উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি প্রাণহানি হয়েছে, আহত শতাধিক। হতাহতদের অধিকাংশই ছিলেন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী। জাতি যখন দিশেহারা, তখন জয়া আহসান একের পর এক পোস্টে যেন কণ্ঠস্বর হলেন সেই শোক, যন্ত্রণার, আরেকটি প্রতিবাদের।
এক আবেগময় পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি টেলিভিশনের দিকে তাকাতে পারছি না। এতগুলো কচি কচি বাচ্চার এমন দুর্ভাগ্যজনক বিদায়, কীভাবে মেনে নেওয়া যায়! আহারে, এই বাচ্চাদের মা-বাবারা তাদের শূন্যতার ভার কীভাবে বইবেন। তাদের মনে শক্তির সঞ্চার ঘটুক। যে বাচ্চারা আহত হলো, তারা যেন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, সেই প্রার্থনা রইল।’
এই লেখাটি যেন লাখো অভিভাবকের কান্নাকে ভাষা দিয়েছে।
জয়া শুধুমাত্র শোক প্রকাশেই থেমে থাকেননি। তিনি নিজ ফেসবুকে ডা. তানজিনা হোসেন তান্নির বার্তার মাধ্যমে উদ্ধারকর্মী ও সাধারণ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরামর্শও শেয়ার করেছেন_
১. পোড়া ত্বকে টানা পানি ঢালুন— ৩০-৪৫ মিনিট ধরে।
২. পরিস্কার সূতি কাপড়ে ঢেকে হাসপাতালে নিন— কম ভিড় ও কম স্পর্শ করাই জরুরি।
৩. পানি ও স্যালাইন খেতে দিন— পোড়া ত্বক প্রচুর পানি হারায়।
সব শেষে একটি তীব্র বার্তা:
‘নেতা ও ভিউ ব্যবসায়ীরা ভিড় জমাবেন না!’
জয়া আহসানের আরেকটি পোস্টে দেখা যায় তিনি শেয়ার করছেন _
‘বাচ্চাগুলোর সাথে অভিভাবকদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সবাই শেয়ার করে তাদের পরিবারকে খুঁজে পেতে সাহায্য করুন।’
এই অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন হাজারো মানুষ। নিখোঁজ তালিকা, খোঁজ খবর, হাসপাতালের অবস্থান—এসব তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ঝড়ের গতিতে। এক ধরনের সামাজিক উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে যার নেতৃত্বে আছেন একজন অভিনেত্রী, একজন মা, একজন মানবিক মানুষ— জয়া আহসান।
এই ঘটনায় জয়া আহসানের মতো একজন শিল্পীর অংশগ্রহণ আমাদের দেখিয়েছে— তারকারা চাইলে কেবল বিনোদনের নয়, সমাজেরও কণ্ঠস্বর হতে পারেন। তার শোক, তার আহ্বান, তার প্রতিবাদ আজ লাখো মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে।
এই দুঃসময়ে তিনি হয়ে উঠেছেন কেবল একজন অভিনেত্রী নন, বরং একজন সচেতন নাগরিক, একজন সহমর্মী বোন, একজন প্রতিবাদী মানবিক মুখ।