রাজনীতির রঙিন আলোকমঞ্চে পা রেখেই আবার যেন ছায়ার দিকে পিছু হটছেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। মান্ডি থেকে জিতে সংসদে যাওয়া, দলীয় বার্তা নিয়ে বিতর্কে জড়ানো, এবং এখন রাজনীতি থেকে মন সরিয়ে নেয়ার খোলামেলা ঘোষণা— সব মিলিয়ে কঙ্গনা যেন খোলামেলা এক আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে নিজের সীমা ও স্বপ্নের টানাপোড়েন প্রকাশ করেছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনা বলেন, ‘আমি চাই আমার বড় বাড়ি হোক, বড় গাড়ি হোক, প্রচুর হীরা থাকুক আমার কাছে, আমাকে দেখতে সুন্দর লাগুক।’ এই স্বীকারোক্তি শুনে অনেকেই হয়তো চমকে উঠবেন। একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও এমন ব্যক্তিকেন্দ্রিক জীবনচিত্রের প্রকাশে কেউ কেউ সমালোচনা করতে পারেন, আবার কেউবা দেখবেন এক সততার স্পষ্ট ছবি— যেখানে একজন নারী নিজের ইচ্ছাকে ঢেকে রাখছেন না।
রাজনীতিতে এসে দ্রুতই বুঝে গেছেন— এখানে ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া নয়, বরং ত্যাগ, নিষ্ঠা ও জনসেবাই মুখ্য। কঙ্গনা বলেন, ‘রাজনীতি বড় ত্যাগের দাবি রাখে, যা আমি করতে চাই না।’ পর্দায় ইন্দিরা গান্ধীর মতো চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরলেও বাস্তব রাজনীতির কংক্রিট বাস্তবতায় নিজের জায়গা খুঁজে পাননি তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা প্রসঙ্গে তার বক্তব্য ছিল আরও স্পষ্ট: ‘আমার নেই সেই নিষ্ঠা, নেই সমাজকর্মের অভিজ্ঞতা— প্রার্থনা করি, ঈশ্বর যেন আমাকে কখনও প্রধানমন্ত্রী না করেন।’ এটি এক ধরনের আত্মসমালোচনা ও আত্মবিশ্লেষণ, যা সচরাচর জনপ্রিয়দের মুখে শোনা যায় না।
কঙ্গনার বক্তব্যে উঠে এসেছে এক ধরনের আত্মবিশ্বাসী স্বীকারোক্তি— নিজের দিকেই মনোযোগী থেকে জীবন কাটাতে চান তিনি। এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে, এটি কি আত্মকেন্দ্রিকতা, নাকি নিজের বাস্তবতা বুঝে নেয়া?
আসলে, বলিউডে বেড়ে ওঠা একজন শিল্পীর জীবনে সবসময় ক্যামেরার সামনে থাকতে থাকা, নিজের সৌন্দর্য, প্রতিপত্তি ও ব্যক্তিগত সম্পদকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে স্বপ্নের পৃথিবী। কঙ্গনার স্বপ্নগুলো সেই কাঠামোর বাইরের কিছু নয়— তবে তিনি যেভাবে সেগুলো খোলামেলা স্বীকার করেছেন, সেটাই হয়তো তাকে আলাদা করে দেয়।
‘ইমার্জেন্সি’ ছবিতে ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করা কঙ্গনার জন্য বাস্তব রাজনীতি সম্ভবত ছিল এক কঠিন ব্যাকরণ। পর্দায় দেশ চালানোর নাটক করা আর বাস্তবে দায়িত্ব নেয়া— এই দুইয়ের ব্যবধান সে নিজেই বুঝতে পেরেছেন। তার ভাষায়, ‘আমি স্বার্থপরের মতো জীবনযাপন করেছি।’