উত্তরার আকাশে যে দিন ভয়াবহতা নেমে এসেছিল, সেটি শুধুই একটি বিমান দুর্ঘটনা ছিল না—তা ছিল অগণন তরুণ প্রাণ, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার এক বেদনাদায়ক মুহূর্ত। সেই দিন মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীদের জীবনে কেবল একটি ক্ষণস্থায়ী আতঙ্ক ছিল না; বরং ছিল এক স্থায়ী ক্ষতের সূচনা।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় যাদের প্রাণ ঝরে গেছে এবং যারা আজও হাসপাতালের বিছানায় জীবনযুদ্ধে লড়ছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের সঙ্গীত অঙ্গনের এক কিংবদন্তি— নগর বাউল জেমস।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে কনসার্ট সফরে থাকা জেমস তার ব্যান্ড ও আয়োজক ‘রিভারাইন এন্টারটেইনমেন্ট’-এর মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন, এই কনসার্টের আয়ের একটি অংশ বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে।
সংগীতশিল্পীদের এই ধরনের মানবিক অংশগ্রহণ শুধুমাত্র বিনোদনের গণ্ডি ছাড়িয়ে এক সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রতীক হয়ে ওঠে। ফিলাডেলফিয়ার আসন্ন কনসার্টটিকে তাই সংগীতপ্রেমীরা আর কেবল এক লাইভ শো হিসেবে দেখছেন না—এটি এখন যেন এক ঐক্যের আহ্বান, সহমর্মিতার মঞ্চ।
জেমস তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক আবেগঘন শোকবার্তায় লিখেছেন— “মাইলস্টোন কলেজের সেই অমূল্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা, যাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এ ঘটনায় থেমে গেল। আমরা এই কঠিন সময়ে আহত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে আছি।”
এই বক্তব্য শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত অনুভবই প্রকাশ করে না; এটি সংগীত অঙ্গনের আরও অনেক শিল্পীর জন্যও এক অনুপ্রেরণার বার্তা।
সাধারণত শিল্পীরা স্টেজে ওঠেন মুগ্ধতা ছড়াতে। কিন্তু যখন সেই স্টেজ হয়ে ওঠে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর হাতিয়ার—তখন শিল্পী হয়ে ওঠেন এক মহানুভব যোদ্ধা।
২৫ জুলাইয়ের এই কনসার্টে উপস্থিত দর্শকরা শুধু গান উপভোগ করবেন না, তারা প্রত্যক্ষ করবেন এক সমবেদনামূলক আন্দোলন—যেখানে প্রতিটি সুর, প্রতিটি গানের পেছনে থাকবে একটি চাওয়া: যেন আর কোনো স্বপ্ন ধুলিসাৎ না হয়।
জেমস ও তার ব্যান্ড নগর বাউলের বর্তমান সফরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে ২ আগস্ট, ভার্জিনিয়ার উডব্রিজে। সেই মঞ্চে তার সঙ্গে থাকবেন প্রীতম ও প্রতীক হাসান। একসঙ্গে তিন তারকা শিল্পীর পরিবেশনায় এককথায় বলাই যায়, এটি হবে সুর, সংহতি ও সংবেদনশীলতার এক অনন্য মিলনমেলা।