এক সময় যিনি আলো ছড়িয়েছিলেন পর্দায়, যিনি বাস্তব ও বিনোদনের মধ্যবর্তী এক আত্মপ্রকাশের নাম ছিলেন— পাকিস্তানের অভিনেত্রী ও মডেল হুমাইরা আসগর আলী— আজ সেই জীবন কেবলই একটি সংবাদ শিরোনাম: ‘রহস্যজনক মৃত্যু’।
৩২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীকে ঘিরে ভেসে উঠছে নানা প্রশ্ন, সংশয়, আর অজস্র আক্ষেপ। গতকাল করাচির অভিজাত ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যু ঘটেছিল অন্তত দুই সপ্তাহ আগেই। অথচ সেই মৃত্যুর খবরটি প্রকাশ্যে এল এত দেরিতে—নীরব, নিঃসঙ্গ এক বিদায়, যা আলো ঝলমলে জীবনযাপন আর ক্যামেরার ঝলকে হারিয়ে যাওয়া এক গভীর ছায়ার দিকে ইঙ্গিত করে।
দক্ষিণ করাচির গিজরি থানা পুলিশ জানিয়েছে, ফ্ল্যাটে দীর্ঘ সময় ধরে তালা লাগানো ছিল। আদালতের নির্দেশে ফ্ল্যাট খালি করতে গিয়ে পুলিশ যখন দরজায় কড়া নাড়ে, তখন ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তালা ভেঙে প্রবেশ করে দেখা যায়, নিথর পড়ে আছেন হুমাইরা।
হুমাইরা আসগর আলী ছিলেন রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘর’-এর অন্যতম অভিনেত্রী । সেই অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রাণবন্ত, খোলামেলা ও দৃঢ়চেতা এক নারী চরিত্র। তার সাবলীল উপস্থিতি তাকে দর্শকদের মনে জনপ্রিয় করে তোলে। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘জালাইবি’তে অভিনয় করে পেয়েছিলেন আরও পরিচিতি।
কিন্তু মিডিয়ার জগতে ক্যারিয়ারের ওঠানামার সঙ্গে যে মানসিক চাপ, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জটিলতা, কিংবা সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আসে— তা নিয়ে কখনো তিনি প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। হয়তো সেই ভেতরের গল্পটিই রয়ে গেল অজানা।
হুমাইরার মৃত্যু কেবল একটি মানুষের হারিয়ে যাওয়া নয়— এটি শিল্প-সংস্কৃতির জগতে এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন।
পুলিশ বলছে, আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে গোটা পাকিস্তান। আত্মহত্যা, স্বাভাবিক মৃত্যু, নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনো অপরাধ—সব প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে সেই প্রতিবেদনে।