিল এক হৃদয়ের আন্দোলন।
বাঁধনের মতো অনেক তারকা— গায়ক সায়ান, অভিনেতা ইরেশ যাকের, নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন, শিল্পী তাহসান খান, এমনকি ইউটিউবার তামিম মৃধাও— সেই সময় রাজপথে নেমে এসেছিলেন কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন তাদের দৃঢ় অবস্থান। তারা বলেছিলেন, সময় এসেছে নিরবতা ভাঙার।

তিনি স্মরণ করেন সেই সময়ের দমন-পীড়ন, যেখানে রাষ্ট্র জনগণের দিকেই তাক করেছিল অস্ত্র …
এই আন্দোলন কেবল ন্যায্যতার দাবি ছিল না, ছিল সাহসিকতার অভিব্যক্তি। যখন জনপ্রিয় তারকারা সামনে এসে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান, তখন একটি জাতির ভাঙা আত্মবিশ্বাস আবার দৃঢ়তা পায়। বাঁধনের পোস্ট সেই সাহসের আরেকটি দলিল। তিনি লেখেন, ‘আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম ভালো কিছুর। আমি সেই আশা সবসময় বুকে ধারণ করেই চলব।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বাঁধনের এই পোস্ট যেন নতুন প্রজন্মের কাছে আন্দোলনের চেতনার বার্তা পৌঁছে দেয়। যারা ভুলতে বসেছে, তাদের মনে করিয়ে দেয়—সংস্কৃতি কখনো নিরপেক্ষ থাকে না, ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে শিল্পীর কণ্ঠও প্রতিবাদ হয়ে ওঠে।